আরেফিন জিসান: দেখতে দেখতে শেষ হয়ে আসলো সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের লিগ পর্বের খেলা। শেষ ম্যাচ ডে’র দুটো খেলাই পরিণত হয়েছে অলিখিত সেমিফাইনালে। আজ ফাইনালে উঠার মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল। অফসাইডের সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের নিয়মিত আয়োজন ‘রাইভাল ওয়াচ’ আজ থাকছে নেপালকে নিয়ে আলোচনা।
নেপাল ফাইনাল থেকে আর মাত্র এক পয়েন্ট দূরে দাঁড়িয়ে নেপাল, যারা এর আগে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে উঠতেই পারে নি। সেই হিসেবে ঐতিহাসিক এক উপলক্ষ্যের সামনে দাঁড়িয়ে তারা। সাফে নেপাল ৫ বার সেমিফাইনাল খেলেছে যার সর্বশেষ ৩ বার বাংলাদেশকে হারিয়ে যথাক্রমে ২০১১,২০১৩ ও ২০১৮ সালে।
কুয়েতি কোচ আবদুল্লাহ আল মুতাইরির আক্রমণাত্মক ফুটবল ও দারুণ ট্যাকটিক্যাল কাজেরই সুফল পাচ্ছে নেপাল। যদিও আশ্চর্যজনকভাবে ভারতের বিপক্ষে একটু বেশীই ডিফেন্সিভ ছিলো। ভারত সহজ কিছু সুযোগ না হারালে ব্যবধান আরো বড় হতে পারতো। ইরাক কিংবা ওমানের বিপক্ষে অনেক গোল হজম করলেও সর্বদা এটাকিং ফুটবলটাই খেলার চেষ্টা করেছেন কোচ।
হতে পারে ইতিহাস গড়বার দ্বারপ্রান্তে খেই হারিয়েছে নেপালের এই কোচ। এটা বাংলাদেশের ম্যাচ পর্যন্ত থাকলে আমাদের জন্যেই ভালো। মুতারির মূলত মিডফিল্ড ওভারল্যাপ করে উইং নির্ভর খেলা পছন্দ করে। ৩-৫-২ ফরমেশনে ব্যাক লাইন থেকেই মিডফিল্ডে থাকা খেলোয়াড়দের বুদ্ধিদীপ্ত পজিশনিং অনুযায়ী পাস যায়। মিডফিল্ড কখনো ফ্ল্যাট থাকে না,তারা খুব দ্রুত উঠা নামা করে এবং যার কাছে পাস যায় তাকে ঘিরেই ট্রাইঙ্গেল তৈরি করে পাসিংয়ের জন্যে। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা এইরকম ফরমেশনে যাবে না, যা শ্রীলঙ্কা ছাড়াও মালদ্বীপের ম্যাচে কিছু সময়ের জন্য এবং ভারতের বিপক্ষে গোল হজমের পর দেখা গিয়েছে। যেহেতু জিতবার বাধ্যবাধকতা নেই তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে কমপেক্ট ৪-৪-২ তে দেখা যেতে পারে নেপালিদের। তাদের যেখানে মিডফিল্ড অনেক নিচে থাকবেই ডিফেন্সিভ প্রেসে এবং যেকোনো একজন ফরোয়ার্ড প্রয়োজন মতো নিচে নেমে আসবে। বিল্ডয়াপ বা কাউন্টার এট্যাক যাই হোক তাদের ব্যক্তি এবং দলগত দুইভাবেই সামর্থ্য আছে আমাদের প্রেসিংয়ের বিপক্ষে নিচ থেকে ঠান্ডা মাথায় বল বের করে এনে দ্রুত উইংয়ে ক্যালকুলেট করা। আমাদের উইং ব্যাক যেনো এক বনাম দুই পরিস্থিতিতে না পড়ে সেইদিকে উইং ও মিডফিল্ডারদের নজর রাখতে হবে।
মনিশ ডাঙ্গি, অঞ্জন বিস্টা, সুজান শ্রেষ্ঠা, আয়ুশ গালান, সুমন লামা উইঙ্গার প্রত্যেকেই দারুণ। সাথে উইং ব্যাক হিসেবে সুমন আড়িয়াল এবং গৌতম শ্রেষ্ঠা। তবে এই দুইজনের ট্যাকটিক্যাল কিছু সীমাবদ্ধতা আছে যা থেকে বিশেষত আমাদের রাকিবের মতো উইঙ্গার সুবিধা নিতে পারে।
যেকোনো ফল হতে পারে আজ। আরেকটি দিন আসছে আমাদের ফরোয়ার্ডদের থেকে গোল পাওয়ার দাবি নিয়ে। ১৬ বছর পর সাফে ফাইনালে খেলার সুযোগ বাংলাদেশের। সমীকরণ পরিষ্কার, যেকোনো ব্যবধানে জয়। কোনো চাপ তো নয়ই বরং এই রকম অনুপ্রেরণা হতে পারে না, জিতলেই এক প্রজন্ম পর সাফের ফাইনাল।
নেপালের সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের ফলঃ
- ০-১ ভারত
- ৩-২ শ্রীলঙ্কা
- ১-০ মালদ্বীপ
- ২-৭ ওমান
- ১-২ ভারত
বাংলাদেশের বিপক্ষে নেপালের সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের ফলঃ
- ২-১ বাংলাদেশ (২০২১)
- ০-০ বাংলাদেশ (২০২১)
- ০-০ বাংলাদেশ (২০২০)
- ০-২ বাংলাদেশ (২০২০)
- ২-০ বাংলাদেশ (২০১৮)