অবশেষে বাফুফের দাবি মেনে নিলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। পূর্বে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে ১০ বছরের জন্য বাফুফেকে লীজ দেওয়া হয়েছিলো। তবে কারণবশত স্টেডিয়ামটিকে ২৫ বছরের লীজ চেয়েছিলো বাফুফে। অবশেষে বাফুফের অনুরোধ গৃহীত হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক আগামী ১০ বছরের জন্য চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম লীজে পেয়েছিলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তবে তাতে ততটা খুশি হতে পারেন নি ফেডারেশন। তাদের চাওয়া ছিলো ২৫ বছর।
বাফুফের ২৫ বছরের লীজ চাওয়ার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী কোনো স্থাপনায় যদি ফিফার কোনো সদস্য সংস্থার কমপক্ষে ২০ বছরের অধিকার না থাকে সেখানে ফিফা বিনিয়োগ করে না। এই মাঠের আধুনিকায়ন এর স্বার্থে এবং ফিফার বিনিয়োগ প্রাপ্তির বিষয়টি মাথায় রেখে ক্রীড়া পরিষদের কাছে দাবি রেখেছিলো লীজের মেয়াদ বৃদ্ধি করে যেনো ২৫ বছরের জন্য করা হয়, যা এখন গৃহীত হয়েছে।
স্টেডিয়ামে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে অবগত করেছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম- “চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম প্রথমে ১০ বছরের জন্য বাফুফেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় বাড়ানো হয়েছে। ২৫ বছরের জন্য বাফুফেকে এই স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।”
তবে বরাদ্দের বিপরীতে ১২ টি শর্ত দিয়েছে এনএসসি।
শর্তসমূহঃ
১। আগামী ২৫ (পঁচিশ) বছর এই লীজ চুক্তি কার্যকর থাকবে।
২। উল্লেখিত স্টেডিয়ামের যে কোন ধরনের সংস্কার, মেরামত ও উন্নয়নমূলক কাজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে অবহিত করে সম্পন্ন করতে হবে এবং এ কাজের যাবতীয় ব্যয়ভার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন-কে বহন করতে হবে।
৩। লীজকৃত সময়সীমার মধ্যে ক্রীড়ানুষ্ঠান চলাকালীন বা অন্য কোন কারণে মাঠ কিংবা স্টেডিয়ামের অবকাঠামোর কোন ক্ষতি সাধিত হলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন উক্ত ক্ষয়-ক্ষতির ব্যয়ভার বহন করবে;
৪। উপরোক্ত স্টেডিয়ামের বিদ্যুৎ (ফ্লাড লাইটসহ), পানি, গ্যাস, টেলিফোনসহ ও অন্যান্য ইউটিলিটি বিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন-কে বহন করতে হবে।
৫। উক্ত স্টেডিয়ামে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলা চলাকালীন পরিষদের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন সংরক্ষণ করতে হবে।
৬। উক্ত স্টেডিয়ামের পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন তথা স্টেডিয়ামসমূহের পরিবেশ সুন্দর রাখতে হবে।
৭। পরিষদের অনুমতি ও তত্ত্বাবধান ব্যতিরেকে স্টেডিয়ামের মৌলিক কাঠামোর কোন পরিবর্তন করা যাবে না;
৮। উক্ত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকমানের খেলাধুলার ১৫% গেটমানি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অনুকূলে প্রদান করতে হবে।
৯। অত্র পরিষদের পূর্বানুমতি ব্যতিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন উক্ত স্টেডিয়াম অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করতে পারবে না:
১০। পরিষদের প্রয়োজনে কমপক্ষে ০৩ (তিন) মাসের নোটিশে এই অনুমতিপত্র বাতিলের ক্ষমতা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সংরক্ষণ করে।
১১। উপরোক্ত শর্তবলী সন্তোষজনক পালন সাপেক্ষে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চুক্তি নবায়ন করতে পারবে এবং
১২। উক্ত স্টেডিয়ামের বিপরীতে ভূমিকরসহ বিধিমত সকল রাজস্ব ব্যয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে বহন করতে হবে
বরাদ্দ দিয়ে দেওয়া হলেও এখনো আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে। তবে তাকে নিছকই আনুষ্ঠানিক বলেই মনে করেন আমিনুল ইসলাম। তার ধারণা অনুযায়ী আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়ে যাবে, “সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। শুধু আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে জানানো বাকি। এটা শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। চিঠিও লেখা হয়ে গেছে। আশা করি, আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই বাফুফে চিঠি হাতে পাবে।”