পিছিয়ে পড়েও ম্যাচে কিভাবে ফিরে আসতে হয় সেটা খুব ভালোভাবেই আয়ত্ত্ব করেছে নিয়েছে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের নতুন রাজা বসুন্ধরা কিংস। স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে শুরুতে ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত মোহামেডানের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে আনে রবসন-রাকিবরা। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে তারা ২-১ গোলে হারিয়ে গতবারের মতো এবারেও মৌসুমের প্রথম শিরোপা নিজেদের করে নেয়।
ম্যাচের প্রথমার্ধে দুইদলই প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙ্গার চেষ্টা চালায়। কিন্তু কোনো দলই তাতে সফলতার মুখ দেখে নি। ফলে গোলশূন্য ড্র দিয়ে প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে লাল কার্ড দেখে বসুন্ধরা কিংসের রফিকুল ইসলাম। ৪৬ মিনিটে রফিক বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মেজাজ হারিয়ে মোহামেডানের ওমর ফারুক বাবুকে অতর্কিতভাবে আঘাত করে। এতে করে রেফারী রফিককে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন। ফলে দশজনের দলে পরিণত হয় কিংস।
দশজনের দলে পরিণত হয়ে খেই হারিয়ে ফেলে বসুন্ধরা কিংস। সেই সুযোগকে কাজে লাগায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ম্যাচের ৫১ মিনিটে মোহামেডানের মিডফিল্ডার মুজাফর মুজাফরোভের কর্ণার কিক থেকে মাথার আলতো টোকাতে বলকে জালে জড়িয়ে দেন তার সতীর্থ খেলোয়াড় ইমালুয়েল সানডে। তবে লিড বেশীক্ষণ ধরে রাখতে পারে নি সাদা-কালো শিবির। পরের মিনিটেই ম্যাচে সমতা নিয়ে আসে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। বক্সের ভেতরে জটলার মধ্য থেকে খানিকটা জায়গা বের করে বাম পায়ের অন টার্গেট শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাকিব। এরফলে ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ১-১ এ।
ম্যাচের ৮৬ মিনিটে এগিয়ে যায় দশজনের বসুন্ধরা কিংস। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার মিগেল ডামাসেনার বাড়ানো থ্রু পাস থেকে বল পেয়ে বিন্দুমাত্র দেরী না করে সোজা শট করে দলের আরেক ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড় ডরিয়েল্টন গোমেজ। ডরিয়েল্টন গোমেজের দুর্দান্ত গতির শট মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন হোসেনকে ফাঁকি দিয়ে জালে আঘাত করে। ডরিয়েল্টনের এই গোলের বিনিময়ে ম্যাচের ২-১ গোলে এগিয়ে যায় অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা।
বসুন্ধরা কিংস গোল করলেও গোল শোধ করতে পারে নি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এতে করে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের স্কোরলাইন দাঁড়ায় ২-১ গোলে। ফলে জয়ের পাশাপাশি মৌসুমের প্রথম শিরোপার দেখা পায় বসুন্ধরা কিংস এবং এরই সাথে সর্বোচ্চ তিনবার স্বাধীনতা কাপ জয়ের গৌরব অর্জনের ক্ষেত্রে আবাহনী সাথে ভাগ বসায় বসুন্ধরার রাজারা।
তবে সব ভালোর মাঝে একটা মন্দ দিক চোখে এড়াইনি কারোরই। ম্যাচ শেষের দিকে নিরাপত্তা উপেক্ষা করে মাঠের মধ্যেই দর্শক ঢুকে পড়ে। ফলে মাঠের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন জাগে। কতটুকু শক্তিশালী নিরাপত্তা বেষ্টনী মধ্যে বাফুফে তাদের খেলা পরিচালিত করছে? আদৌ কি খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে তাদের মধ্যে ভাবনা প্রকাশ ঘটায় কিনা?