করোনা মহামারীতে দেশের ফুটবল স্থবির হয়ে আছে অনেকদিন যাবত। লীগ পরিত্যক্ত হওয়ায় মাঠের বাহিরে ফুটবলাররা। মাঠ থেকে দূরে থাকলে সবচেয়ে বড় যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় ফুটবলারদের তা হলো ফিটনেস ধরে রাখা। সমর্থকদের মনে একটাই প্রশ্ন, মাঠে নামার পূর্বে ফিট থাকবেন তো ফুটবলাররা?

ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পরবর্তী চার ম্যাচে সম্ভাব্য সময় জানা গিয়েছে। ফলে আগস্টের শুরুতেই ক্যাম্প চালু করতে যাচ্ছে বাফুফে। ক্যাম্পে যোগ দেয়ার আগে ফুটবলারদের ফিটনেস কতটুকু ভালো পর্যায়ে থাকবে তাই এখন চিন্তার বিষয়। তবে ফুটবলাররা এখন ফিটনেসের বিষয়ে নিজেই সচেতন। নানা ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের ফিট রাখতে।

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে প্রায় নিয়মিতই কক্সবাজারের চার তারকা তৌহিদুল আলম সবুজ, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সুশান্ত ত্রিপুরা ও আনিসুর রহমান জিকো।। এই পরিস্থিতিতেও নিজেদের ফিট রাখতে পরিশ্রম করে গিয়েছেন সাগর পাড়ের এই ফুটবলাররা। মাঠে ফিরতে মুখিয়ে থাকা ফরোয়ার্ড তৌহিদুল আলম সবুজ অফসাইডকে জানান, ‘করোনা পরিস্থিতির শুরুর দিকে আমাদের এলাকায় লকডাউন ছিলো। তখন বাহিরে বের হতে পারি নি। বাসার ছাদেই প্রাকটিস করেছি, রানিং করেছি। গত দুই মাস আবার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক আমাদের এখানে। বাসার পাশেই মাঠ, সেখানে প্রতিদিন বিকালে প্র্যাকটিস করি ঢাকার বিভিন্ন লিগে খেলা খেলোয়াড়দের নিয়ে। সবাই আমরা একই এলাকার। ভালই কাটছে ট্রেনিং সেশন গুলো। মাঠে ফেরার জন্য মুখিয়ে আছি।’

কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় বাস করা ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা মনে করেন ক্যাম্পে যোগ দেয়ার পর আসলে বুঝতে পারবেন ফিটনেস কোন পর্যায়ে রয়েছে। তিনি অফসাইডকে বলেন, ‘প্রতিদিন অনুশীলন করতে তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না।আমি মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হসপিটালের আবাসিক এলাকায় থাকি, এখানে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক বললেই চলে। ব্যক্তিগত অনুশীলনের মধ্যে থাকায় আশা করি ফিটনেসের তেমন একটা সমস্যা হবে না। অবশ্যই মাঠে নামতে উন্মুখ হয়ে আছি। ক্যাম্প শুরুর কিছুদিন পর জানা যাবে আমার ফিটনেস আসলে কোন পর্যায়ে রয়েছে।’

উইঙ্গার মোহাম্মদ ইব্রাহীম জাতীয় দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেয়া ড্রিলগুলো নিয়মিত চর্চার করেই নিজেকে ফিট রাখতে চেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি অফসাইডকে জানান, ‘জাতীয় দলের কোচ হোয়াটসঅ্যাপে যে ট্রেনিং গুলো পাঠায় সে গুলোই নিয়মিত রুটিন করে করেছি। আমি শতভাগ প্রস্তুত মাঠে ফেরার জন্য। আমি সব সময় ফিট থাকতে চেষ্টা করি এবং ইনসাল্লাহ ফিটনেস নিয়ে কোন সমস্যা হবে না।’

এই ঘরবন্দি জীবনে যে শতভাগ ফিট থাকা সম্ভব নয় সে বাস্তবার কথাই জানালেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। তিনি অফসাইডকে জানান, ‘আসলে করোনার কারনে ঘরবন্দি থেকে ফিটনেস আগের মত শতভাগ ধরে রাখা সম্ভব নয়। আমাদের কোচিং স্টাফরা আমাদের যে ট্রেনিং সিডিউল দিয়েছেন সে মোতাবেক কাজ করছি। এর মাধ্যমে ৬০-৭০ ভাগ ফিটনেস ধরে রাখতে পারবো বলে আমি আশা করি। তবে ক্যাম্প শুরু হলে কিছু ম্যাচ প্র্যাকটিস করতে পারলেই শতভাগ ফিটনেস ফিরে পাবো ইনসাল্লাহ। মাঠে ফেরার জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছি।’

এখন পর্যন্ত বাছাই পর্বের বাংলাদেশের অবস্থা সুবিধাজনক নয়। আফগানিস্তানের সাথে হার দিয়ে শুরু পর ঢাকায় কাতারের সঙ্গে লড়াই করেও ২-০ ব্যবধানে হারের স্বাদ পায় জামাল বাহিনী। কলকাতার ভারতের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেও শেষ দিকে গোল হজম করে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে ফিরে বাংলাদেশ দল। করোনা মহামারীতে খেলা বন্ধ হওয়ার পূর্বে শেষ ম্যাচে ওমানের সঙ্গে ৪-১ ব্যবধানে হার। চার ম্যাচে শেষে মাত্র একটি পয়েন্ট অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এএফসি ও ফিফার প্রস্তাবিত নতুন শিডিউলে অক্টোবরের ৮, নভেম্বরের ১২ ও ১৭ তারিখে বাংলাদেশের তিনটি হোম ম্যাচ যথাক্রমে আফগানিস্তান, ভারত ও ওমানের সঙ্গে। অ্যাওয়ে ম্যাচ বাংলাদেশ খেলবে কাতারে ১৩ অক্টোবর। হোম ম্যাচগুলো থেকে পয়েন্ট পাওয়ার আশাই করছেন কক্সবাজারের এই চার ফুটবলার। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের মতো মাঠেও নিজেদের আধিপত্য দেখাতে পারবেন তারা এমনটাই প্রত্যাশা সমর্থকদেরও।

Previous articleসাফের সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজ
Next articleযথা সময়ে লীগ শুরুর আহ্বান ফুটবলারদের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here