আবারো পুরোনো ছন্দে ফিরলো বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের সামনে টিকতে পারে নি শক্তিশালী সিঙ্গাপুর নারী ফুটবল দলও। প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে জয়ের পর এবার সিঙ্গাপুরকে দ্বিতীয় ম্যাচে ৮-০ গোলের বড় ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে বাংলাদেশের নারীরা।
ম্যাচের ১১ মিনিটে বাংলাদেশ দল এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। বক্সের সামনে বল পেয়ে একাই বল নিয়ে ঢুকে পড়েন অধিকার সাবিনা খাতুন। সেখান থেকে বলকে দূরের পোস্টে রাখার চেষ্টায় সজোরে শট করেন, কিন্তু বল গোলপোস্টের পাশ দিয়ে সীমানার বাইরে চলে যায়।
তবে এর মিনিট পাঁচেক পরেই লিড পেয়ে যায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীনের হেড থেকে সুযোগ পেয়ে গোলটি করেন তহুরা খাতুন। ১৮ মিনিটে লিড দ্বিগুন হয়। সাবিনা খাতুনের কর্ণার কিক থেকে গোললাইনের সামনে ফাঁকায় থাকা ঋতুপর্ণা চাকমা বল পেয়ে সহজ সুযোগটি কাজে লাগান। ২৫ মিনিটে প্রথম ম্যাচের মতো নিজের জোড়া গোল পূরণ করেন তহুরা খাতুন। সানজিদার ক্রস থেকে বক্সের ভেতরে বল পেয়ে সোজা অন টার্গেট শট করেন ঋতুপর্ণা চাকমা, তার শট ডাইভ করে ঠেকিয়ে দেন সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক। তবে ফিরতি বলে গোলের সুযোগ চলে আসে তহুরার কাছে, তহুরাও সুযোগ হাতছাড়া করেন নি, বল পেয়ে সোজা বলকে জালে পাঠিয়ে দেন। তহুরার দুই গোল এবং ঋতুর এক গোলের পুঁজিতে ৩-০ তে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
দ্বিতীয়ার্ধেও নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। ম্যাচের ৫১ মিনিটে গোলও পেয়ে যায় সানজিদা। তবে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। তবে ৫৭ মিনিটে নিজের গোলের খাতা ঠিকই খুলেন তিনি। রিতুর কাটব্যাক থেকে তহুরা গোলের চান্স মিস করলে পেছনে থাকা সানজিদা ঠিকই বলকে জালের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন। খেলার ৬২ মিনিটে তহুরার মতো ঋতুপর্ণাও নিজের জোড়া গোল পূরণ করেন। সানজিদার পাস থেকে বাম পায়ের এক জোরালো শট সিঙ্গাপুরের জালে লক্ষ্যভেদ করেন ঋতু। ৭০ মিনিটে আবারো অফসাইডের ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ দল। এতে করে ব্যর্থ হয়ে যায় তহুরার হ্যাট্রিকের সুযোগ।
বদলী হিসেবে নেমে ৭৫ মিনিটে চমক দেখান শামসুন্নাহার জুনিয়র। তার কাটব্যাক থেকে গোল করে দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। এতে ব্যবধান দাঁড়ায় ৬-০ তে। বদলি হিসেবে নেমে মাতসুসীমা সুমাইয়াও গোল পান। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে সাবিনা খাতুনের ফ্রি কিক থেকে সিঙ্গাপুরের ডিফেন্ডার পুরোপুরি বল ক্লিয়ারে ব্যর্থ হলে সুযোগ পেয়ে সাইড ভলিতে গোল করেন জাপানী বংশোদ্ভূত এই বাংলাদেশী।
সিঙ্গাপুরের কফিনের শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ঋতুপর্ণা চাকমার কাটব্যাক থেকে শামসুন্নাহারের ওয়ান টাচে বল গোলের দেখা খুঁজে পায়। এতে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ৮-০ গোলের বড় জয় পায় বাঘিনীরা।
এই জয়ে বাংলাদেশের ফুটবলের দারুণ একটি বছর শেষ হলো। ২০২৩ সালে পুরুষ ও নারী দুই ফুটবলই সমর্থকদের আনন্দ এনে দিয়েছে উৎসবের উপলক্ষ। অপেক্ষা এবার নতুন বছরে আরো শক্তিশালী হয়ে ফেরার।