বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীদের দারুন আরো একটি আনন্দের উপলক্ষ এনে দিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় নারী ফুটবল দল। নারী অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে গোলাম রাব্বানী ছোটনের দল। সেইসাথে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে নিজেদের সাফল্যের ধারাটাও অব্যাহত রাখলো মরিয়া মান্দা, আঁখি খাতুনরা। ফাইনালে জয়সূচক গোল করে উদযাপনের মধ্যে মনি হয়েছেন ডিফেন্ডার আনাই মোগিনি।
কমলাপুরের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে শুরু থেকেই ভারতের মেয়েদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে বাংলার মেয়েরা। শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণেও এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের জমাট রক্ষণ ভেদ করতে পারছিল না। এরই মধ্যে চতুর্দশ মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় ভারত। মারিয়া মান্ডার দূরপাল্লার শট গোলরক্ষক আংশিকা ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকালেও বল গ্লাভসে নিতে পারেননি। দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে কোনাকুনি শট নেন তহুরা, শটে গতি না থাকলেও বল ছুটছিল জালের দিকে। ছুটে গিয়ে গোললাইনের উপর নির্মলা দেবি বল আটকানোর পর গ্লাভসে নেন আংশিকা। গোলের দাবিতে অনড় বাংলার মেয়েদের শেষ পর্যন্ত অবশ্য গোল পাওয়া হয়নি। ম্যাচের ২৪তম মিনিটে একটুর জন্য গোল পায়নি বাংলাদেশ। থ্রো ইনে সতীর্থের কাছ থেকে ফিরতি পাস পেয়ে উঁচু শট নিয়েছিলেন মগিনি। বল গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্টে লেগে ফিরে। বিরতির আগে অবশ্য অগোছালো ফুটবলই খেলে দুদলের ফুটবলাররা, করতে পারেনি বলার মতো তেমন কোনো আক্রমন।
বিরতি থেকে ফিরেও ভারতের উপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে বাংলাদেশ। ৪৬তম মিনিটে আবারও বাংলাদেশের পথ আগলে দাঁড়ায় দূর্ভাগ্য। আঁখি খাতুনের লম্বা ক্রসে তহুরার ভলি ক্রসবারে লেগে ফিরে। ৫৭তম মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়রের দূরপাল্লার শট যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। একটু পর রিপার ক্রসে শামসুন্নাহার জুনিয়রের হেড উপরের জাল কাঁপায়।
৬৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে লিন্ডা কমের হেড অনেকটা লাফিয়ে উঠে গ্লাভসে নেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। ম্যাচে বাংলাদেশের জালে এমন আক্রমণ খুব সামান্যই করতে পেরেছে ভারত।
অবশেষে ম্যাচের ৮০তম মিনিটে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। কাঙ্ক্ষিত গোলের আনন্দে মেতে ওঠে বাংলাদেশের ডাগআউট ও কমলাপুরের গ্যালারি। রিপার ব্যাক হিলে আনাই মগিনির দূরপাল্লার শট লাফিয়ে ওঠা গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়ায়। বাকিটা সময় এ গোল আগলে রেখেই শিরোপা উৎসবে মেতে ওঠে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১-০ ব্যাবধানে ম্যাচ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আনন্দে ফেটে পড়ে কমলাপুরের গ্যালারি।
এ বছরটা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য খুব একটা ভালো যায়নি। মাত্র কদিন আগেই ছেলেদের সাফে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকেও ফাইনালে পৌঁছাতে পারেনি জামাল ভুঁইয়ারা। তবে বছরের শেষটা ঠিকই ট্রফি দিয়ে রাঙিয়ে দিলো বাঘিনীরা।