২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপ যৌথ বাছাইয়ের ম্যাচে দোহায় মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও কাতার। একপেশে এই ম্যাচে ৫-০ গোলের বড় জয় পায় এশিয়ার চ্যাম্পিয়নরা।
বাংলাদেশের শুরুর একাদশ ছিলো চমকে ভরপুর। অভিজ্ঞ গোলরক্ষক রানার পরিবর্তে এই বড় ম্যাচের দলে সুযোগ পান মাত্র একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা আনিসুর রহমান জিকো। মধ্যমাঠে সম্প্রতি ভালো খেলা মানিক মোল্লাও জায়গা হারান। দলে আসেন বিপলু আহমেদ। অন্যদিকে পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে একাদশ সাজান কাতার কোচ ফেলিক্স সানচেজ।
ম্যাচের শুরু থেকে নিজেদের পায়ে বল রেখে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন কাতার। ম্যাচে ৪ মিনিটেই একটি ক্রস থেকে আসা বলে কাতারের আলাদিনের হেড সাইড পোস্টে লেগে ফিরে আসলে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। তবে ম্যাচে লিড নিতে দেরী করেনি কাতার। ৯ মিনিটে গোল করেন হাতিম। এগিয়ে গিয়ে দুই উইং ব্যবহার করে একেরপর এক আক্রমন সাজিয়ে যায় কাতার। ক্রস থেকে আবারো একটি হেড করেন আলাদিন। তবে জিকো সে যাত্রায় রক্ষা করেন।
৩৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করে কাতার। বা প্রান্তে বক্সের একটু বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান আকরাম আফিফ। এরপরও নিজেদের আক্রমনের ধারা বজায় রাখে কাতারের ফুটবলাররা। পক্ষান্তরে প্রতিপক্ষের পরীক্ষা নেয়ার মতো কোন আক্রমন করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। এতে প্রথমার্ধ ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে শেষ করে জেমি ডে’র শিষ্যরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আবারো দুই উইং ব্যবহার করে আক্রমন করতে থাকে কাতার। বাংলাদেশ দলকে কয়েকবারই রক্ষা করেন তরুন গোলরক্ষক জিকো। ৫৪ মিনিটে ডিফেন্ডার রিয়াদুলের ভুলে সহজ সুযোগ পেয়ে যায় কাতারের ফুটবলার, কিন্তু বাঁধা হয়ে দাড়ান তিনি। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে আবারো বাংলাদেশের রক্ষক জিকো।আলমোয়জের একটি হেড বা দিকে ঝাপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন। এর পরের মিনিটেই আবারো বা দিকে ঝাপিয়ে দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে কাতারকে গোল বঞ্চিত করেন এই গোলরক্ষক।
তবে কাতারকে ব্যবধান বাড়াতে শেষ পর্যন্ত আর থামাতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচের ৭০ মিনিটে মোয়েদ হাসানকে ডি বক্সে বিপলু ফাউল করলে পেনাল্টি পায় কাতার। সেখান থেকে গোল করেন আলমোয়েজ আলী। সেই পেনাল্টিতেও আপ্রাণ চেষ্টা করেন জিকো। তার হাতের ছোয়া লাগলেও শটের গতি বেশি থাকা তিনি পরাস্ত হন। এই গোলের ছয় মিনিট পর নিজের পক্ষে দ্বিতীয় ও দলের পক্ষে চতুর্থ গোল করেন আলমোয়েজ। এরপর সংযুক্তি সময়ে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন আকরাম আফিফ। এটি ম্যাচে তার দ্বিতীয় গোল।
এতেই ৫-০ গোলের বড় জয় নিশ্চিত করে কাতার। তবে শুধুমাত্র গোলের ব্যবধান ম্যাচের দৃশ্য পুরোপুরি ফুটিয়ে তুলতে পারে না। ম্যাচে একপ্রকার অসহায় আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ দল। ৭৬% বল পজিশনে নিয়ে বাংলাদেশে পোস্টে ১৫ টি শট নেয় কাতারের খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে একবারের জন্যও কাতারের গোলে শট নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে বড় দলের বিপক্ষে সবসময় না খেলার ফলে অনভিজ্ঞতা ফুটে উঠে বাংলাদেশের খেলায়।