বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অদ্ভুত, অসাধারণ এক ম্যাচ দেখলো কুমিল্লাবাসী। ঢাকা আর চট্টগ্রামের দুই আবাহনীর সেই ম্যাচে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নিয়েছে মারিও লেমোসের শিষ্যরা। আর দুবার এগিয়ে গিয়েও একরাশ হতাশা নিয়েই মাঠ ছেড়েছে চট্টলার ক্লাবটি। প্রথম লেগে সিলেটে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় পেয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। এবার কুমিল্লায় ফলাফল ঠিক উল্টো। এবার চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় ঢাকা আবাহনীর!
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই মারুফুল হকের শিষ্যদের চেপে ধরে আকাশী-নীল জার্সিধারীরা। ১৪তম মিনিটে দানিয়েল কলিন্দ্রেসের শট যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। এর মিনিটে দুয়েক পর কলিন্দ্রেসের ক্রস থেকে ডরিয়েলটনের হেড রুখে দেন চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক সাইফুল। তবে ধারার বিপরীতে ম্যাচে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। ডি বক্সের সামান্য বাইরে ক্যান্ডি অগাস্টিনকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ঢাকা আবাহনীর মনির। আর সেই ফাউল থেকে পাওয়া ফ্রি কিকে দর্শনীয় গোল করে চট্টগ্রাম আবাহনীকে এগিয়ে নেন আফগান মিডফিল্ডার ওমিদ পোপালজায়। তবে চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলের আনন্দ স্থায়ী হয় মাত্র ২ মিনিট। দানিয়েল কলিন্দ্রেসের ক্রসে হেডে গোল করে ঢাকা আবাহনীকে সমতায় ফেরান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ডরিয়েলটন। তবে ৩৮তম মিনিটে মেহেদি হাসান রয়েলের ট্যাকেলের শিকার হয়ে বক্সের ভেতর পরে যান ক্যান্ডি অগাস্টিন, সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টি বাঁশি বাজান রেফারি জালাল। স্পট কিক থেকে ঠাণ্ডা মাথায় বল জড়িয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীকে আবারো এগিয়ে নেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড পিটার এবিমোবয়ে। ফলে ২-১ গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ঢাকা আবাহনী।
বিরতির পর কলিন্দ্রেসের ফ্রি কিকে ইরানিয়ান ডিফেন্ডার মিলাদ শেখের টোকা ফিরে আসে পোস্টে লেগে। এরপর ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে নাটকীয় ভাবে হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন এর আগে এক হলুদ কার্ড পাওয়া ক্যান্ডি। তবে তার লাল কার্ডের সিদ্ধান্তে বেশ উত্তাপ ছড়ায় মাঠে। তবে সিদ্ধান্তে অটল থাকেন রেফারি। এরপর ৭০তম মিনিটে কলিন্দ্রেসের কর্নারে হেডে গোল করে আবারো ঢাকা আবাহনীকে সমতায় ফেরান ডরিয়েলটন। এরপর ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে লেফট ব্যাক নুরুল নাঈম ফয়সালের গোলে ৩-২ গোলে এগিয়ে যায় ঢাকা আবাহনী। বা প্রান্ত থেকে এই ডিফেন্ডারের ক্রস চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবলার সাখাওয়াত হোসেন রনির মাথায় লেগে জড়িয়ে যায় জালে। এরপর চেষ্টা করেও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ১০ জনের চট্টগ্রাম আবাহনী, আর ঢাকা আবাহনীও পারেনি ব্যাবধান বাড়াতে।
ফলে ৩-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আকাশী-নীলরা। এই জয়ে ১৭ ম্যাচ শেষে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানেই থাকল আবাহনী। তাদের থেকে ছয় পয়েন্ট বেশি নিয়ে শিরোপা জয়ের পথে সবার উপরে বসুন্ধরা কিংস। সমান ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে চট্টগ্রাম আবাহনী।