ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত সোমবার পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। সেদিন বিকেলেই শেখ হাসিনার বড় ভাই শেখ কামালের হাতে গড়া বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ঢাকা আবাহনীতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ভাঙচুর করা হয় ক্লাবের অফিস, তছনছ করা হয় ক্লাবের বিভিন্ন কক্ষের ফ্যান, এসি, কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, বেসিনের কল, কমোড, জানালার পর্দা, টেবিল, চেয়ারসহ বিভিন্ন আসবাব। এরসঙ্গে হামলাকারীরা নিয়ে গেছে সব ট্রফি। ক্রিকেট, ফুটবল, হকিসহ বিভিন্ন খেলায় এ পর্যন্ত যত ট্রফি জিতেছে আবাহনী – কিছুই আর অবশিষ্ট নেই!
ঢাকা আবাহনী বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের পরিচিত মুখ। দেশ ও দেশের বাইরে সাফল্যের সঙ্গে অসংখ্য ট্রফি জয়ের সাক্ষী ক্লাবটি। কিন্তু ক্লাবে ভাংচুর এবং ট্রফি চুরির ঘটনায় বেশ হতাশ ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড়রা। প্রাণের ক্লাব আবাহনীর ট্রফিগুলো অন্তত ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি তাদের।
লম্বা সময় আবাহনীতে খেলে এবারের মৌসুমে অবসর গ্রহণ করেন ডিফেন্ডার রেজাউল করিম রেজা। ফেসবুক পোস্টে ট্রফি ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। আবাহনীতে তার জেতা শিরোপার সঙ্গে ছবি দিয়ে তিনি রেজা লিখেছেন, “আপনারা দয়া করে সব ট্রফিগুলো ফিরিয়ে দিন । ট্রফি ছাড়া আর কিছু চাই না। এইখানে অনেক মহা তারকাদের স্মৃতি আছে ওনাদের সাথে আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষটারও স্মৃতি আছে।” একই কথা লিখেন আবাহনীর সাবেক দুই ফুটবলার শাহেদুল আলম এবং ওয়াহেদ আহমেদ।
এদিকে আবাহনীর আরেক সাবেক ফুটবলার সুশান্ত ত্রিপুরাও ট্রফি ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। ফেসবুকে জাতীয় দলের এই ডিফেন্ডার লিখেন, “বাংলাদেশের মানুষ সবসময় ক্রীড়া পাগল। দেশের এই নতুন শুরুর পথে স্বাধীনতাকে ঢাল বানিয়ে যদি দুষ্কৃতিকারীরা দেশের সবচেয়ে সফলতম ক্লাবকে ধ্বংস করে দেয়, তবে আমরা খেলোয়াড় সহ দেশবাসীর জন্য এটি চরম বেদনার হবে। মোনেম মুন্না সহ দেশের ফুটবল ইতিহাসের অনেক বড় তারকাদের অর্জন এখন আর ক্লাবে নেই। একজন ফুটবলার হিসেবে, একজন নতুন স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি অনুরোধ করবো, ক্লাবের ইতিহাসের অংশ এই গৌরবের ট্রফিগুলো ফিরিয়ে দিন। ছাত্ররা যদি দেশের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করতে পারে,তাহলে ট্রফি পুনরুদ্ধার কেন সম্ভব নয়! আমার বিশ্বাস দেশের মানুষ খেলাকে এতোটাই ভালোবাসে যে দেশের গৌরবের এই ট্রফিগুলো আবার নিজের স্থান ফিরে পাবে।”