একটা দেশের ফুটবলের উন্নয়নে ফুটবল একাডেমির ভূমিকা ব্যাপক। সাধারণত ক্লাবগুলো একাডেমি পরিচালনা করে তরুণ ফুটবলার তুলে আনে। তবে বাংলাদেশের ক্লাবগুলো সে সংস্কৃতি থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। তাই বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকেই নিতে হয়েছে এই দায়িত্ব। সে লক্ষ্যে ২০২১ সালে কমলাপুর স্টেডিয়ামে যাত্রা শুরু করে বাফুফে এলিট একাডেমি। এরইমধ্যে বয়সভিত্তিক দলগুলোতে এবং বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগের ক্লাবগুলোতে জায়গা করে নিয়েছেন এলিট একাডেমির ফুটবলাররা। বাফুফের এলিট একাডেমিতে বর্তমানে অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৮ বয়সের ৫৫ জন ফুটবলার আছে। তাদের জন্য বিদেশি কোচ নিয়োগের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিল বাফুফে। কিন্তু হঠাৎ করে এলিট একাডেমিকে বিকেএসপিতে স্থানান্তর করে দেওয়া হচ্ছে! কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত?
উত্তর খুঁজতে গেলে জানা যায় বাফুফে এলিট একাডেমিকে বিকেএসপিতে পাঠানোর মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে কমলাপুর স্টেডিয়ামের মেয়াদোত্তীর্ণ টার্ফকে। সেপ্টেম্বর থেকে বাফুফের এলিট একাডেমির ফুটবলাররা ছুটিতে আছে। ডিসেম্বরে আবার তাদের একাডেমিতে ফেরার কথা। বিকেএসপি’কে বেঁছে নেয়ার কারণ হিসেবে জানা যায় মাঠ সহ ফুটবলারদের উপযোগী সকল সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের পড়ালেখার বিষয়টিরও সমাধান হবে।
গত সাফ অ-১৯ টুর্নামেন্টের এর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে এলিট একাডেমির কার্যক্রম। গুঞ্জন ছিলো রাজধানীর মুগদা এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে এবং বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিসের মাধ্যমে নিজেদের কার্যক্রম চালাবে ফেডারেশন। কিন্তু পরবর্তী সেই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসে বিকেএসপি’কে নিজেদের ঠিকানা হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
বিকেএসপির সঙ্গে এর আগেও সমন্বয় করে একাডেমি করেছিল বাফুফে। তবে সে অভিজ্ঞতা সুখকর হয়নি। ২০১১ সালে সিলেট নগরীর উপকণ্ঠে খাদিম নগরে সিলেট বিকেএসপি মাঠে বাফুফের তত্ত্বাবধানে যাত্রা শুরু করেছিল বাফুফে ফুটবল একাডেমি। কিন্তু দায়িত্বশীলদের চরম ব্যর্থতা আর উদাসীনতার কারণেই সেই ‘বাফুফে ফুটবল একাডেমি’ আক্ষরিক অর্থে আর সামনে এগোয়নি। তাই এবারও শঙ্কা জাগে আগের মত কিছুই হতে যাচ্ছে না তো? এছাড়া ২ বছর সফলভাবে একাডেমি পরিচালনা করার পর বিকেএসপির তত্ত্বাবধানে একাডেমি তুলে দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তাহলে কি বাফুফে এলিট একাডেমিকে বিকেএসপির কাছে পাঠিয়ে নিজেদের দেওয়া আশ্বাস থেকে দায়মুক্তি পেতে চাইছে?