বাংলাদেশই হবে এলিট ফুটবল একাডেমী, তাও আবার এক-দুইটি নয়, পাঁচ থেকে সাতটি। কি শুনেই চমকে উঠেছেন? এটি আমাদের কথা নয়, এটি বলেছেন স্বয়ং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন। আজ কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ‘বাফুফে এলিট একাডেমী’ উদ্বোধন করতে গিয়ে এই কথাই বলেন তিনি।
‘ফিউচার অফ বাংলাদেশ ফুটবল’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হলো কমলাপুর স্টেডিয়ামে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এলিট একাডেমী পদযাত্রা শুরু হয়েছে। এর আগে গত ১৬ আগষ্ট ৫১ জন তরুণ ফুটবলাকে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করে ফেডারেশন। একাডেমি উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন। অনুষ্ঠানে তিনি কমলাপুরের মতো পাঁচ থেকে সাতটি একাডেমি বানানোর প্রতিশ্রুতি দেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘একটা একাডেমি দিয়ে কিছুই হয় না। গতবছর চীন তিনশত ফুটবল একাডেমী একসাথে চালু করেছে। আমাদের এতো শক্তি নেই। কিন্তু আমি ওয়াদা করছি পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে পাঁচ থেকে সাতটি একাডেমি শুরু হয়ে যাবে।’
কিন্তু বিগত একাডেমির ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় এই আশ্বাস বাস্তবে রূপ পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। আগেও এইরকম অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও পূর্ণতা পায়নি কোনো প্রতিশ্রুতি। সিলেটে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী,ফিফার প্রতিনিধিসহ আরো কয়েকজন মন্ত্রী এমপির উপস্থিতিতে ফুটবল একাডেমী চালু করলেও তা চলেনি বেশিদিন। ২০১৯ সালে ঢাকার বেরাইদে ফুটবল একাডেমী গড়ে তুললেও কয়েক মাস পর সেটিও বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে এই ফুটবল একাডেমীর নামকরণ করা হয় ‘বিএফএফ এলিট ফুটবল একাডেমী’। একাডেমীর বর্ণনা দিতে গিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘এলিট ফুটবল একাডেমী হলো এমন একটা ফুটবল একাডেমী যেখানে বিদেশি কোচ থাকবে, প্রশিক্ষণার্থীরা বিদেশে যাবে। এটি একটি প্রফেশনাল ফুটবল একাডেমী।’
এছাড়া প্রয়োজনে বাফুফে আর্থিক সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তিনি বলেন, ‘আমরা খেলোয়াড়দের থাকার জায়গা পরিবর্তন করেছি। মাঠের অনেক সুযোগ-সুবিধা পরিবর্তন করেছি, অনেক উন্নয়ন করেছি। বাফুফের সাথে আমাদের অর্থনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হয় নি। বাফুফে এখনো নিজ উদ্যোগে একাডেমী চালাতে সক্ষম আছে। তবে ভবিষ্যতে কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই আমরা আলোচনা করে তাদের সাহায্য করবো।’
তবে কমলাপুরের একাডেমীর দিকে চোখ বুলালেই উঠে আসে ভিন্ন চিত্র। যেখানে খেলোয়াড়দের অবসান ও অনুশীলনের জন্যে সুইমিং পুল ও জিম থাকার কথা ছিলো। পাশাপাশি নিশ্চিত করার কথা ছিলো খেলোয়াড়দের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-সুরক্ষা। কিন্তু একমাত্র আবাসন ব্যবস্থা ছাড়া তেমন কিছুই চোখে পড়ে না। তাই সকলে দৃষ্টি এই একাডেমির দিকে, মনে একটাই প্রশ্ন, কত দিন সচল থাকবে একাডেমিটি?