স্বাধীনতা কাপে নিজেদের চমক অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আগের ম্যাচে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে চমক দেওয়ার পর স্বাধীনতা কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে সার্ভিসেস দলটি। দুই দলের এই ড্র’য়ে সি গ্রুপ শেষ আট নিশ্চিত সাইফের, তবে অপেক্ষায় এখনো সেনাবাহিনী ও মোহামেডান।
সোমবার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই এগিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা। দিদারুল আলমের ফ্রি-কিক বক্সের মধ্যে তারেক মিয়ার হেড থেকে বল পান গিনির ডিফেন্ডার কামারা, তার জোরাল শট ক্রস বারে লেগে ফিরে এলেও মিশরীয় ফরোয়ার্ড আহমেদ আইমানের পায়ে আচমকা লেগে বল জালে জড়ায়। ২২তম মিনিটে বা দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো লম্বা পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন রঞ্জু শিকদার কিন্তু তার জোরাল শট লক্ষ্যে ছিল না। ৩৩তম মিনিটে জাপানিজ তেতসুয়াকি মিসাওয়ার দূর পাল্লার শট ক্রস বারে লেগে ফিরে এলে ব্যবধান বাড়েনি মুক্তিযোদ্ধার। দ্বিতীয় দফায় সুযোগ পেয়েছিলেন ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ রোমান কিন্তু তার দুর্বল শট পরাস্ত করতে পারেনি সেনাবাহিনীর গোলরক্ষক আলমগীর হোসেনকে। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র।
বিরতি থেকে ফিরে গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে সেনাবাহিনী। তবে সমান আক্রমন চালায় মুক্তিযোদ্ধাও। ৬০তম মিনিটে বা দিক থেকে আক্রমণে উঠেন জাপানিজ তেতসুয়ায়কি মিসাওয়া, সেনাবাহিনীর দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার বা পায়ের বাঁকানো শট গোলমুখ থেকে হেডে ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডার ইব্রাহিম খলিল। ৬৪তম মিনিটে ইব্রাহিম খলিলের লম্বা ক্রস মুক্তিযোদ্ধার কামারার মাথা ছুঁয়ে বল পান রঞ্জু শিকদার, বুক দিয়ে নামে তার ডান পায়ের জোরাল শট রুখে দেন গোলরক্ষক রাজিব। ৬৬তম মিনিটে আবারো আক্রমণে উঠে সেনাবাহিনী। বা প্রান্তে দিদারুল ও রঞ্জু শিকদার বল দেয়া নেয়া করে বাড়িয়ে দেন শাহরিয়ার ইমনের উদ্দেশ্যে, কিন্তু তার শট ফাকি দিতে পারেনি মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক রাজিবকে। ৭২তম মিনিটে বা প্রান্ত থেকে রোমানের হাওয়ায় ভাসানো ক্রস বক্সের মধ্যে আহমেদ সালসাদিনের হেড সাইড বারে লেগে বাইরে চলে যায়। ৭৪ মিনিটে পেনাল্টি মিস করে মুক্তিযোদ্ধাকে এগিয়ে নিতে পারেননি জাপানিজ তেতসুয়াকি। এর আগে বক্সের মধ্যে সেনাবাহিনীর মাহবুব আলম মুক্তিযোদ্ধার আরেক জাপানি সোমাকে পিছন থেকে ফাউল করায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি মিজানুর রহমান। ৮০তম মিনিটে ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি জাতীয় দলের ডিফেন্ডার মেহেদি হাসান। তবে ৮৮ মিনিটে আর হতাশ করেনি সেনাবাহিনী। রঞ্জু সিকদারের হাওয়ায় ভাসানো বাঁকানো ক্রস বক্স থেকে দারুণ ভাবে মাথা লাগিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন শামিমুল হক।
৯০তম মিনিটে দশ জনের দলে পরিণত হয় সেনাবাহিনী। সোমা ওতাঞ্জকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন মাঠ ছাড়েন মাহাবুব আলম। তবে এতে বড় কোন বিপদে পড়তে হয়নি সেনাবাহিনীকে।
সি গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে এখন লড়ছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এই ম্যাচের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে সি গ্রুপ থেকে বাকি দল হিসেবে কারা শেষ আটে যাচ্ছে। তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে সাইফ-মোহামেডান ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে সেনাবাহিনীকে। সাইফ জিতলে বাদ পড়বে মোহামেডান তবে সাদা-কালোরা জিতলে নিশ্চিত হবে তাদের শেষ আট। ইতোমধ্যেই শেষ আটে পৌঁছে গিয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।