অবশেষে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে থামল বসুন্ধরা কিংসের আধিপত্য। গত তিন মৌসুম ধরে রাজত্ব করা কিংসকে স্বাধীনতা কাপ ২০২১ এর ফাইনালে পুরোপুরি বিধ্বত্ব করে শিরোপার মুকুট নিশ্চিত করেছে দেশের ফুটবলের সবচেয়ে সফলতম দল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। ফাইনালে ৩-০ গোলে জয় পায় মারিও লেমসের দল।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেয় ঢাকা আবাহনী। ম্যাচের ৬ মিনিটেই ডরিয়েলটন বল জালে জড়ালেও তা অফসাইডে বাতিল হয়। একের পর এক আক্রমনে কিংস ডিফেন্ডারদের ব্যস্ত রাখে আকাশী নীল বাহিনী। তবে মাঝে মধ্যে আক্রমনে উঠে কিংসও। ম্যাচের ১০ম মিনিটে বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে রবসনের জোড়ালো শট পোস্টে রাখতে ব্যর্থ হয়।
খেলার ২৫ মিনিটে মিলাদ শেখের একটি ফ্লিকে বক্সের ভিতর বল পেয়ে যান রাফায়েল। কিন্তু তার বাঁ পায়ের শট সহজে রুখে দেন কিংস গোলরক্ষক জিকো। ইনজুরিতে জর্জরিত কিংস স্কোয়াডে দুঃসংবাদ আসে ম্যাচের ৩০ মিনিটে। সেন্টার ব্যাকে টুর্নামেন্ট জুড়ে দূর্দান্ত খেলতে থাকা আতিকুর রহমান ফাহাদ ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়লে চিন্তার ভাঁজ আরো বাড়ে কিংসের ডাগ আউটে।
ম্যাচের ৩৭ মিনিটে ভালো সুযোগ পান কিংসের ভ্রানিয়েজ। রবসনে ফ্লিক থেকে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে যান তিনি। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে পড়ে গেলে আর তা গোলমুখে মারতে পারেনি বসনিয়ান এই খেলোয়াড়; ফলে সহজেই তা লুফে নেন আবাহনী গোলরক্ষক। তবে এর এক মিনিট পরই তিন থেকে চারজনকে পরাস্ত করে রবসন বক্সে ঢুকে পড়েন। সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা ভ্রানিয়েজকে পাস দিলে তার জোড়ালো শট গোল পোস্টের অনেক উপর দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ভালো জায়গায় একটি ফ্রি কিক পেলেও আবাহনীর কলিন্ড্রেস মানব দেয়ালে মেরে সেই সুযোগ নষ্ট করেন। এতে প্রথমার্ধ গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয়।
বিরতির পর নিজেদের কাক্ষিত লিড পায় আবাহনী। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে রাফায়েলের একটি থ্রু বল থেকে কিংস ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে বক্সে ঢুকে সহজেই জিকোকে পরাস্ত করে আবাহনীকে এগিয়ে দেন রাকিব। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে পেনাল্টি অর্জন করে আবাহনী। ডি বক্সের ভিতর আবাহনীর ডেনিয়েল কলিন্ড্রেসকে ফেলে দিয়ে পেনাল্টিটি উপহার দেন কিংসের রিমন। স্পট কিক থেকে বল জালে জড়াতে ভুল করেনি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ডরিয়েলটন। খেলার ৭২ মিনিটে আরো একটি গোল পেতে পারতো আবাহনী। কিন্তু ইমনের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়ার শট ফিরিয়ে দেন জিকো। ফিরতি বলে রাকিবের হেড কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন কিংস গোলরক্ষক।
ম্যাচের ৭২ মিনিটে রাফায়েলের কর্নার থেকে মিলাদ শেখ হেড করে বল ডরিয়েলটনকে নামিয়ে দেন। সেখান থেকে তার ডান পায়ের জোড়ালো শট জালে জড়ালে তিন গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় আবাহনী। এতে ম্যাচের বাকি সময় ছিলো শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। রেফারির শেষ বাঁশি বাজায় পর স্বাধীনতা কাপে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ফুটবলের সবচেয়ে সফল দলটি।