২০১২-১৩ ফুটবল মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘ট্রেবল‘ জিতে হইচই ফেলে দিয়েছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। এরপর থেকে আর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেনি ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। সর্বশেষ লিগেও ৭ম স্থানে থেকে শেষ করেছে শেখ রাসেল। তাইতো নতুন মৌসুমে আগের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলার লক্ষ্যে নতুন করে দল গুছিয়েছে ক্লাবটি।
এরই মধ্যে গত মৌসুমে শেখ রাসেলের হয়ে বিদেশি কোটায় খেলা নাইজেরিয়ান অবি মনেকে, ব্রাজিলিয়ান জিয়ান কার্লো রদ্রিগেজ, তাজিকিস্তানের সিউবুস আসরোরভ ও কিরগিজ বখতিয়ার দুশভেকোভকে ছেড়ে দিয়ে তাদের জায়গায় ২ ব্রাজিলিয়ান থিয়াগো আমারাল, এইলটন মাক্যাডোর সাথে গিনি বিসাউয়ের ঈসমাইল রুটি এবং এশিয়ান কোটায় কিরগিজ ডিফেন্ডার আয়জার আকমাতভকে নতুন মৌসুমের জন্য দলে ভিড়িয়েছে শেখ রাসেল ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
৩০ বছর বয়সী গিনি বিসাউ ফরোয়ার্ড ঈসমাইল রুটি ‘ঈসমা‘ নামেই অধিক পরিচিত। ফ্রান্সের বিখ্যাত ক্লাব ওজিসি নিসের যুব ও মূল দলে খেলা ঈসমা সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছিলেন ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ক্লাব চেন্নাইয়ান এফসিতে। এছাড়াও পর্তুগাল, সাইপ্রাস, গ্রিস, স্কটল্যান্ড, ইরান, জাপান, উজবেকিস্তানের শীর্ষ লিগের ক্লাবে খেলারও অভিজ্ঞতা রয়েছে এই ফরোয়ার্ডের। আন্তর্জাতিক ফুটবলে পর্তুগাল অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে ৩টি ম্যাচ খেলেছেন ঈসমা। এছাড়াও গিনির হয়ে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ৬ ফুট উচ্চতার দীর্ঘদেহী এই ফরোয়ার্ড। ঈসমাকে নিয়েই হয়তো প্রতিপক্ষের রক্ষণকে বিপদে ফেলার পরিকল্পনা আটবেন শেখ রাসেল কোচ সাইফুল বারী টিটু।
তবে শেখ রাসেলের আক্রমনকে আরো গতিশীল ও শক্তিশালী করতে ঈসমার সাথে যুক্ত হচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড এইলটন মাক্যাডো। ২৭ বছর বয়সী মাক্যাডোর ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় ব্রাজিলের বিখ্যাত ক্লাব সাও পাওলোর যুব দল থেকে। এরপর সাও পাওলো এবং সান্তোস এর বি দলে সুযোগ পান মাক্যাডো। খেলেছেন ব্রাজিলের বেশ কিছু ক্লাবে। ২০১৮ সাল থেকেই এশিয়াতে রয়েছেন মাক্যাডো। সৌদি আরবের ক্লাব আল মোহজেল এবং ওমানের ওমান ক্লাব হয়ে সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছিলেন থাইল্যান্ডের ক্লাব মুয়াংকান ইউনাইটেডে।
দুই ফরোয়ার্ড ঈসমা এবং মাক্যাডোকে পেছন থেকে বলের যোগান দিতে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে ব্রাজিলিয়ান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার থিয়াগো আমারালকে। ২৯ বছর বয়সী থিয়াগো আমারালের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ব্রাজিলের বিখ্যাত ক্লাব গ্রেমিওর অনূর্ধ্ব-২০ দল থেকে। ব্রাজিল ছাড়াও আমারাল খেলেছেন বসনিয়া হার্জগোবিনা, ওমান, মিশর ও লেবাননের শীর্ষ লিগের ক্লাবে। সবশেষ মৌসুমে আমারাল খেলেছিলেন ইন্দোনেশিয়ান ক্লাব পেরিসপুরাতে। ঈসমা, মাক্যাডো ও আমারালকে দিয়ে মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।
রক্ষণে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের আস্থা যোগাবেন কিরগিজ ডিফেন্ডার আয়জার আকমাতভ। এশিয়ান কোটায় কিরগিজস্তান জাতীয় দলে খেলা এই ডিফেন্ডারকে দলে নিয়েছে ক্লাবটি। ২৩ বছর বয়সী এই কিরগিজ ডিফেন্ডার খেলেছেন কিরগিজস্তানের ক্লাব আলা নারিন, আলগা বিশবেক ও দরদই বিশকেকে। দরদই বিশকেকের হয়ে সর্বশেষ এএফসি কাপে ২টি ম্যাচ খেলছেন ডিফেন্ডার।
নতুন চার বিদেশীকে নিয়ে কতদূর যাবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র? পারবে তো তাদের দীর্ঘ শিরোপা খরা ঘুচাতে? নতুন মৌসুমে মাঠের খেলায়ই মিলবে সকল প্রশ্নের উত্তর।