গতকাল ছিলো দল বদলের শেষদিন। সরব ছিলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবন। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো নিজেদের খেলোয়াড় তালিকা জমা করেছে কর্তৃপক্ষের কাছে। গত পরশুদিন চারটি দল দলবদলে অংশ নিয়েছিল। মঙ্গলবার শেষ দিন একসঙ্গে বাকি নয় দল তাদের খেলোয়াড়দের নিবন্ধন করিয়েছে। ২২ ডিসেম্বর ফেডারেশন কাপের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ফুটবলের নতুন মৌসুম।

দলবদল শেষে আত্মবিশ্বাসী ক্লাবগুলো। নিজেদের বিদেশী সংগ্রহ ও প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট তারা। তারুন্য নির্ভর দল গড়েছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান। গত মৌসুমের অনেক খেলোয়াড় ছেটে ফেলে চ্যাম্পিয়নশীপ ও বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের তরুণদের নিয়েছে তারা। রয়েছে গতবারের দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সুলেমানে দিয়াবাতেও। তাই আশাবাদী মোহামেডানের ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় কোচ শন লেইন, ‘আমাদের দল গতবারের তুলনায় ভালো হয়েছে। কারণ এবার কিছুটা বেশি সময় অনুশীলন করা গেছে।’ লীগে সেরা চারে থাকার লক্ষ্য স্থির করেছে মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, ‘আমরা লিগে সেরা চারের মধ্যে এবং টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’

এদিকে অর্থ সংকট থাকলেও ফেডারেশন কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেসি। দলে ভিড়িয়েছে ফ্রেঞ্চ লীগে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন বেকামেঙ্গাকে। মাঠে থাকা প্রত্যয়ে দলের ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম বলেছেন, ‘সংকট এখনো ঘোচেনি। তবে খেলাও চলবে আর আমরাও স্পন্সর খোঁজার কাজ চালিয়ে যাব। আশা করি, সংকট কাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবার ভালোভাবে মাঠে থাকবে।’

দেশের ফুটবলের সফলতম দল ঢাকা আবাহনীর চিন্তা দেশের ফুটবল ছাড়িয়ে এএফসি কাপেও। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের নিয়ে তাই প্রস্তুত আবাহনী কোচ মারিও লেমস। ট্রফি জেতার লক্ষ্য স্থির করা এই কোচ বলেন, ‘আমাদের দলটি ভালো। যারা আছে তাদের অনেক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সবার মধ্যে সমন্বয়টা ভালোভাবে গড়ে উঠলেই আমরা ভালো করতে পারবো। অবশ্যই আমরা ঘরোয়া ফুটবলের সব ট্রফি জিততে চাই। এছাড়া এএফসি কাপে আগের মতো সাফল্য চাই।’ শিরোপা জয়ের বিষয়ে একই বাণী আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপুরও, ‘আবাহনী সবসময় শিরোপার জন্য দল গড়ে থাকে। এবারও তাই হয়েছে। আমরা সবকটি প্রতিযোগিতাতে ভালো করতে চাই। যেন ট্রফি আসে।’

ভালো মানের বিদেশি সংগ্রহ করেছে শেখ রাসেল কেসি। দীর্ঘদেহী ব্রাজিলের জিয়ানকার্লো লোপেজই গোল করার মূল ভরসা তাদের। অন্যদিকে বাংলাদেশে নিজেদের প্রমান করা কিরগিজস্তানের বখতিয়ার দুশোকেকভ, তাজিকিস্তানের সিয়োভশ আসোরভ ও নাইজেরিয়ার ওবি মোনেকে পেয়ে শিরোপার রেসে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের কোচ সাইফুল বারী টিটু, ‘যে মানে দল গড়া হয়েছে তাতে ভালোভাবেই শিরোপা রেসে থাকবে। ফিটনেসে ঘাটতিও নেই। লক্ষ্য আমাদের একটাই শিরোপা।’

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এবারও ফেভারিটের তালিকায় সবার উপরে। জাতীয় দলের বেশিভাগ ফুটবলারের পাশাপাশি উঁচুমানের বিদেশী সংগ্রহ করে ইতিমধ্যে শিরোপা জয়ের তাগিদ দিয়ে রেখেছে তারা। দলের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজনও আবাহনীর মারিও লেমসের মতোই ঘরোয়া ফুটবলের পাশাপাশি এএফসি কাপকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ভারসাম্যপূর্ণ দল, আশা করি খুব ভালো করবে এবার। অনেকদিন ধরে ট্রেনিংয়ে ছিল তারা, সেদিক থেকে খুব ভালো সময়ে আমরা ফেডারেশন কাপ শুরু করতে যাচ্ছি। শুধু ঘরোয়া ফুটবল কিংবা দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, এএফসি কাপেও আমরা সাফল্য পেতে চাই।’

Previous articleটটেনহ্যামের আদলে অচিরেই আসছে বাফুফে’র জিম
Next articleবিজয় দিবস প্রীতি ফুটবল ম্যাচে জয়ী লাল দল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here