১৯৭১ সালে যখন দেশকে স্বাধীন করতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চলছে, তখন উদ্ভব হয় এক ব্যতিক্রমী দলের। মুক্তিযুদ্ধের জন্য জনমত অর্জন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে গঠন করা হয় ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’। পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধকালীন প্রথম ফুটবল দল এটি। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সে দলের সবাইকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে সে স্বীকৃতি হয়তো থাকছে না!
আর একবার মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন আসতে পারে। প্রস্তাবিত নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণকারীরাই হবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সূত্র জানিয়েছে, ২০২২ সালের জামুকা আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ২০ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজমকে চেয়ারম্যান করে পরবর্তী তিন বছরের জন্য ১১ সদস্যবিশিষ্ট জামুকা কাউন্সিল পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম একটি জাতীয় দৈনিককে জানান, রণাঙ্গনে যারা সরাসরি সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন তারা চান মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খ্যাত হতে। যদিও মুক্তিযুদ্ধে নানান সহায়ক শক্তি ছিল। তাই যারা যেভাবে ভূমিকা রেখেছেন ওইভাবেই উল্লেখ করার লক্ষ্য তাদের। অবশ্য ভাতা নিয়ে কারো কোনো আপত্তি নেই বলেও জানান তিনি। মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, তারা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন, তাই তারা সেই মর্যাদা চান।
প্রস্তাবিত খসড়ার সংজ্ঞায় মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এবং বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্নভাবে ভূমিকা রাখা অন্যদের ‘যুদ্ধ-সহায়ক’ নাম দিয়ে শ্রেণিভুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। আর সে শ্রেণীতেই অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা। এবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার অপেক্ষা।