দেশের ফুটবল উন্নয়ন বড় পদক্ষেপ হাতে নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তালিকাভুক্ত ফুটবল একাডেমিগুলো নিয়ে ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে বড় পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ফেডারেশন। এতে করে তৃণমূল থেকে উদীয়মান ফুটবলার যেমন উঠে আসবে, ঠিক তেমন ফুটবলের উন্নয়নও তরান্বিত হবে।
দেশের মধ্যে বর্তমানে ১৯২ টি তালিকাভুক্ত একাডেমি আছে। এই ১৯২ টি একাডেমি নিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে টুর্ণামেন্ট শুরু কথা রয়েছে। প্রথমে জেলা পর্যায়, পরে বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হবে এই টুর্ণামেন্ট। টুর্ণামেন্ট নিজেদের পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছেন বাফুফে ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বলেন,
“একাডেমি গুলো কখনো কোনো টুর্ণামেন্ট খেলে নি। তাই তালিকাভুক্ত ১৯২ টি একাডেমি নিয়ে আমি টুর্ণামেন্ট শুরু করতে চলেছি, যা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে সারাদিন বাংলাদেশে চলবে। এটাকে আমরা কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করবো। টিমগুলো সেসব পর্যায় এবং নকআউট পর্ব পার করে এসে ফাইনাল খেলার সুযোগ পাবে।”
প্রতিভাবান খেলোয়াড়েরা যাতে হারিয়ে না যায় এবং টুর্ণামেন্ট যাতে আরো বেশী প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠে সেটা নিয়ে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বাফুফে। সেই পরিকল্পনা মতে প্রতিভাবান খেলোয়াড় যদি দল হেরে যাওয়া কারণে পরবর্তী রাউন্ডে খেলার সুযোগ হারায় তাহলে সে প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের পরবর্তী রাউন্ডে অন্য দলে রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে খেলার সুযোগ পাবে। এই প্রসঙ্গে ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান জানান,
“আমরা এমন ভাবে বাইলোজ তৈরি করছি যে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দল পরবর্তী রাউন্ডে আসার সময় পরাজিত হওয়া যেকোনো দলের যেকোনো প্রতিভাবান খেলোয়াড়েকে নিজেদের দলে রেজিস্ট্রেশন করাতে পারবে।”
তিনি আরো বলেন,
“আমরা প্রতিভাবান খেলোয়াড়গুলো হারিয়ে না যাক, তারা তৃণমূল থেকে উঠে আসুক। এতে করে টুর্ণামেন্ট যখন সেমি ফাইনাল এবং ফাইনালে গড়াবে তখন আমরা ভালো কিছু প্লেয়ার পেয়ে যেতে পারি।”
দেশের ফুটবল দুর্দশায় কাটাচ্ছে। একজন প্লেয়ার ইঞ্জুরিতে পড়লে কিংবা নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হলে তার বিকল্প খুঁজে পায় না ক্লাবগুলো, সর্বপরি জাতীয় দলও। তাই তৃণমূলে এই টুর্ণামেন্টে আয়োজনের মাধ্যমে ফুটবলে পাইপলাইন শক্ত হবে জানান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“লক্ষ্য করলে দেখবেন আমরা বয়সভিত্তিক দল থেকে যেসকল প্লেয়ার তৈরি করেছি তারা কিন্তু বর্তমানে ভালো করছে। তেমনি এই টুর্ণামেন্ট থেকে যেসব প্লেয়ার উঠে আসবে, আজ থেকে ৫ থেকে ৭ বছর পরে গিয়ে তাদের থেকেও আমরা ভালো রেজাল্ট পাবো। এইজন্য তৃণমূলে এই টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার পরিকল্পনা নিয়েছি।”
টুর্ণামেন্ট আয়োজনের আশ্বাস দিলেও এসব টুর্ণামেন্টে বয়স বিবেচনার কোনো তোয়াক্কাই করে না আয়োজক কর্তৃপক্ষ। এতে একাডেমিগুলো অসাধুতার আশ্রয় নেয়। ভুয়া নাম পরিচয় ব্যবহার করে বয়সে বড় খেলোয়াড়দের দলে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নেয়। এতে সৌন্দর্য হারায় টুর্ণামেন্ট। এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার ক্লাব ফুটবলের এক কর্মকর্তা বলেন,
“একাডেমি কাপকে অবশ্যই স্বাগত জানাই, কিন্তু একটি শঙ্কাও রয়েছে মনে। সঠিক বয়সের খেলোয়াড়রা সুযোগ পাবে কিনা। বেশি বয়সী খেলোয়াড়রা কাগজ জালিয়াতি করে খেললে এই একাডেমি কাপের সুফল দেশের ফুটবল পাবে না।”