এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের ফলাফল ছাপিয়ে দলের ফুটবলারদের পরখ করা এবং পারফেক্ট কম্বিনেশন গড়ে তোলাই মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরার। তবে ম্যাচের ফলাফলে হয়তো বাংলাদেশ কোচ কিছুটা খুশিই হবেন। ফিফা রেংকিংয়ে ২৯ ধাপ এগিয়ে থাকা ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে তাদের ঘরের মাঠ থেকে ড্র করে ফেরা নিশ্চয়ই সহজ কোনো পথ ছিলো না। তবে সে পথ বেশ ভালোভাবেই পাড়ি দিয়েছে জামাল-জিকোরা। তবে দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্স কি দর্শকদের মন জয় করতে পেরেছে?
ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরের সি জালাক হারুপাত স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৭ হাজারেরও বেশি দর্শকের সামনে স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো লাল সবুজের জার্সিতে মাঠে নামেন তরুণ ফরোয়ার্ড সাজ্জাদ হোসেন। ম্যাচের ১১তম মিনিটে বাংলাদেশকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। বাম প্রান্ত থেকে নেওয়া আসনাওয়ির লম্বা থ্রো থেকে ইন্দোনেশিয়ান অধিনায়ক ফাসরুদ্দিনের হেড রুখে দিয়ে বাংলাদেশের জাল অক্ষত রাখেন জিকো। এই আক্রমনের মিনিট দুয়েকের মধ্যে আবারো জিকোর কল্যাণে বেচেঁ যায় বাংলাদেশ। ১৩তম মিনিটে সাদ্দিল রামদানির বাম পায়ের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন জিকো। এরপর ২১তম মিনিটে আবারো লাইম লাইটে বাংলাদেশ গোলরক্ষক। ইন্দোনেশিয়ান ফরোয়ার্ড স্টেফানো জান্টজেকে ওয়ান টু ওয়ানে আটকে দেন জিকো। ২৫তম মিনিটে প্রথমবারের মতো ইন্দোনেশিয়ার রক্ষণকে চ্যালেঞ্জ জানায় বাংলাদেশের আক্রমণভাগ। তবে রাকিবে হোসেনের জোরালো শট স্বাগতিক গোলকিপারকে পরাস্ত করতে পারেনি। এরপর বিচ্ছিন্ন কিছু আক্রমন ছাড়া প্রথমার্ধে আর বলার মতো তেমন কোন আক্রমন হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এলোমেলো হয়ে পড়ে বাংলদেশে রক্ষণ। তবে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি ইরফান জায়া। ৫৪তম মিনিটে অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার ফ্রি-কিকে অভিষিক্ত সাজ্জাদ হোসেন জটলা থেকে শট নিলেও তা প্রতিহত হয় ইন্দোনেশিয়ার রক্ষণে। ৬৬তম মিনিটে সাদ্দিল রামদানির ফ্রি-কিক স্টিফেনো জানজির হেড প্রতিহত করেন জিকো। ৭৩ মিনিটে ইন্দোনেশিয়ার দর্শকরা গোলের আনন্দে মেতে উঠলেও অফসাইডে বাতিল হয় তাদের গোল। শেষ দিকে মোহাম্মদ দিমাসের চেষ্টা চলে যায় ক্রসবারের অনেকটা ওপর দিয়ে। ফলে গোলশূন্য ড্র করেই মাঠ ছাড়ে দুদল।
প্রীতি ম্যাচ হওয়ায় বেঞ্চের ফুটবলারদেরও পরখ করে নেন ক্যাবরেরা। বদলি হিসেবে অভিজ্ঞ সোহেল রানার সঙ্গে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামেন ৩ তরুণ তুর্কী ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, মারাজ হোসেন ও পাপন সিং। সব মিলিয়ে দলের ফলাফলে নিশ্চিতভাবেই কিছুটা স্বস্তিতে থাকবেন বাংলাদেশ কোচ। তবে দলের পাসিং, পজিশনিং আর চিরায়ত গোল স্কোরিং নিয়ে আরো অনেক কাজ করার জায়গা ফুটে উঠেছে। সেগুলো নিয়ে কাজ করেই মালয়েশিয়ায় এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে নামতে হবে বাংলাদেশকে। আগামীকালই ইন্দোনেশিয়া থেকে মালয়েশিয়া যাবে বাংলাদেশ। সেখানে আগামী ৮, ১১ ও ১৪ জুন বাহরাইন, তুর্কমেনিস্তান ও স্বাগতিক মালয়েশিয়ার বিপক্ষে নিজেদের ম্যাচগুলো খেলবে হাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা।