নিজ দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলার লক্ষ্য ও স্বপ্ন নিয়েই প্রতিটি দেশের এক একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সেদিক বিবেচনায় ১৬ বছর পর নিজেদের লক্ষ্য ও স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠত হলেও ১৬ বছর পর বাংলাদেশ ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ হয়েছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। ২০১৯-২০ মৌসুমে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সকল শর্তপূরণ করে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পায় ক্লাবটি। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবারের মতো মাঠে নামতে যাচ্ছে ক্লাবটি। তাই দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের অভিষেকের অপেক্ষায় থাকলেও এরইমধ্যে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে মাঠে নামার অপেক্ষা ফুরিয়েছে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের। মৌসুমের প্রথম দুই টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপ ও ফেডারেশন কাপে অংশ নিয়েছে নবাগত ক্লাবটি। দুই টুর্নামেন্টেই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্তরের ফুটবলে নিজেদের প্রথমবারের অংশগ্রহণেই নক আউট পর্বে খেলে সবাইকে চমকে দেয় ক্লাবটি। তবে দুই আসরেই স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘকে বিদায় করে দেয় সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। স্বাধীনতা কাপের গ্রুপ পর্বে পুরান ঢাকার ক্লাব রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় পায় স্বাধীনতা। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে হেরে আর সেমি ফাইনালে খেলা হয়নি স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের।
ফেডারেশন কাপে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও বসুন্ধরা কিংসের সাথে গ্রুপ ‘এ‘-তে ছিলো স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। তবে বসুন্ধরা কিংস ফেডারেশন কাপ থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করায় সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে আবারো সেই সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে হেরে ফেডারেশন কাপেও শেষ আট থেকেই বিদায় নিতে হয় নবাগতদের।
দুই টুর্নামেন্টেই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও নতুন মৌসুমের জন্য নিজেদের আগমনী বার্তা জানিয়ে রেখেছে ক্লাবটি। নিজেদের প্রথম মৌসুমে বিদেশি কোটায় স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ দলে ভিড়িয়েছে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ফরোয়ার্ড নেডো তারকোভিচ, পোল্যান্ডের উইঙ্গার রাফাল জাবোরস্কি, ইরানের ডিফেন্ডার সিয়ামাক কৌরশি এবং উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার নদির মাভলোনবকে। এদের সাথে দেশীয় কোনো বড় নামের ফুটবলার দলে না থাকলেও স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের হয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে পারফর্ম করে দলকে প্রিমিয়ার লিগে তোলা বেশ কয়েকজন সম্ভামনাময়ী ফুটবলার দেশের সর্বোচ্চ স্তরের ফুটবলে আলো ছড়াতে উদগ্রীব হয়ে আছেন।
সব মিলিয়ে নিজেদের প্রথম মৌসুমে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ জেতানো হেড কোচ মাসুদ আলম জাহাঙ্গীরের হাত ধরে কতোটা সফল হতে পারে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ সেটাই এখন দেখার বিষয়। স্বাধীনতা কাপ ও ফেডারেশন কাপের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের যেকোনো দলকে ভড়কে দিয়ে অঘটনের জন্ম দিতে পারে ক্লাবটি। কাগজে কলমে ততোটা শক্তিশালী না হলেও খেলাটা যেখানে ফুটবল সেখানে যেকোনো কিছুই ঘটাতে পারে নবাগত স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ। দিনশেষে মাঠের ফুটবলেই দেখা যাবে নিজেদের প্রথম মৌসুমটা কতোটা রাঙাতে পারে কোচ মাসুদ আলম জাহাঙ্গীরের শিষ্যরা।