সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ফুটবলের সাফল্যের মূলে রয়েছে নারী ফুটবল। এককথায় এই নারী ফুটবলারদের সাফল্যের মাঝেই কোনোভাবে টিকে আছে বাংলাদেশের ফুটবল। তবে নানান প্রতিকূলতা কাটিয়ে নারী ফুটবলারদের উঠে আসার পথটা কখনোই খুব একটা মসৃণ ছিলো না। তারপরও নানান সময়ে বিভিন্ন স্কুলভিত্তিক টুর্নামেন্ট থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভাবান নারী ফুটবলাররা উঠে এসেছে। এছাড়াও নারী ফুটবলার তৈরির অন্যতম পাইপলাইন জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৪ নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট। বাফুফে প্রতিবারই এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করলেও ২০-২৫ জেলা এতে অংশ নেয় না। মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে ৪০ জেলা। গত আসরে নিয়েছিল ৪২ দল। দুই দল কম নিয়ে হচ্ছে এবারের আসর।
সংখ্যার দিক থেকে বিবেচনা করলে ‘৪০‘ অনেক বড় একটি সংখ্যা। ৪০ টি দল থেকে নিঃসন্দেহে অনেক প্রতিভাবান নারী ফুটবলার খুঁজে পাওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে যদি দেশের সবগুলো জেলা অর্থাৎ ‘৬৪’ টি জেলার দলগুলো অংশ নিতো তাহলে নিশ্চয়ই প্রতিভাবান ফুটবলার খুঁজে পাওয়ার তালিকাটা আরো বড় হতো। তবে নানান অজুহাতে টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া থেকে নিজেদের বিরত রেখেছ জেলা দলগুলো। তাদের টুর্নামেন্টে অংশ না নেওয়ার পেছনে করোনাকে বড় কারন হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু দেশ থেকে সরকারের করোনার বিধি নিষেধ উঠে গেছে। এরপরও অনেক জেলা করোনার অজুহাত দেখিয়ে আসছে না এই টুর্নামেন্টে। এ বিষয়টা বেশ হতাশ করেছে বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকে। সোমবার সোমবার বাফুফে ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেন, ‘আমরা সকল জেলাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। করোনা ও আরো সীমাবদ্ধতার জন্য অনেক জেলা অংশগ্রহণ করতে পারছে না।’
মাদারীপুর,কুস্টিয়া, দিনাজপুর, রাজশাহী, শেরপুর, কক্সবাজার, সাতক্ষীরা এই সাত জেলায় প্রাথমিক পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক পর্বের সাত চ্যাম্পিয়ন ও সেরা রানার্স আপ চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। বিগত আসরগুলোর চূড়ান্ত পর্ব ঢাকায় হলেও এই বার মাঠ স্বল্পতার জন্য চূড়ান্ত পর্ব রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ মার্চ টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্ব শুরু হবে। প্রাথমিক পর্ব নক আউট হওয়ায় অনেক মেধাবী ফুটবলার এক ম্যাচ খেলেই বিদায় নেবে। এই প্রসঙ্গে বাফুফের মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যানের মন্তব্য, ‘আমরা চূড়ান্ত পর্ব কিন্তু গ্রুপ ভিত্তিক করি। প্রাথমিক পর্বও গ্রুপ ভিত্তিক হলে ভালো কিন্তু এতে বেশি দিন লাগবে ও খরচও বাড়বে। ফলে আমরা নক আউট করি। এখান থেকে ভালো ফুটবলাররা সরাসরি একেবারে জাতীয় ক্যাম্পে সুযোগ পায় না। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর আবার কিছু দিন ক্যাম্প করে চূড়ান্ত বাছাই করে জাতীয় দলে সুযোগ দেয়া হয়।’
তবে বাফুফেকেও সীমিত সুযোগের মধ্যে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হচ্ছে। কেননা গত আসরের স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এবার স্পন্সর করছে না। তারপরও টুর্নামেন্ট আপন গতিতেই চলবে বলে জানান বাফুফে নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, ‘ওয়ালটন প্রতি বার এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে থাকে। তাদের অন্য ফেডারেশনে এই মুহূর্তে ব্যস্ততা থাকায় এবার থাকতে পারেনি। আবার জাপান ফুটবল এসোসিয়েশনেরও একটা ডেডলাইন রয়েছে। ফলে জেএফএ’র অর্থ দিয়েই টুর্নামেন্ট চালাতে হচ্ছে।’