গত সেপ্টেম্বরে এএফসি কাপ খেলতে মালদ্বীপ গিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। সেখানে মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে ৩-১ গোলের হারের ক্ষত নিয়ে দেশে ফেরে অস্কার ব্রুজন শিষ্যরা। তবে ফেরার পথে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকানো হয় দলটির পাঁচ ফুটবলারকে। আলোচিত পাঁচ ফুটবলার হলেন- তপু বর্মণ, আনিসুর রহমান জিকো, তৌহিদুল আলম সবুজ, শেখ মোরসালিন ও রিমন হোসেন। এই পাঁচজনের ব্যাগ থেকে বিমানবন্দরের কাস্টম কর্মকর্তারা ৬৪ বোতল মদ পেয়েছিলেন। বিমানবন্দরে মদ নিয়ে ধরা খাওয়ার পর নিজেদের ক্লাব বসুন্ধরা কিংস থেকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন তারা। এবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও শাস্তি পেতে পারেন তারা।
আগামী ১২ এবং ১৭ অক্টোবর ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাইপর্বের প্রথম রাউন্ডে মালদ্বীপের বিপক্ষে হোম এবং অ্যাওয়ে ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই দুই ম্যাচের আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের এমন ঘটনা বিপদে ফেলতে পারে বাংলাদেশ দলকে। তাদের বাদ দেয়া হতে পারে মালদ্বীপের বিপক্ষে বাছাইপর্বের ম্যাচে। মালদ্বীপের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ দুই ম্যাচে দলের অন্যতম সেরা তিন তারকা তপু বর্মণ, আনিসুর রহমান জিকো এবং শেখ মোরসালিনকে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বুধবার (৪ অক্টোবর) বাফুফের এক সভা শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাফুফে প্রেসিডেন্ট কাজী সালাউদ্দিন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের সাময়িক নিষিদ্ধ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাফুফে বস।
এই প্রসঙ্গে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘তিন-চার দিন আগে বসুন্ধরা কিংস আমাকে একটা চিঠি দিয়েছে। সেখানে তারা কয়েকজন খেলোয়াড়দের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানিয়েছে এবং ডিসিপ্লিনারি বিষয়ে তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে। ক্লাব একটি শৃঙ্খলার বিষয়ে তদন্ত করছে। একটি ক্লাব যখন তদন্ত করে বা চিঠি দেয় তখন সেটিকে সম্মান দেখানো দরকার।’
ইতোমধ্যেই মালদ্বীপের বিপক্ষে দুই ম্যাচের জন্য ১৫ ফুটবলারকে নিয়ে ক্যাম্প শুরু করেছেন বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা। তবে এএফসি কাপের ম্যাচ থাকায় এখনো বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলারদের ক্যাম্পে ডাকেননি তিনি। অভিযুক্ত ফুটবলারররাও বসুন্ধরা কিংসের। তাই কোচ তাদের ডাকবেন কি না এই প্রশ্নও এসেছে। এর উত্তরে সালাউদ্দিন বলেন, ‘শৃঙ্খলার বিষয়ে ক্লাব, ফেডারেশন, কোচ একসূত্রেই কাজ করা উচিত। আমার যতটুকু মনে হয় কোচ শৃঙ্খলার দিকেই থাকতে পারেন।’
বাছাইপর্বের মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মালদ্বীপ বাঁধা পেরোতে না পারলে আগামী দেড় বছর ফিফা-এএফসির কোনো টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ হবে না বাংলাদেশের। আর মালদ্বীপকে হারাতে পারলে বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বের ‘আই’ গ্রুপে অস্ট্রেলিয়া, লেবানন ও ফিলিস্তিনের বিপক্ষে খেলবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। আর তাইতো দলে মোরসালিন-জিকো-তপু না থাকলে বাংলাদেশ দলের জন্য মালদ্বীপ বাঁধা উৎরানো কঠিনই হবে। কিন্তু তাদের কর্মকান্ডের জন্য শাস্তিও প্রয়োজন বলে মনে করেন ফুটবলসংশ্লিষ্টরা। এবার দেখার পালা বাফুফের কাছ থেকে কেমন সিদ্ধান্ত আসে।