বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের আক্রমণভাগে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় কৃষ্ণা রানী সরকার।২০২১ সালের নারী সাফে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করায় বড় অবদান কৃষ্ণার। ৫ ম্যাচে করেছিলেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ গোল। বয়সভিত্তিক দল থেকেই নারী ফুটবলে তারকা হয়ে ওঠেন কৃষ্ণা। কিন্তু ইনজুরিতে লম্বা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। নারী লিগে খেলেছেন ইনজুরি নিয়েই। তবে চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের দলে জায়গা হয়নি তার। এক ফেসবুক পোস্টে নিজের হতাশার কথা তুলে ধরেছেন তিনি।

গত বছরের নভেম্বরে ইনজুরিতে খেলার বাইরে ছিটকে যান কৃষ্ণা। ইনজুরিতে পড়েছিলেন অবশ্য আরো দেড় বছর আগে। অথচ এখনো ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে পারেননি জাতীয় দলের অন্যতম সেরা এই স্ট্রাইকার। ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে না পারার কারণ হিসেবে ফেসবুক পোস্টে কৃষ্ণা লিখেন,

“প্রায় দেড় বছর হয়ে গেছে। পা আগে থেকে ভালো কিন্ত এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়ে উঠতে পারিনি। প্র্যাকটিস করলেই ব্যথা হয়। বাফুফে ফিজিও দিয়ে আমার ট্রিটমেন্ট চলছে। সবাই জানে ইনজুরি টা অনেক রেয়ার। ব্যথা নিয়েই প্র্যাকটিস করতেছি। দেশে অনেক ডাক্তার দেখিয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ফিজিও দেবাশীষ চৌধুরী স্যারকে দেখিয়েছিলাম। উনি প্রায় আমাকে অনেকদিন দেখেন, যখন ব্যথা কমতে ছিল না। স্যার বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া, ইন্ডিয়া গিয়ে ট্রিটমেন্ট করাতে। কিন্তু যখন আমি বাফুফে জানাই, উনারা বলেন আরো কিছুদিন দেশে ডাক্তার দেখাতে। আমি অনেকদিন তাদেরকে ইন্ডিয়াতে যাওয়ার কথা বলছি। কিন্তু উনারা আমার কথায় কোন গুরুত্ব দেয়নি। আজও পর্যন্ত ব্যাথা নিয়ে প্র্যাকটিস করছি।”

ইনজুরি নিয়ে বাফুফের অবহেলায় ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন কৃষ্ণা। পাশাপাশি তার ইনজুরি নিয়ে কারো কোন ভ্রুক্ষেপ নেই বলেও হতাশা প্রকাশ করেন কৃষ্ণা। ফেসবুক পোস্টে তিনি আরো লিখেন,

চায়নাতে যখন এশিয়ান গেম খেলতে যাই, তিনটা ম্যাচ ব্রাঞ্চে বসে কাটিয়েছে। ব্যাক টু ব্যাক দুইটা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে গেলাম। একজন প্লেয়ার হিসেবে এইটা মেনে নেওয়া খুব দুঃখজনক। কষ্ট একটাই কখনো কোন টিমমেট, প্লেয়ার বা কোচ কে বলতে দেখলাম না কৃষ্ণা ইনজুরি তাকে তাড়াতাড়ি ট্রিটমেন্ট করানো হোক। কারো কোন মাথা ব্যথাই নেই। ১০ বছরের পরিশ্রম এক নিমিষে শেষ। অনেক প্লেয়ারকে দেখেছি এভাবে হারিয়ে যেতে। মনে হয় সেই দিনটা আর বেশি দিন নেই কৃষ্ণার জন্য।”

২০১৪ সালে ইসলামাবাদে সাফ চ্যাম্পিয়শিপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অভিষেক হয় কৃষ্ণার। ওই ম্যাচে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করেন। ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে। সেই যে কৃষ্ণার পথচলা শুরু, এরপর টানা প্রায় ১০ বছর জাতীয় দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় হয়ে আছেন। গত ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের আগ পর্যন্ত কখনোই বাদ পড়েননি। তাইতো ফুটবল প্রেমীদের দাবি উন্নত চিকিৎসার জন্য কৃষ্ণাকে দেশের বাইরে পাঠানো হোক। আর না হলে দেশের ফুটবলের একটা মূল্যবান সম্পদ অচিরেই হারিয়ে যাবে!

Previous article১০০ ধাপ পিছিয়ে থেকেও চাইনিজ তাইপের সমীহ পাচ্ছে বাংলাদেশ!
Next articleট্রেবল জয়ী অস্কারের বিদায়!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here