স্বাধীনতা কাপে চমক অব্যাহত রেখেছে আমন্ত্রিত সার্ভিসেস দলগুলো। গতকাল চট্টগ্রাম আবাহনীর সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আরেক সার্ভিসেস দল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তো ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডানকে হারিয়েই দিয়েছিল। এবারের স্বাধীনতা কাপে খেলা আরেক সার্ভিসেস দল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীও ছুটছিল জয়ের দিকেই। তবে ৮৩ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত উত্তর বারিধারার বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বিমানবাহিনীকে।

রোববার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা কাপে বি গ্রুপের ম্যাচে আক্রমন পাল্টা আক্রমনে জমে ওঠে ম্যাচ। ম্যাচের ৮ম মিনিটে মারুফ আহমেদের ডান পায়ের ভলি বা দিকে ঝাপিয়ে কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বিমানবাহিনীর গোলরক্ষক মজনু মিয়া। ১৯তম মিনিটে আসাদুল ইসলামের নিচু পাসে গোল মুখের সামনে থেকে পা বাড়িয়েও নাগাল পাননি উত্তর বারিধারার ফরোয়ার্ড আলি আকবর। ২৪তম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল বিমানবাহিনীও। ডান দিক থেকে সতীর্থের ক্রস বক্সের মধ্যে জুয়েল মিয়া প্রথম দফায় বল নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারলেও দ্বিতীয় দফায় পা দিয়ে টোকা দিলে গোলরক্ষক আজাদ এগিয়ে এসে রুখে দেন। ৩২তম মিনিটে সহজ সুযোগ মিস করলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি বারিধারার। গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি বারিধারার অধিনায়ক সামিন ইয়াসির। ৩৬তম মিনিটে বারিধারার উজবেক মিডফিল্ডার কচনেভের ফ্রিকিক সাইড বার ঘেষে বাইরে চলে যায়। তাই প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দল।

বিরতি থেকে ফিরেই এগিয়ে যায় বিমানবাহিনী। ম্যাচের ৫০তম মিনিটে নিজামউদ্দিন রাজুর ফ্রিকিক বক্সের মধ্যে বারিধারার এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলেও তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুর্দান্ত ভাবে লক্ষ্যভেদ করেন বিমানবাহিনীর মিডফিল্ডার জুয়েল মিয়া। এরপর থেকে গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে উত্তর বারিধারা। বিমানবাহিনীর রক্ষণে উপর্যপরি বেশ কয়েকবার আক্রমণ চালায় উত্তর বারিধারা। ৭৬তম মিনিটে ডি বক্সের সামনে থেকে নেওয়া কচনেভের ফ্রি কিক ফিরে আসে ক্রস বারে লেগে। তবে ৮৩ তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান এই কচনেভই। বা দিকে রাশেদ বিপ্লবের শট বক্সের মধ্যে বিমানবাহিনীর ডিফেন্ডার হাফিজুর রহমানের হাতে লাগলে সাথেসাথেই পেনাল্টির বাশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিকে বারিধারাকে সমতায় ফেরান উজবেক মিডফিল্ডার কচনেভ। ৮৮তম মিনিটে ডিফেন্ডার আরিফ খান জয়ের উঁচু শট হাওয়ায় ভেসে জালে ঢুকতে বসেছিল, অনেকটা লাফিয়ে মজনু গ্লাভস ছোঁয়ালেও প্রথম দফায় পারেননি পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে; দ্বিতীয় চেষ্টায় সফল হন তিনি। বল গোললাইন পেরিয়েছিল বলে উত্তর বারিধারার খেলোয়াড়ররা আবেদন করলেও সহকারী রেফারি সাড়া দেননি। ফলে ১-১ গোলের সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়ে দুদল।

এর আগে শেখ রাসেলের কাছে ১-০ এবং শেখ জামালের সঙ্গে গোল শূণ্য ড্র করেছিল উত্তর বারিধারা। অন্যদিকে শেখ জামালের কাছে ৩-০ গোলে হারার পর শেখ রাসেলের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। তিন ম্যাচে দুই পয়েন্ট এবং সমান ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল উত্তর বারিধারা ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। দুই দলের ড্রয়ে বি গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ আট নিশ্চিত হল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের। তবে এই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সাপ দল নিশ্চিত করতে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে আগেই শেষ ষোলোতে পা দেয়া শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। এই ম্যাচে শেখ জামাল জিতলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে ধানমন্ডির ক্লাবটি, তবে ড্র হলে বা হারলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।

Previous articleনৌবাহিনীর বিপক্ষে চট্টগ্রাম আবাহনীর কষ্টার্জিত ড্র!
Next articleড্র করেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন শেখ রাসেল কেসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here