স্বাধীনতা কাপে গ্রুপ ‘সি’-এ টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। পাশাপাশি নতুন আর্জেন্টাইন কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির হাত ধরে টানা দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল সাইফ স্পোর্টিং। এই জয়ে স্বাধীনতা কাপের শেষ আটের পথে এগিয়ে গেল সাইফ।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপের সি গ্রুপের ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে শুরুটা ঢিলে ঢালা হলেও সময়ের ব্যবধানে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আন্দ্রেস ক্রসিয়ানির দল। আক্রমণভাগের দায়িত্বে থাকা দুই নাইজেরিয়ান এমফন ওদোহ ও এমেকা উগবুগের সাথে উজ্জ্বল ছিলেন তরুণ ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিমও।
ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে জামালের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে ডান দিকে আক্রমণে ওঠেন জাপানিজ তেতসুয়াকি মিসাওয়া, সেখান থেকে তাঁর ডান পায়ের ক্রস বক্সের মধ্যে থেকে হেড করেন আহমেদ শালসাদিন কিন্তু লক্ষ্যে ছিলো না এই মিশরীয় ফরোয়ার্ডের হেড। ১৬তম মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি সাইফের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা।বক্সের সামনে থেকে আরেক নাইজেরিয়ান এমফন সানডের থ্রু বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শট নিলে আটকে দেয়ার পর ফিরতি বলে আবারো শট নিলে ঝাপিয়ে রক্ষা করেন মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক রাজিব। দুই মিনিট বাদেই ম্যাচে এগিয়ে যায় সাইফ স্পোর্টিং। এমফনের পাস ধরে বক্সের বাইরে থেকে প্লেসিং শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।
২৪তম মিনিটে সাইফের ডিফেন্ডারদের ভুলে বল পেয়ে যান তেতসুয়াকি মিসাওয়া, তিনি বল ঠেলে দেন মিশরীয় আহমেদ শালসাদিনের দিকে। বক্সের খানিকটা বাইরে থেকে দেখে শুনে সময় নিয়ে শট নিলেও গোলরক্ষক মিতুলকে পরাস্ত করতে পারেননি। ৩২তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে এমেকার দূরপাল্লার কোনাকুনি শট রুখে দেন মুক্তিযোদ্ধার গোলরক্ষক রাজিব। ৩৭তম মিনিটে এমফনের পাসে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ফাহিমের শট ক্রস বার ঘেষে বাইরে চলে যায়। এরপর ৪০তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় সাইফ স্পোর্টিং। এমেকার সাথে দেওয়া নেওয়া করে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ডিফেন্ডার নাসিরুল ইসলাম। প্রথমার্ধের বিরতিতে যাওয়ার আগে জামালের ব্যাকপাস গোলরক্ষক মিতুল হাত দিয়ে ধরায় ইনডাইরেক্ট ফ্রিকিক পায় মুক্তিযোদ্ধা। ছোট ডি’র সামনে থেকে আইমেদ শালসাদিনের শট আটকে দেয় সাইফের রক্ষণভাগ। ফলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় জামাল ভুঁইয়ারা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এমফনের বুলেট গতির শট ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। ৬৬তম মিনিটে গোল লাইন ক্লিয়ারেন্স করে সাইফকে গোল বঞ্চিত করেন মুক্তিযোদ্ধার অধিনায়ক কামারা। ৭৬তম মিনিটে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে ফাউল করে সারাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মুক্তিযোদ্ধার ডিফেন্ডার সাজন মিয়া। ম্যাচের ৮১তম মিনিটে আসরোর গফুরভের কাট ব্যাকে সাজ্জাদ হোসেনের প্লেসিং শটে ব্যবধান ৩-০ করে সাইফ স্পোর্টিং।
এরপর শেষ সময়ে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধার ঝড়।ম্যাচের ৮৫তম মিনিটে বক্সের ভেতরের জটলা থেকে জাপানি ফরোয়ার্ড তেতসুয়াকি মিসুয় লক্ষ্যভেদ করে ব্যাবধান ৩-১ করেন। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে নাসিরুল ইসলামের ফাউল থেকে পাওয়া পেনাল্টি কাজে লাগিয়ে ব্যবধান ৩-২ করে ম্যাচ জমিয়ে দেন জাপানি ফরোয়ার্ড তেতসুয়াকি মিসুয়া। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেদের রক্ষণ আগলে রেখে ঠিকই ৩-২ গোলের জয় নিশ্চিত করে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।
দুই ম্যাচে দুই জয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে স্বাধীনতা কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে সাইফ। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সেনাবাহিনীর বিপক্ষে ঢাকা মোহামেডানের জয় সাইফ এবং মোহামেডান দুইদলকেই পৌঁছে দেবে শেষ আটে এবং মোহামেডানের জয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিবে মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীকে।