২০১৬ সালে বাংলাদেশ ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে প্রবেশ করার পর থেকে প্রতি মৌসুমেই বিগ বাজেটের দল গড়ে আলোচনায় থাকে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিরোপার স্বাদ নেওয়া হয়নি ক্লাবটির। তাইতো এবার নতুন মৌসুমে নতুন কোচ এবং নতুন বিদেশিদের নিয়ে ভালো করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো সাইফ ম্যানেজমেন্ট। তবে মাঠের খেলায় এখন পর্যন্ত তার তেমন একটা আভাস পাওয়া যায়নি। তারপরও দ্বিতীয় দল হিসেবে স্বাধীনতা কাপের সেমি ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে আন্দ্রে ক্রুসিয়ানির দল।
শুক্রবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে নবাগত স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘকে ২-০ গোলে হারায় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। সাইফের হয়ে গোল করেছেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও মারাজ হোসেন।
স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের বিপক্ষে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা উগবুগকে ছাড়াই মাঠে নামে সাইফ। অপরদিকে সাইফের মতো বড় দলের বিপক্ষে নবাগত স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ দলে পায়নি তাদের উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার নদিরবেক মাভলোনোভ ও পোল্যান্ডের রাফাল জাবারোস্কিকে। ম্যাচের শুরুতেই ৬ষ্ঠ মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের শট রুখে দেন স্বাধীনতার গোলরক্ষক সারওয়ার জাহান। ১১তম মিনিটে গোল লাইন থেকে বল ক্লিয়ার করে সাইফকে রক্ষা করেন নাসিরুল ইসলাম। কর্নার থেকে আসা বল হেড করেন নেদো তুরকোভিচ, বল পেয়ে যান ইরানী ডিফেন্ডার সিয়ামাক কুরাইশি। কুরাইশির শট গোল লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন নাসিরুল। ২৫তম মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ডান দিক থেকে এমফন ওদোহর নিচু ক্রস গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড। ফলে গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধেও গোল মিসের মহড়ায় নামে সাইফ। ৪৮ মিনিটে আসরোর গফুরভের দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।৫০ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি-কিক থেকে এমফোন সানডে হেডে বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে তা হয়নি। ৫৫ মিনিটে ডি-বক্সে স্বাধীনতার ফরোয়ার্ড রাসেল আহমেদের শটও অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি জাল।নির্ধারিত নব্বই মিনিট গোল শূন্য সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটেই সাইফকে এগিয়ে নেন মারাজ হোসেন। বা দিক থেকে নিহাত জামান উচ্ছ্বাসের ক্রস হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ফরোয়ার্ড মারাজ। ১০০ মিনিটের মাথায় স্বাধীনতার গোলরক্ষকের ভুলে সাইফকে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে নেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। উজবেকিস্তান মিডফিল্ডার আসরোর গফুরভের কাট-ব্যাক ঠেকাতে চেয়েছিলেন স্বাধীনতা গোলরক্ষক সারোয়ার। সারোয়ারের গ্লাভস ফাঁকি দিয়ে বল পড়ে ফাহিমের পায়ে। ফাঁকা জালে দারুণ এক প্লেসিংয় শটে বল জালে জড়ান ফাহিম।১০৭ মিনিটের দশ জনের দলে পরিণত হয় স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। নিহাত জামান উচ্ছ্বাসকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন জিল্লুর রহমান। বাকি সময়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ।
ফলে ২-০ গোলের জয় নিয়েই শেষ চার নিশ্চিত করে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।সেমিফাইনালে সাইফের প্রতিপক্ষ আবাহনী লিমিটেড। ১৪ই ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে মুখোমুখি হবে এই দু’দল। এর আগে দিনের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিপক্ষে ৪-০ গোলের বড় জয় তুলে সেমিতে পৌঁছায় ঢাকা আবাহনী লিমিটেড।