বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে খেলোয়াড় তৈরির আতুঁড়ঘর হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা বিকেএসপি। তবে খেলোয়াড়দের তথ্য গোপন করায় বিকেএসপিকে ১ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। গত ১০ ডিসেম্বর ডিসিপ্লিনারি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিকেএসপির সিনিয়র ফুটবল কোচ শাহীনুল হক এবং ট্রেনার রবিউল ইসলামকে ফুটবলসংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফে। নাম পরিবর্তনকারী খেলোয়াড়রা নিজ দলের পক্ষে পরবর্তী ছয় ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানানো হয়। আর বিকেএসপিকে ঘরোয়া ফুটবলে ১ বছর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ব্যক্তির অপরাধে কেন প্রতিষ্ঠান শাস্তি পাবে? বাফুফের দেওয়া শাস্তির পরই এ প্রশ্ন উঠেছিল। বিকেএসপি থেকেও বলা হয়েছিল তারা বাফুফের এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আপিল করবে। শেষ পর্যন্ত বিকেএসপি আপিল করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৮ ডিসেম্বর সভায় বসেছিল বাফুফের আপিল কমিটি। চেয়ারম্যান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর সভাপতিতে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় বিকেএসপিকে দেওয়া শাস্তি তুলে নেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া এই বিতর্কিত ঘটনা নিয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেএসপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন। ঘটে যাওয়া ঘটনাকে বিকেএসপি ও বাফুফের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উল্লেখ করে বিকেএসপির মহাপরিচালক বলেছেন, ‘বিকেএসপি ও বাফুফের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ ধরণের ঘটনার সৃষ্টি হয়েছিল। বিকেএসপির আপীলের মাধ্যমে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে।’
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই বিকেএসপির খেলোয়াড়দের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রায়ই তাদের নিয়ে অনিয়ম করার চেষ্টা করে কিছু মহল। যার সবশেষ প্রমাণ এই ঘটনা। তাইতো এবার বিকেএসপির খেলোয়াড়দের আগামীতে বিভিন্ন ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করলে সেখানে আরো সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে জানিয়ে বিকেএসপির প্রধান এই কর্তা বলেছেন, ‘আগামীতে বিকেএসপির খেলোয়াড়রা যাতে আরো স্বচ্ছ্বতা বজায় রেখে ফেডারেশন আয়োজিত প্রতিযোগিতাগুলোয় অংশ নিতে পারে সেদিকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’
বিকেএসপির সিনিয়র ফুটবল কোচ মো. শাহিনুল হকের ওপর আরোপ করা এক বছরের নিষেধাজ্ঞা ও ১ লাখ টাকা জরিমানাও মওকুফ করেছে বাফুফের আপীল কমিটি। তবে বিকেএসপির উপর আরোপ করা শাস্তিসমূহ প্রত্যাহার করে নিলেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের নিজস্ব তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক বলেছেন, ‘উক্ত ঘটনায় আমাদের আভ্যন্তরীন তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমান হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’