সাঈদ ইবনে সামস: অনেকের মতে দেশের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার ইমন মাহমুদ বাবু। ২০০৯ সালে জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকেই নিয়মিত ভালো খেলা প্রদর্শন করে আসছেন তিনি৷ তার ক্যারিয়ারটা নাহয় শুরু থেকেই দেখা যাক।
ইমন মাহমুদের ফুটবলে আগমণটা আন্তঃস্কুল চ্যাম্পিয়নশীপে নিজের স্কুলের হয়ে। সেখান থেকেই নিজের প্রতিভার ঝলক দেখাতে থাকেন তিনি। স্কুল দলের কোচের কথায় ঢাকায় চলে আসেন জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৪ দলের ট্রায়াল দিতে। দলের নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি হয়ে যান দলের অধিনায়কও। এরপর খেলেছেন আরো কিছু বয়সভিত্তিক দলে।
পেশাদার লীগের দল শেখ রাসেল কেসি’তে তার অভিষেক ২০০৯ সালে। সেবার শেখ রাসেলের হয়ে সুপার কাপে ম্যাচ খেলেছিলেন ইমন। সেখান থেকে নজরে আসেন তৎকালীন জাতীয় দলের ব্রাজিলিয়ান কোচ ডিডোর৷ এতেই তার ডাক পড়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে। সেই বছরই কম্বোডিয়ার বিপক্ষে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় ইমন মাহমুদের। ম্যাচটিতে তার নেয়া কর্নার থেকে একটি গোল পায় বাংলাদেশ।
এরপরে আসে একটি কঠিন সময়। প্রায় দুই বছর ইনজুরির কারনে শেখ রাসেলে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি ইমন মাহমুদ। ২০১৩ সালে দলবদল করে যোগ দেন ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে৷ সাদা-কালো জার্সিতে নিজেকে নতুন করে চেনান তিনি। সেই বছর দলের স্বাধীনতা কাপ জয়ের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। অসাধারণ ফুটবল নৈপুণ্যের কারণে নজরে আসেন মোহামেডানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের কর্তাদের। ফলে ২০১৪ সালে দল পাল্টে যোগ দেন দেশের ইতিহাসের অন্যতম সফল দল ঢাকা আবাহনী লিমিটেডে। আস্তে আস্তে হয়ে উঠেন আবাহনীর মধ্যমাঠের কান্ডারী। আবাহনীর হয়ে দুইটি লীগ ও দুইটি ফেডারেশন কাপ জেতেন তিনি।
আবাহনীর হয়ে টানা দুবার লীগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০১৮ সালে বাংলাদেশী ফুটবলাদের মধ্যে সেই সময়ের রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে যোগ দেন মৌসুমে নবাগত জায়ান্ট বসুন্ধরা কিংসে। বসুন্ধরার হয়ে প্রথম মৌসুমেই জিতে নেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ও স্বাধীনতা কাপ।
যে কোন দলের জন্য ইমন মাহমুদের মতো খেলোয়াড় গুরুত্বপূর্ণ। মধ্যমাঠ থেকে অসাধারণ ফাইনাল পাস এবং থ্রু পাস দিয়ে থাকেন তিনি। মধ্যমাঠ নিয়ন্ত্রণ করার মত ভালো ক্ষমতা রয়েছে এই ফুটবলারের। । এছাড়াও ড্রিবিলিং এবিলিটির জন্যও তিনি প্রশংসিত। ডিফেন্সিভ মিড থেকে আক্রমনভাগ এবং রক্ষনভাগকে ভালো সাহায্য দিতে পারেন ইমন। তবে তার সবচেয়ে বড় গুন হচ্ছে ম্যাচ পড়ার ক্ষমতা যাকে আমরা ম্যাচ রিডিং বলে থাকি। ম্যাচের যেকোন সময় ও পরিস্থিতিতে তিনি দ্রুতই সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেন যা তার ও তার দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়ায়। বর্তমান সময়ে জাতীয় দলে জায়গা হারালেও তার ভক্তদের বিশ্বাস দ্রুই আবার নিজের জায়গায় ফিরবেন এই মধ্যমাঠের তারকা।
আজ ৩ জুন ২০২০ সালে ২৯ বছরে পা দিয়েছেন ইমন মাহমুদ বাবু। মাইলসের সেই গানটির মতোই আমাদের শুভকামনা তার জন্য, ‘তুমি এই দিনে পৃথিবীতে এসেছো, শুভেচ্ছা তোমায়। তাই অনাগত ক্ষণ হোক আরো সুন্দর, উজ্জ্বল দিন কামনায়।’
শুভ জন্মদিন ইমন মাহমুদ।