আবারো দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশী ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ এসেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন মনিকা চাকমার। ভারত ও মালদ্বীপের পর এবার ভুটানের প্রথম সারির দল ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের হয়ে খেলার অফার পেয়েছেন তিনি। তবে সাফের আগে খেলোয়াড়দের ছাড়তে নারাজ বাফুফে। এতে করে ভুটানে সাবিনা,মনিকার খেলতে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে!
বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ককে দলে ভেড়াতে অফার লেটার পাঠিয়েছিলো ভুটানের প্রথম সারির দল ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড। এর আগেও বিদেশের মাটিতে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে সাবিনার। তাই ভুটানের ক্লাবটির হয়ে মাঠে নামা হলে যে তার অভিজ্ঞতার ভান্ডারে নতুন কিছু যোগ করতো তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সাবিনা খাতুনের পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের আরেক খেলোয়াড় মনিকা চাকমাকেও দলে ভেড়াতে অফার লেটার পাড়িয়েছে দলটি। তবে এই ঘটনায় বাধ সেধেছে স্বয়ং বাফুফে। ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাফের আগে ভুটানে পাড়ি দিতে পারবেন না সাবিনা ও মনিকা।
ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেড থেকে কিংবা বাফুফের অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপারে অফসাইডের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তাকে ফোনে পায় নি প্রতিবেদক।
সাবিনাকে খেলতে সুযোগ না দেওয়া এবং ফোনে সাবিনাকে না পাওয়া এই দুইটা ঘটনা এক করলে ধোঁয়াশার তৈরি হয়। সাফের আগে ভুটানে খেলতে গেলে নতুন অভিজ্ঞতার সঞ্চার ঘটতো তার মাঝে, যেটা তার পারফরম্যান্স উন্নতির ক্ষেত্রে সাহায্যের পাশাপাশি সর্বোপরি দলের পারফরম্যান্সের বড় একটা প্রভাব তৈরি করতো। কিন্তু বাফুফে কান্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্তের বাঁকে পড়ে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা তেমন একটা প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলার সুযোগ পায় না। কালেভদ্রে জাতীয় দলের জার্সিতে গুটিকয়েক ম্যাচ খেলতে পারে তারা। এছাড়া বিদেশী দলগুলোর বাংলাদেশে সফর বাতিলে ইস্যু প্রতিটি ফিফা উইন্ডোতে প্রায় হরহামেশাই ঘটে। খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের জন্য একমাত্র জায়গা নারী লীগ। তাই বিদেশী কোনো ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ বাংলাদেশ নারী দলের খেলোয়াড়দের জন্য সাপে বর পাওয়ার মতো ঘটনা। কিন্তু তাতেও এখন বাধ সেধেছে নিজেদের ফেডারেশন। এতে খেলোয়াড়েরা নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হারানোর পাশাপাশি, নিজেদের মনোবলও হারাবে।
এই ঘটনায় বাফুফের অদক্ষতার পাশাপাশি বাফুফে কমিটি ফর ওমেন্স ফুটবলের চেয়ারম্যানের মাহফুজা আক্তার কিরণের দায়বদ্ধতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে। তার প্রত্যক্ষ সিদ্ধান্তের কারণে সাবিনা এবং মনিকার ভুটানে খেলতে যাওয়া ভেস্তে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানতে মাহফুজা আক্তার কিরণের সাথেও যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে অফসাইড। কিন্তু সাবিনার মতো তাকেও ফোনে পাওয়া যায় নি।
দেশের নারী ফুটবল কর্ণধার হওয়া সত্ত্বেও নারী ফুটবলে গুরুত্বপূর্ণ কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপনে বরাবরই ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ভুটান দলের বাংলাদেশ সফরের পাশাপাশি এর আগের আরো অনেক সফর ভেস্তে গেলেও কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপ নিতে পারেন নি তিনি এবং তার কমিটি। বরং এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে খেলোয়াড়দের বিদেশের মাটিতে খেলতে যাওয়ার বাধা সৃষ্টি করছেন।