ফুটবল জগতে কট্টর সমর্থকগোষ্ঠী বেশ পুরাতন একটি সংস্কৃতি। ক্লাব ফুটবলে এটি চোখে পড়ার মত একটি বিষয়। রিয়াল মাদ্রিদের যেমন আছে আল্ট্রার্স স্যুর, বার্সেলোনার আছে বইজোস নয়েজ। বুরুশিয়া ডর্টমান্ডের যেমন আছে দ্য ইয়েলো ওয়াল, বায়ার্নের সাচিকেরিয়া। বাংলাদেশের ফুটবলেও এটি নতুন করে প্রবাহিত হচ্ছে। তারই অন্যতম উদাহরণ বাংলাদেশ দলের কট্টর সমর্থকগোষ্ঠী বাংলাদেশী ফুটবল আল্ট্রার্স।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের যেকোনো ম্যাচেই তাদের চোখে কালো বেশভূষায় আচ্ছাদিত এবং চমকদার টিফো হাতে গ্যালারিতে তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ে। তাদের আকাশ কাপানো ধ্বনি তে কেঁপে উঠে পুরো স্টেডিয়াম। তবে সেই আল্ট্রার্সদের সাথে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে বসে স্টেডিয়ামের গেইটের সিকিউরিটি ইনচার্জ। আল্ট্রার্সের এক সদস্যের ভাষ্যমতে তার হাতে থাকা টিফোও প্রদর্শনে বাধা দেওয়া হয়। ফুটবলের ক্ষেত্রে যেখানে চমকদার সব টিফো আল্ট্রার্সদের স্বকীয় প্রতীক প্রদর্শন সেখানে বাংলাদেশী ফুটবল আল্ট্রার্সের টিফোই প্রদর্শন করতে দেওয়া হয় নি। যা ছিলো একেবারে অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনা। ম্যাচের জন্য আল্ট্রার্স তিনটি টিফো বানিয়ে নিয়েছিলো। কিন্তু একটাও টিফোও প্রদর্শন করতে পারে নি, বলা ভালো তাদের করতে দেওয়া হয় নি।

আল্ট্রার্সের ওই সদস্য অফসাইডকে জানান,

“এতোগুলো টাকা খরচ করে তিনটা টিফো করেছি, তার মধ্যে দুইটি টিফো নিয়ে তাদের নিষেধাজ্ঞা ছিলো। যার মধ্যে একটি ছিলো হামজাকে নিয়ে, তার বলেছিলো এটা প্রদর্শন করলে হামজার প্রসেসিংয়ে সমস্যা হবে। অন্যটি ছিলো আমাদের ফুটবলে দুর্নীতি নিয়ে; যার মূল বিষয় শিকলবন্দী ফুটবলকে মুক্ত করার দাবী। বাফুফে মানা করায় আমরা দুইটি টিফো স্টেডিয়ামে নিই নি।”

তিনটি টিফোর মধ্যে একটা টিফো প্রদর্শনে অনুমতি দিয়েছিলো বাফুফে। কিন্তু স্টেডিয়ামে প্রবেশের মুখে ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় আল্ট্রার্স। তাদের সেই একটি টিফোও কেড়ে নেওয়া হয়। এছাড়া তাদের ড্রাম, কাস্টমাইজ পতাকা, বাঁশিও আটকে দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে আল্ট্রার্স সদস্য বলেন,

“তারা বলেছিলো গত জুলাইয়ে যে টিফোটা বানিয়েছিলাম ওইটা প্রদর্শন করতে পারবো। ওইটা প্রদর্শনে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু আমাদের আটকে দেওয়া হয়। আমাদের টিফো কেড়ে নেওয়া হয়। এমনকি আমাদের কাস্টমাইজ পতাকা, বাঁশি, ড্রামও আটকে দেয় তারা।”

এতসব ঘটনার পরও দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে মাঠে প্রবেশ করে আল্ট্রার্সের সদস্যরা। গলা ফাটিয়ে দলের জন্য জয়োধ্বনি দেয়। বাংলাদেশ যখন ম্যাচে পিছিয়েও ছিলো তখনো সমর্থন জোগাতে কার্পণ্য করেনি আল্ট্রার্সে সদস্যরা। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ১-০ গোলে পরাজিত হয়। ম্যাচের আগে থেকেই দলের কোচ হ্যাভিয়ার ক্যাবররার বাজে ট্যাক্টিস, অপেশাদারী সিদ্ধান্ত, প্লেয়ার সিলেকশনে ভুল এবং দলের মধ্যে সিন্ডিকেট এসব নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছিল আস্ট্রার্স

এতো অনুশীলন করার পরও একবছর পরে আন্তজার্তিক ফুটবলে ফিরে আসা মালদ্বীপের কাছে পরাজিত হতে হয়েছে। এতে করে ম্যাচ শেষে খোবে ফেটে পড়ে বাংলাদেশী ফুটবল আল্ট্রার্স টিম। স্টেডিয়ামের বাইরে এসে দুয়োধ্বনি দিতে থাকে। এসময় ভুয়া ভুয়া ভুয়া ধ্বনিতে আল্ট্রার্স ক্ষোভ প্রকাশ করে । পরবর্তীতে বাংলাদেশের টিম বাসের সামনেও দুয়োধ্বনি দিয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ফুটবল আল্ট্রার্স।

Previous articleগোল করতে না পারার আক্ষেপ ক্যাবরেরার!
Next articleছুটির দিনে যেভাবে সংগ্রহ করবেন দ্বিতীয় ম্যাচের টিকেট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here