স্বাধীনতা কাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে আজ ধানমন্ডি ডার্বিতে মুখোমুখি হয় ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা সমতায় শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জয় পায় ঢাকা আবাহনী লিমিটেড।
ম্যাচের শুরু থেকে দুই দল সর্তকতার সাথে খেলতে থাকে। প্রথমার্ধে গোল করার মতো ভালো সুযোগ তৈরি করে একমাত্র শেখ জামাল ডিসি। ম্যাচের ১৫ তম মিনিটে হিগোর লেইতের নেয়া ফ্রি কিক দক্ষতার সাথে ঠেকিয়ে দেন আবাহনীর গোলরক্ষক পাপ্পু। এরপর সহজ আরেকটি সুযোগ পায় জামালের ডিফেন্ডার খোলমাতভ। ২৪ মিনিটে ফাহাদের একটি ক্রস ফাঁকায় থেকেও হেড জালের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারেননি এই ডিফেন্ডার। আবাহনী কয়েকদফা আক্রমনে উঠার চেষ্টা করলেও জামালের ডিফেন্ডারদের পরাস্ত করতে পারেননি। ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ভাবে।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই খোলস থেকে বেরিয়ে আসে আবাহনী। রহিমের করা ক্রসে ওয়াসিংটনের হেড ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন জামাল গোলরক্ষক প্রিতম। ৪৯ তম মিনিটে ওয়াসিংটনের ক্রস এমেকা হেড করলেও তা চলে যায় গোলবারের উপর দিয়ে। খেলার ৫৮ মিনিটে আবারো শেখ জামালের পক্ষে গোল করার সুযোগ পান খোলমাতভ, কিন্তু তার জোড়ালো হেড তালুবন্দি করে দলকে রক্ষা করেন আবাহনীর গোলরক্ষক পাপ্পু। এর দুই মিনিট পর আবাহনীর ওয়াসিংটন একক প্রচেষ্টায় প্রতিপক্ষের বক্সে ডুকে পড়লেও তার নেয়া শট প্রতিহত করেন গোলরক্ষক প্রিতম। এরপর ম্যাচের ৭০ মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে থেকে রয়েলের নেয়া জোড়ালো শট জামালের গোলবার ঘেষে বের হয়ে গেলে রক্ষা পায় দলটি। তার কিছুক্ষণের মধ্যে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করেন শেখ জামালের স্ট্রাইকার ডিয়াজ। গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালের পৌঁছাতে পারেননি তিনি।
খেলার মূল সময়ের শেষ দিকে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রেফারির সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে প্রথমে হলুদ এবং পরবর্তীতে লাল কার্ড দেখে ডাগআউট ছাড়তে হয় আবাহনী ম্যানেজার নজরুল ইসলামকে। নির্ধারিত সময় শেষে স্কোরলাইন গোলশূন্য থাকলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি।
অতিরিক্ত সময় শুরুর চতুর্থ মিনিটে গিয়ে ডেডলক ভাঙ্গে ঢাকা আবাহনী। বক্সে ভিতর থেকে জনাথনের সাইড ভলি গোলে পরিণত হলে লিড পায় আকাশী নীলরা। ম্যাচের ৯৭ তম মিনিটে ফাহিমের নেয়া শট পাপ্পু ফিরিয়ে না দিলে তখনই সমতায় ফিরতে পারতো শেখ জামাল ডিসি। শততম মিনিটে ওয়াসিংটনের শট বা দিকে ঝাপিয়ে প্রিতম রক্ষা না করলে লিড দ্বিগুন করতে পারতো আবাহনীও। এরপর অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ শেষের ঠিক আগ মুহূর্তে বক্সের বাইরে একটি ফ্রি-কিক পায় শেখ জামাল ডিসি। সেখান থেকে নিজের জাদু দেখান ব্রাজিলিয়ান হিগোর লেইতে। তার জোড়ালো শট সরাসরি জালে জড়ালে ম্যাচে সমতা ফেরায় দলটি। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধের ১১২ তম মিনিটে গোলরক্ষক প্রিতমকে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি আবাহনীর স্ট্রাইকার ওয়াসিংটন। এরপর আর কোন ভালো সুযোগ তৈরি না হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারের আগেই গোলরক্ষক পাপ্পুকে বদলি করে শামিমকে মাঠে নামান আবাহনী কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি। এতেই বাজিমাত করে আকাশী নীলরা। শামিমের বীরত্বে ৩-২ ব্যবধানে টাইব্রেকার জিতে সেমি ফাইনালে নিজেদের স্থান নিশ্চিত করে ধানমন্ডির জায়ান্টরা।