ফেডারেশন কাপের ফাইনাল যেন রূপ নিয়েছিল একটি নাট্যরচনায়—গোল, উত্তেজনা, হাতাহাতি, আবহাওয়ার বিঘ্ন, মাঠে দর্শক অনুপ্রবেশ এবং শেষে আলো স্বল্পতার কারণে ম্যাচ স্থগিত। ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে মঙ্গলবারের এই বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচে আবাহনী লিমিটেড ও বসুন্ধরা কিংস ১-১ গোলে সমতায় ছিল অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধ পর্যন্ত। তবে দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগেই আলো স্বল্পতার কারণে ম্যাচটি স্থগিত ঘোষণা করেন রেফারি সায়মন হাসান সানি।
খেলার শুরুটা ছিল কিংসের দাপটে। চতুর্থ মিনিটেই সাদউদ্দিনের দূরপাল্লার শটটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও পরের মিনিটে তিনিই ফ্রি-কিক থেকে বল বাড়ান হুয়ান লেসকানোর উদ্দেশ্যে, যার হেডে গোল পায় কিংস। কিংসের হয়ে এটিই ছিল আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লেসকানোর প্রথম গোল।
তবে পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি আবাহনী। ১৫তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে এমেকা ওগবাহর আক্রমণে এলোমেলো হয়ে যায় কিংসের রক্ষণভাগ। ওগবাহর কাটব্যাক থেকে নিখুঁত প্লেসিংয়ে জাল খুঁজে নেন ইব্রাহিম। সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল করে উদযাপন করেন সাদামাটাভাবে, দুই হাত তুলে ‘দুঃখিত’ জানানোর ভঙ্গিতে।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার পরই শুরু হয় ভারি বৃষ্টি। রেফারি তখন খেলা বন্ধ করে দেন এবং গ্যালারি থেকে দর্শক ঢুকে পড়েন মাঠে, যা প্রশ্ন তোলে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে। প্রায় এক ঘণ্টা পর খেলা আবার শুরু হলেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১০২তম মিনিটে কিংসের ফয়সাল আহমেদ ফাহিম পেছন থেকে অযথা ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন, ফলে দশ জনের দলে পরিণত হয় কিংস। তবে এরপরই আলো স্বল্পতার কারণে খেলা আবার থেমে যায়।
রেফারি তখন দুই দলের অধিনায়ক, কর্মকর্তা ও ম্যাচ কমিশনারদের নিয়ে আলোচনা করেন। আলো স্বল্পতায় পরবর্তী ১৫ মিনিট ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ম্যাচটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণায় হতাশা প্রকাশ করেন আবাহনীর টিম ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু। গ্যালারির দর্শকদের মাঝেও ক্ষোভ দেখা যায়।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) জানিয়েছে, ফাইনাল কবে আবার মাঠে গড়াবে, সে সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।
এই নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর ম্যাচের পর ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়ন কে হবে, তার জন্য ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।