দুই ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা ছুঁয়ে ফেললো প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। লীগের ২০তম রাউন্ডে মুন্সিগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের মুখোমুখি হয় বসুন্ধরা। সাইফের বিপক্ষে জয় পেলে শিরোপা নিশ্চিত ছিলো বসুন্ধরা কিংসের।ম্যাচে সাইফকে ২-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে কিংস।
ম্যাচের ১৭ মিনিটের মাথায় গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর পারদর্শীতায় গোল হজমের থেকে রক্ষা পায় বসুন্ধরা কিংস। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের রুয়াডিয়ান ডিফেন্ডার এমেরি বাইসাঙ্গের ফ্রি-কিকে কিংসের মানব দেয়ালে বাধাপ্রাপ্ত হলেও বক্সের ভেতরে বল সোজা গোলে শট করে সাউফের মারাজ হোসেন অপি। মারাজের সেই শটে বামদিকে লাফিয়ে পড়ে বল রুখে দিলেও ফিরতি বলে সুযোগ পেয়ে সাইফ স্পোর্টিংয়ের এম্ফোন উদো শট নেয়। কিন্তু আনিসুর রহমান জিকো ফিরতি শটও কর্ণারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন।
২৮ মিনিটে মতিন মিয়ার গোলে ম্যাচে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। মাঠের ডানপ্রান্ত থেকে কিংসের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার মিগেল ফিগুইরার কাটব্যাক থেকে বল পেয়ে সাইফের একজন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডানদিক দিয়ে খানিকটা জায়গা বের করে নিয়ে অন টার্গেট শটে গোল বের করে নেন মতিন মিয়া। সেখানে থাকা সাইফের গোলরক্ষক মোহাম্মদ পাপ্পু হোসেনের কিছুই করার ছিলো না।
৩৭ মিনিটে এসে ইয়াসিন আরাফাত লাল কার্ড দেখলে দশজনের দলে পরিণত হয় বসুন্ধরা কিংস। ৩৪ মিনিটের সময় মাঝমাঠে সাইফ স্পোর্টিংয়ের রহিম উদ্দিনকে মারাত্মকভাবে অতর্কিত ফাউল করে কিংসের ইয়াসিন আরাফাত। ফাউলের ফলে দুইদলের খেলোয়াড়দের মাঝে জটলা বেধে যায় এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচ পরিচালনাকারী রেফারী জিএম চৌধুরী নয়ন ইয়াসিন আরাফাতকে লাল কার্ড দেখালে দশজনের দল পড়ে বসুন্ধরা কিংস।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বসুন্ধরা কিংসের দশজনের দলের সুযোগটা নেয় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আক্রমণ হার বাড়িয়ে সাইফ স্পোর্টিং। তবে কিংসের রক্ষণভাবের খেলোয়াড়দের জন্যে তেমন সুবিধা করতে পারে নি সাইফের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়রা। ৭৫ মিনিটে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো আরো একবার নৈপুণ্যের পরিচয় দেয়। সতীর্থ খেলোয়াড় কাউসার আলী রাব্বির পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে জোরালে এক শট করে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের মারাজ হোসেন। মারাজের জোরালো শট নিজের বিশ্বস্ত হাত দিয়ে বলকে গোলবারের উপর দিয়ে তুলে দেন।
৮১ মিনিটে বিপলু আহমেদের গোলে লিড দ্বিগুণ করে বসুন্ধরা কিংস। রিমন ডানপ্রান্ত দিয়ে উঠে এসে বল দেয় বিপলুকে। পরবর্তীতে বল নুহা মারাঙ্গ হয়ে বিপলুর কাছে আসে। কিন্তু বিপলু বল পেলেও বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারলে নুহা মারাঙ্গ বল বের করে দিলে বিপলু আহমেদ পুনরায় বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাম পায়ের গোলমুখী শটে পাপ্পু হোসেনকে পরাস্ত করে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ইঞ্জুরি টাইমে ব্যবধান আরো বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পায় বসুন্ধরা কিংস। ফাঁকা মাঠে একাই বল নিয়ে উঠে এসে মিগেল ফিগুইরার কাছে বল রিলিজ করে। ফিগুইরা নিজের পায়ে কিছুক্ষণ বল রেখে হালকা করে ডানপ্রান্তে থাকা রিমনকে বল দেয়। রিমন জোরেসোরে গোলবারে চেষ্টা চালালে বল চলে যায় মাঠের বাইরে। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত সাইফ কোনো গোল করতে পারায় ২-০ গোলে জয় পায় বসুন্ধরা কিংস এবং এতে করে দুই ম্যাচ হাতে রেখে টানা তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা।