ফিরতি ম্যাচেও ঢাকা আবাহনীকে পরাস্ত করতে পারলো না মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ঢাকা ডার্বির শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে কুমিল্লার ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছে দশজনের ঢাকা আবাহনী।
৮ মিনিটের মাথায় ম্যাচের গোলশূন্য স্কোরলাইন ভাঙ্গে ঢাকা আবাহনীর কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড ড্যানিয়েল কলিন্ড্রেস। কর্ণার থেকে শট করে সরাসরি বলকে গোলপোস্টে পাঠিয়ে দিয়ে টুর্ণামেন্টের প্রথম অলিম্পিক গোল করে কলিড্রেন্স। মিনিট দুয়েকের ব্যবধানে লিড দ্বিগুণ করে আকাশী-নীলরা। মধ্যমাঠের নিচ থেকে নুরুল নাইম ফয়সাল লম্বা থ্রু বল থেকে ড্যারিয়েল্টন বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়ে মোহামেডানের ডিফেন্ডার রাজীবকে পাশ কাটিয়ে খানিকটা জায়গা বের করে রাজীব হোসেন ও এরন জনের মাঝখান দিয়ে জোরালো এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ড্যারিয়েল্টন।
১৮ মিনিটে সোলেমান দিয়াবাতের গোলে সাদা-কালো শিবিরে ম্যাচে ফেরার আশা জেগে উঠে। এরন জনের পাস থেকে আআলমগীর মোল্লা বলকে তুলে দেন বক্সে থাকা দলের প্লেয়ারের উদ্দেশ্যে। তুলে দেওয়া বলে বক্সের ভেতরে থাকা সোলেমান দিয়াবাতে লাফিয়ে উঠে আলতো টোকার মাধ্যমে গোল আদায় করে নেন। ৪৩ মিনিটে ইমন মাহমুদের গোল ব্যবধান আরেকটু বাড়িয়ে নেয় ঢাকা আবাহনী। বক্সের বামপ্রান্ত থেকে ড্যানিয়েল কলিন্ড্রেস গোলমুখে শট করলে মোহামেডানের গোলরক্ষক মোহাম্মদ হাবিব রুখে দিলেও খালি জায়গায় থাকা বদলি হিসেবে নামা আবাহনীর খেলোয়াড় ইমন মাহমুদ বল পেয়ে যায়। তাতেই স্কোরলাইনে নিজের নাম তুলেন এই মিডফিল্ডার।
প্রথমার্ধের ইঞ্জুরি টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে মোহামেডানের হয়ে আরেক গোল শোধ করেন শাহরিয়ার ইমন। আলমগীর মোল্লার লম্বা পাস থেকে ডানদিক দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে প্রথমে নুরুল নাইম ফয়সালের বাধা ছিটকে ফেলে মিলাদ শেখ ও রেজাউল করিম রেজার বাঁধার মধ্যে দিয়ে শট নিয়ে গোল করেন শাহরিয়ার ইমন। ইঞ্জুরি টাইমে শেষ মিনিটে আবাহনী আরো একবার দেখালো তাদের গোল জাদু। ড্যানিয়েল কলিন্ড্রেসের কর্ণার কিক থেকে ব্যাকহেডারের মাধ্যমে গোলের স্কোরবোর্ডে আরো একবার নিজের নাম তুলেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ড্যারিয়েল্টন।
এতে করে ৪-২ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ঢাকা আবাহনী। দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধের জন্যে আক্রমণের ধার বাড়ায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ৮১ মিনিটে দ্বিতীয়বারের মতো হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে আবাহনীর ডিফেন্ডার রেজাউল করিম রেজা। বক্সের সামনে নিজেদের রক্ষণভাগে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড় আলমগীর মোল্লাকে ফাউল করে রেজাউল করিম রেজা। ফাউল করায় রেফারি বিটুরাজ বড়ুয়া রেজাকে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো হলুদ কার্ড দেখায়, এতে করে দশজনের দলে পরিণত হয় ঢাকা আবাহনী।
দ্বিতীয়ার্ধের রেগুলেশন টাইমের শেষ মিনিটে এসে গোল করেও অফসাইডের কারণে গোল উৎযাপন করতে পারে নি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আশরাফুল হক আসিফের পাস থেকে সেই গোলটি করে বদলি হিসেবে নামা মিডফিল্ডার সাহেদ হোসেন। কিন্তু গোল করলেও পতাকা তুলে অফসাইডের এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দেয় সহকারী রেফারী। মোহামেডান এতে প্রতিবাদ করলেও রেফারি বিটুরাজ বড়ুয়া গোলের আবেদন নাকোচ করে দেন। ফলে শেষ পর্যন্ত ৪-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মারিও লেমোসের শিষ্যরা।