কিংস-মারুফুল হক দ্বন্দ্বের নতুন মোড় নিয়েছে। খেলোয়াড়দের সাথে অসুলভ আচরণের গুঞ্জন উঠিয়ে মারুফুল হকের বিরুদ্ধে বিচার দাবি জানিয়েছিলো বসুন্ধরা কিংস। তবে কিংসকে প্রতি উত্তর দিতে ভুলেন নি মারুফুল হক। বসুন্ধরা কিংসে এহেন কর্মকান্ডকে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে বাধা সৃষ্টিকারী বলে আখ্যা দিয়েছে তিনি।

অ-২০ দলকে নিয়ে বেশ কিছুদিন আগেই বুয়েট মাঠে অনুশীলন শুরু করেন মারুফুল হক। কিন্তু ইনজুরি এবং নতুন কোচের সঙ্গে অনুশীলনের জন্য যুব দলের ক্যাম্পে ডাক পাওয়া সব খেলোয়াড়দের একসঙ্গে ছাড়েনি বসুন্ধরা কিংস। গতকাল (১৫সেপ্টেম্বর) বসুন্ধরা কিংসের কিছু খেলোয়াড় অনুশীলনে যোগ দিতে গেলেও তাদের অনুশীলনে নেননি মারুফুল। তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগও উঠেছে কোচের বিরুদ্ধে। তাই খেলোয়াড়রা আবারো কিংসের ক্যাম্পে ফিরে গেছে।

এই ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বসুন্ধরা কিংস কর্তৃপক্ষ। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচের এমন আচরণ বাফুফের বিধি ভঙ্গ করেছে উল্লেখ করে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারকে চিঠি দিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় মারুফুল হকের উপযুক্ত শাস্তি দাবি এবং তার অধীনে বসুন্ধরা কিংসের কোনো ফুটবলারকে ক্যাম্পে যোগ দিতে দেওয়া হবে না বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে পাল্টা জবাব দিতে পিছুপা হন মারুফুল হক। এক বিজ্ঞতিতে তিনি তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন এবং ভালোভাবেই কিংসের দাবির বিপক্ষে নিজের মতামত তুলে ধরেন। তার মতে তিনি নিজে নয়, বরং বসুন্ধরা কিংস কর্তৃপক্ষই অপেশার আচরণ করেছেন; কারণ জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু ক্লাবের কথা ভেবেছে- “বসুন্ধরা কিংস তাদের পত্রে উল্লেখ করেছে যে আমি অপশোদার একজন কোচ। আমার প্রশ্ন হল দেশের সর্বোচ্চ পেশাদার ক্লাব দাবীকৃত একটি ক্লাব কিভাবে জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শুধুমাত্র ক্লাব স্বার্থকে সর্বাগ্রে নিয়ে এসে নিজেদের পেশাদারিত্বের কী প্রমান দিচ্ছেন? এপর্যায়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে বসুন্ধরা কিংস জাতীয় স্বার্থকে ভূলন্ঠিত করেছে। আমাদের জাতীয় ও রাজনৈতিক জীবনে পরিবর্তন আসলেও, এধরনের কর্মকান্ড আমাদের ফুটবলের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে বাধাগ্রস্ত করবে।”

যেখানে অন্য দলগুলো জাতীয় দলগুলো খেলোয়াড়দের দেশের হয়ে খেলতে উদ্ধুদ্ধ করেছে, সেখানে বিপরীত আচরণ করেছে বসুন্ধরা কিংস। তাদের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের হয়ে খেলতে বাধা দেওয়াটাকে অজুহাত হিসেবে মনে করছেন মারুফুল হক। কিংসের আচরণের বিপরীতে গিয়ে প্রশ্নও তুলেন তিনি, “একটি বয়সভিত্তিক জাতীয় দল সাফ অঞ্চলে শ্রেষ্ঠতা অর্জনের পর যেখানে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড ৭ জন, ঢাকা আবহনী লিমিটেড ২ জন এবং বাংলাদেশ পুলিশ এফসি ২ জন খেলোয়াড়ের বিষয়ে কোন আপত্তি না জানিয়ে তাদের দলীয় কর্মকর্তারা তাদের খেলোয়াড়দের দেশের পক্ষে জান উজার করে খেলার জন্য উদ্ধুদ্ধ করে যাচ্ছে, সেখানে বসুন্ধরা কিংস কিভাবে তাদের খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে খেলার বিষয়ে মিথ্যা অজুহাত দিয়ে দূরে রাখে?”

বসুন্ধরা কিংস তাদের কোনো খেলোয়াড়কে মারুফুল হকের অধীনে হওয়া ক্যাম্পে পাঠাবে বলে জানায়। এই প্রসঙ্গেও বেশ খোলাখুলিভাবে কথা বলেছেন মারুফুল হক। তিনি বলেন, “আমি জানাতে চাই যে, আমি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের পদ থেকে সরে গেলে যদি বসুন্ধরা কিংস তাদের সকল খেলোয়াড়কে উক্ত দলে ছাড় দেয়, তবে আমার দেশের ফুটবলের স্বার্থে, এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্যায়ে কোয়ালিফাইয়ের স্বার্থে, আমি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের পদ থেকে এই মুহুর্তে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত।”

এছাড়া কিংসকে সূক্ষ্মভাবে খোঁচা দিতেও ভুলেন নি মারুফুল হক। মারুফুল হক বলেন, “আশা করি তারা খুব কম সময়েই নিজেদের এই দর্শনে বিশ্বের সেরা ক্লাব হয়ে উঠবে। কারণ তাদের হাতে বিশ্বের সবচেয়ে পেশাদার কোচিং স্টাফ আছে।”

Previous articleযুব ফুটবলারদের সঙ্গে মারুফুলের আচরণে ক্ষুব্ধ বসুন্ধরা কিংস!
Next articleসাফ মিশনে ভুটান যাচ্ছে অ-১৭ দল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here