ফুটবল মাঠের রাজা রেফারি। সেই রেফারিদের পরীক্ষা দিয়ে মাঠে নামতে হয়। চলতি ফুটবল মৌসুমের জন্য ফিফা রেফারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের আজ ব্যাজ প্রদান করেছে বাফুফের রেফারিজ কমিটি।
পরীক্ষা ও ফলাফল কয়েক মাস আগে হলেও সুইজারল্যান্ড থেকে ব্যাজ আসতে এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে কিছুটা সময় লেগেছে। বাফুফের রেফারিজ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী নির্বাচনী ব্যস্ততা শেষে আজ ফিফা রেফারি-সহকারী রেফারিদের ব্যাজ প্রদান করেছেন। এমন অনুষ্ঠান অবশ্য রেফারিদের বকেয়া সম্মানী ও এবারের ফিফা রেফারি মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বরং প্রশ্ন উঠেছে। বাফুফে থেকে মনোনয়নকৃত নামই ফিফা অনুমোদন দেয়।
রেফারিদের সম্মানী বকেয়া কোটি টাকার ওপরে। সেটা যেন আর না বাড়ে এই পরিকল্পনা হয়েছে আজকের রেফারিজ কমিটির সভায় এ বিষয়ে সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘এখন থেকে যে টুর্নামেন্ট বা প্রতিযোগিতা হবে সেখানে রেফারিদের জন্য আলাদা বাজেট থাকবে। প্রতি টুর্নামেন্ট শেষে যেন তারা এই অর্থ পান সেটা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি আগের বকেয়াগুলোও ধীরে ধীরে পরিশোধ করা হবে।’
রেফারিদের বকেয়ার বড় অংশ প্রিমিয়ার লিগ, ফেডারেশন কাপসহ শীর্ষ স্তরের খেলায়। বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী যিনি নিজেই এক দশকের বেশি সময় এই দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি ফেডারেশনের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যানও এক দশক। উভয় দায়িত্ব থেকে রেফারিদের সম্মানী বকেয়ার দায়ভার তার ওপরই বর্তায়। তিনি অবশ্য সেই দায় নিয়ে সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেছেন।
রেফারিদের সম্মানী বকেয়া রেখে ফেডারেশন বিদেশ থেকে রেফারি বিশেষজ্ঞ এনেছিল। কয়েক মাস থেকে সেই বিদেশি রেফারি বিশেষজ্ঞ দায়িত্ব ছেড়েছেন। প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের রেফারিদের দৃশ্যত কোনো পরিবর্তন হয়নি। এই প্রসঙ্গে রেফারিজ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদি বলেন,‘আসলে আমাদের সভাপতি (কাজী সালাউদ্দিন) রেফারিদের উন্নয়নের জন্য তাকে এনেছিলেন। তিনি উন্নয়নের চেষ্টা করেছেন এবং ব্যক্তিগত কারণে চলে গেছেন।’
বিদেশি রেফারি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক রেফারিদের একটা মনোমালিন্য ছিল। বিশেষ করে ফিফা রেফারি পরীক্ষা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ছিল। প্রথম পরীক্ষায় অনেকেই অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। পুনরায় পরীক্ষা আয়োজনে সম্মত ছিলেন না গৌতম কর। পুনরায় পরীক্ষায় অনেকে পাশ করেছেন। সেই প্রক্রিয়া, পদ্ধতি নিয়ে ঘোর প্রশ্ন রয়েছে। তাই এবার ফিফা রেফারি-সহকারি রেফারিদের মনোনয়ন নিয়ে ঘোর বিতর্ক রয়েছে। এই প্রসঙ্গে রেফারিজ কমিটির চেয়ারম্যান বলেন,‘যারা মাঠের বিচার করবেন। তাদের নির্বাচনও অবশ্যই সঠিকভাবে হওয়া কাম্য।
ফিফা রেফারি হতে রেফারিজ কমিটির চেয়রাম্যানের কাছে অনেক ব্যক্তিবর্গের তদবিরও এসেছিল বলে গুঞ্জন আছে ফুটবলাঙ্গনে। বাংলাদেশে আগে (পুরুষ) পাঁচ জন রেফারি ও সাত জন সহকারী ফিফা রেফারির কোটা ছিল। এবার সেই কোটা কমে তিন জন রেফারি ও ছয় জন সহকারী রেফারি হয়েছে। নারীতে একজন রেফারি ও একজন সহকারি রেফারি। পুরুষদের এই কোটা কমার পেছনে রেফারিজ কমিটি এএফসির এলিট প্যানেলে রেফারি না থাকা এবং ফিফার নতুন নীতিকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
টানা এক দশক ফিফা সহকারী রেফারি হিসেবে উত্তীর্ণ হয়ে আসছেন নুরুজ্জামান ও মনির ঢালী। মনির ঢালী এএফসি’র এলিট প্যানেলেও রয়েছেন। নারী সহকারী রেফারি সালমা ইসলাম মনিও রয়েছেন এএফসি’র প্যানেলে। আরেক নারী রেফারি জয়া চাকমা এএফসি’র এলিটে জায়গা না পেলেও ফিফা রেফারির ব্যাজের ধারাবাহিকতা বজায় চলছেন। যদিও এবার তার উত্তীর্ণ হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেক রেফারিদের মধ্যে।