যুগের পর যুগ পার হয়, পুরাতনরা গিয়ে নতুনরা আসে, ক্ষমতার চেয়ারে বসে দেখতে পাওয়া যায় নতুন নতুন সব মুখ; তবুও কেনো যেনো রীতিনীতির কোনো পরিবর্তন হয় না। নতুনত্বের গল্প শোনানো ব্যক্তিবর্গরাই কাজের ক্ষেত্রে পুরাতনকে আঁকড়ে ধরে, এতে করে পরিবর্তন আসবো আসবো করেও আসতে পারে না। বাংলাদেশের ক্রীড়া জগত পূর্বে ঘুণেধরা ক্রীড়াজগত নামে পরিচিত ছিলো, ক্ষমতার চেয়ারে ব্যক্তিদের পরিবর্তনের সুর কল্পনাতে স্থান পেতো, বাস্তবে তার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। পুরাতন চলে যাওয়ার পর নতুনরা ক্ষমতায় আসলো। চেয়ারে বসে তারাও পরিবর্তনের আশ্বাস দিলো। তবে পুরাতনদের রীতি অনুসরণ করে পরিবর্তনকে বাস্তবে রূপ দিতে আবারো ব্যর্থ হল।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল লীগ শুরু হওয়ার আগে ভেন্যু নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে পড়তে হয়। শতকষ্টে ভেন্যু নির্ধারণের পর প্রশ্ন উঠে মাঠের কোয়ালিটি নিয়ে। তবে সব সমস্যার সমাধানের পর নতুন করে আরো সমস্যা এসে হানা দেয়। কুমিল্লার ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত স্টেডিয়াম বিপিএলের বহুল প্রচলিত একটি স্টেডিয়াম। আগে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এই মাঠকে হোমভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করলেও, এই মৌসুমে মোহামেডান ও আবাহনী দুইদল এই মাঠকে হোমভেন্যু হিসেবে বাছাই করেছে।
আগামী ১০ ই জানুয়ারি এই মাঠে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের খেলা রয়েছে। তবে একই দিনে একটি প্রতিষ্ঠানকে এই মাঠ ব্যবহারের জন্য ভাড়া দিয়েছে ক্রীড়া পরিষদ। এতে করে বিপত্তি সৃষ্টি হয়। যে মাঠে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের ম্যাচ আয়োজনের কথা রয়েছে, সেই মাঠ কিভাবে একটি প্রতিষ্ঠান তাদের অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ পায় এবং সেই সুযোগ যদি ক্রীড়া পরিষদ করে দেয় তাহলে উঠে আসে বড় একটি প্রশ্ন। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফুটবল নিয়ে বড় পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখালেও ক্রীড়া পরিষদের কাজই তার আশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এছাড়া ক্রীড়া পরিষদ ফুটবল লীগের চেয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানকে বেশী গুরুত্বের চোখে দেখেছে। এতে করে লীগ খেলা পেছানোর জন্য অনুরোধ জানায় ক্রীড়া পরিষদ। যা নিতান্তই অপেশাদারি এক আচরণ। এই প্রসঙ্গে ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক শামসুল আলমের এক স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামটি ১০ জানুয়ারি অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ভাড়া প্রাপ্তির পর বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এমতাবস্থায় খেলাটি সুবিধাজনক অন্য তারিখে স্থানান্তর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।”
ক্রীড়া উপদেষ্টা অল্পকিছুদিন আগে বাফুফের পূর্বের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। বাফুফের পূর্বের অপেশাদারি আচরণ নিয়ে কঠিন সমালোচনাও করেছিলেন। সেসময় তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন এবার তৃণমূল থেকে উন্নয়ন সাধিত হবে। তবে তৃণমূল দূরে থাক, ঘরোয়া লীগে সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার পরিষদ চরম অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে।
এমন অপেশাদারি কাজ বন্ধ করার উপদেশ দেন কুমিল্লার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন রোমেল।তার মতর ক্রীড়া পরিষদের এ ধরনের বরাদ্দ বাতিল করা উচিত। ফুটবল ফেডারেশনের এ ব্যাপারে আপত্তি জানানো উচিত। অনেক সমালোচনার পর খেলার মাঠে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিভিন্ন জায়গায় কিন্তু বন্ধ হয়েছে।
তবে খেলা পিছানো নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি পায় নি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কর্তৃপক্ষ। তবে এই নিয়ে মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকিবকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। এই দেশকে সিস্টেম নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছে তিনি।আমরা যদিও চিঠিটি এখনো দেখিনি, কিন্তু কী করবেন বলুন, এ দেশে তো এগুলোই হয়ে এসেছে, বলেন নকিব।