করোনা মহামারীতে মাঠে নেই দেশের ফুটবল। ঘরে বসেই কাটছে ফুটবলারদের অবসর সময়। এই সময়ে নিজেদের ফিট রাখতেই ব্যস্ত তারা। বর্তমান পরিস্থিতি, নিজ ক্লাবের এএফসি কাপ সম্ভাবনা ও জাতীয় দলের বিষয়ে অফসাইডকে দেয়া সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেছেন বসুন্ধরা কিংসের মিডফিল্ডার ইমন মাহমুদ। তারই চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলোঃ
অফসাইড : করোনা মহামারীতে আমাদের দেশে খেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের দেশের খেলোয়াড়দের?
ইমন : আমরা মাঠের মানুষ মাঠেই থাকতে চাই।মাঠে থাকতে না পারাটা বড় হতাশার। খেলা না হওয়াটাই বড় সমস্যা। যত দ্রুত সম্ভব মাঠে ফিরতে চাই। খেলা বন্ধের কারন আমাদের খেলোয়াড়রা আর্থিকভাবে অনেক সমস্যায় পড়েছে বলে আমি মনে করি।
অফসাইড : ফুটবলে ফিটনেস অন্যতম প্রধান বিষয়। এই সময়ে নিজেকে কিভাবে ফিট রাখছেন?
ইমন : আমাদের ক্লাবের ট্রেনার প্রতিদিন আমাকে রুটিন ওয়ার্ক পাঠিয়ে দেন। আমি সে ভাবেই প্রতিদিন ড্রিল গুলা করি। আমার বাসায় বেশ কিছু জিম ইকুয়েপমেন্ট আছে সেটা দিয়ে নিজেই ড্রিল করি। মাঝে মাঝে ক্লাবে গিয়েও জিমে ঘাম ঝড়াই। আর প্রতিদিন সকালে রানিং করি। এভাবেই নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করছি।
অফসাইড : করোনা পরিস্থিতিতে মাঠের ফুটবল কিভাবে ফেরানো যেতে পারেন বলে মনে করেন? অনেকেই দর্শক শূন্য মাঠে খেলার কথা বলছে। এই বিষয়ে আপনার মতামত কি?
ইমন : লীগ বন্ধ করাটাই আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। আমি যেটা মনে করি আমাদের ফেডারেশন তাড়াহুড়া করে লীগটা বাতিল করে দিয়েছে। তারা আরো কিছুদিন দেখে তারপরে সিদ্ধান্ত নিতে পারতো। এখন আমাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আপাতত যত দ্রুতো দর্শক শূন্য মাঠে খেলা শুরু করা যায় ততই আমাদের জন্য ভালো হবে। আমাদের জাতীয় দলের জন্যও ভালো হবে।
অফসাইড : করোনায় প্রায় তিন মাস মাঠের বাইরে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিশ্চয়ই মাঠে ফিরবেন। ফেরার পর প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ কি হতে পারে?
ইমন : মাঠের বাহিরে থাকলেও আমি প্রায় শত ভাগ ফিট। হয়ত অতটা সমস্যা হবেনা। তারপরও মাঠে নেমে মানিয়ে নিতে কিছুটা সমস্যাতো হবেই। চেস্টা থাকবে যত দ্রুতো ওভার কাম করা যায়।
অফসাইড : এএফসি কাপ মাঠে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছে। নিজের দল (বসুন্ধরা কিংস) নিয়ে কি প্রত্যাশা করছেন?
ইমন : এএফসির সিদ্ধান্তে আমি অনেক আনন্দিত। কারন আমরা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কিছু করে দেখাতে চাই। এজন্য এএফসি কাপ আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের ক্লাব সভাপতিও চান আমরা এএফসি কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ক্লাবকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করি। আমরা ফাইনাল ছাড়া কিছু ভাবছিনা।
অফসাইড : কিছুটা বড় সময় ধরেই জাতীয় দলে উপেক্ষিত আপনি। লীগে বেশিভাগ সময় বেঞ্চে বসে কাটানো বা ইনজুরি থেকে সদ্য ফেরা খেলোয়াড়ও প্রাথমিক দলে ডাক পেতে দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে আপনি ডাক না পাওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া কি?
ইমন : জাতীয় দলে খেলাটা আমার কাছে সব সময় স্বপ্নের মত। আমি যেখানেই খেলিনা কেনো আমি আমার শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করি ভালো করার। আমার ভেতর কিছু আছে বিধায় বসুন্ধরা কিংস আমাকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকে দলে নিয়েছিলো। আমি তাদের হয়ে শিরোপা জিতেছি। আবাহনীতেও পাঁচটি শিরোপা জিতে এসেছি। আমি চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়। সেই আমিই অদৃশ্য কারনে জাতীয় দলের প্রাথমিক দলেও সুযোগ পাইনা। এটা আমার জন্য খুবই হতাশার। আমি হয়তো কোচের গেম প্ল্যান অনুযায়ী একাদশে সুযোগ না পেতে পারি কিন্তু আমার বিশ্বাস আমি সেরা পনেরতে থাকার মত খেলোয়াড়। আমি ক্লাবের হয়ে প্রমান করতে চাই জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা আমার আছে।