হামজা চৌধুরী ইস্যু নিয়ে রহস্যময় মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন। বাফুফে সভাপতির দাবি, জাতীয় দলে খেলার বিষয়ে হামজা তাকে কিছু বলেননি। হামজাকে নিয়ে সব গুঞ্জন নাকি মিডিয়ার সৃষ্টি!
এদিকে বাফুফের ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার হামজাকে নিয়ে গুরুত্বসহকারে কাজ করার কথা জানান। এমনকি হামজার জন্ম সনদ প্রাপ্তিতেও সহায়তা করে বাফুফে। এরপর পাসপোর্ট করতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হলেও পরে বাফুফের মধ্যস্থতায় সে আবেদনও করেছেন হামজা। তাই বাফুফের কার্যক্রমে হামজাকে নিয়ে ইতিবাচক ধারণাই পাওয়া যায়। কিন্তু বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন করলেন বিতর্কিত মন্তব্য!
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পর কাজী সালাউদ্দিন বলেন,
‘হামজা এখন পর্যন্ত আমাকে বলেনি সে (বাংলাদেশের হয়ে) খেলতে চায়। এটা শুধু গণমাধ্যমে শোনা কথা। তাকে এখানে আসতে বলেন এবং বলতে বলেন সে খেলতে চায়। কী করতে হবে আমরা করে দিবো ৭ দিনের মধ্যে। হামজা আমাদের কোন চিঠিও পাঠায়নি যে সে খেলতে চায়। তার ক্লাবও তাকে ছাড়পত্র দেয়নি।’
আর এতেই ফুটবল প্রেমীদের ক্ষোভ। হামজা নিজে থেকেই ইচ্ছে প্রকাশ করলেন, এরপর নাগরিকত্ব নিতে চেষ্টা করছেন তারপরও তাকে বাফুফের কাছে ইচ্ছে প্রকাশ করতে হবে? হামজার মতো একজন খেলোয়াড়কে দলে নিতে উল্টো বাফুফেরই তো অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত। অবশ্য এখন বাফুফের পক্ষ থেকে হামজাকে নিয়ে বেশ গুরুত্বসহকারে কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু এর মাঝে বাফুফে সভাপতির এমন মন্তব্য আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
যেখানে হামজাকে সেপ্টেম্বরের উইন্ডোতে খেলানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে, সেখানে সভাপতি বলছেন হামজা নাকি খেলতে চান এটা বলেননি। তাকে হামজা সরাসরি বলেননি এটা সঠিক, কিন্তু তাকেই কেন বলতে হবে এই প্রশ্ন যেমন উঠেছে, তেমনি হামজাকে নিয়ে ফেডারেশন যে কাজ করছে সেটা কি সভাপতির অগোচরে নাকি বিনা অনুমতিতেই তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে ফুটবলাঙ্গনে। তাইতো সব মিলিয়ে একটা দোটানায় পড়ে গিয়েছে বাফুফে।
হামজা চৌধুরী নিজে থেকেই যেখানে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এমনকি নাগরিকত্ব নিয়েও কাজ শুরু করেছেন সেখানে বাফুফে সভাপতির এমন মন্তব্য আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অবশ্য সালাউদ্দিনের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসনে কাজ করছে বাফুফে। তার মন্তব্যে হামজা ও তার পরিবারের যেন মনক্ষুণ্ন না হয় সেদিক অবশ্য তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফেডারেশন থেকে হামজা ও তার পরিবারকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে পুরো বিষয়টি। ফুটবল প্রেমীদের জন্য সুখবর, হামজা ও তার পরিবার সেই ব্যাখায় সন্তুষ্ট হয়েছেন।
কিন্তু একটা দেশের ফুটবলের শীর্ষ কর্তার কাছ থেকে কখনোই এমন লাগামছাড়া মন্তব্য কাম্য নয়। সামগ্রিকভাবে এতে করে দেশের ফুটবলের উপরই বাজে প্রভাব পড়বে।