বহুল প্রতীক্ষিত বাফুফে নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। আগামীকাল (২৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে বাফুফে নির্বাচন ২০২৪। বাফুফের কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত কমিটি আগামী চার বছর বাংলাদেশ ফুটবলের রক্ষাকর্তা হবেন। কিন্তু আগামীকালের নির্বাচনে কারা এগিয়ে? কাদের অধীনে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল?
সভাপতি পদে প্রার্থী তাবিথ আওয়াল ও এএফএম মিজানুর রহমান। এদের মধ্যে নামে ভারে তাবিথ আওয়াল অনেকটাই এগিয়ে। বিএনপিপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তাবিথ এর আগেও বাফুফের সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাই ফুটবল অঙ্গনে তার পথচলা বেশ মসৃণ। অপরদিকে তৃণমূলের সংগঠক মিজানুর রহমান দেশের ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে অনেকটাই অপরিচিত। একইসঙ্গে কাউন্সিলরদের সঙ্গেও তার খুব একটা যোগাযোগ নেই। তাই তাবিথ আওয়াল যে সভাপতি পদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন সেটা খালি চোখেই ধারণা করা যায়।
এদিকে সভাপতির পর বাফুফের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ সিনিয়র সহ-সভাপতি। যে পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান। হাকডাক দিয়েও তরফদার রুহুল আমিন মনোনয়ন তুলে নেওয়ায় ইমরুল হাসানের সিনিয়র সহ-সভাপতি হওয়া এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা।
এরপর বাফুফে নির্বাচনে আরেক আলোচ্য পদ সহ-সভাপতি। যেখানে ৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী রয়েছেন ৬ জন। ২০১৬ সালের পর পুনরায় সহ-সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির। সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিকও এই পদের আরেক প্রার্থী। তবে বাকি চার সহ-সভাপতি প্রার্থীর ফুটবলাঙ্গনে সেভাবে পরিচিতি ও সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু তাদের রয়েছে আর্থিক সক্ষমতা ও রাজনৈতিক প্রভাব। তাই তারা বেশ ফেভারিট। সহ-সভাপতি প্রার্থী লক্ষীপুর জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি (হ্যাপি) কোনো সাবেক ফুটবলার বা বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক না হলেও, বিএনপির শীর্ষ নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরি অ্যানির বড় ভাই হওয়ায় এই পদে অনেকটাই ফেভারিট। একই পদে আরেক বিএনপিপন্থী প্রার্থী ও ব্রাদার্স ইউনিয়নের সদস্য সচিব সাব্বির আহমেদ আরেফও রাজনৈতিক প্রভাবে সহ-সভাপতি পদে হেভিওয়েট প্রার্থী।
এই পদে আরেক প্রার্থী ফাহাদ করিম ফুটবলের ট্যাকনিক্যাল জ্ঞান, সাংগঠনিক ছাড়া শুধু আর্থিক সামর্থ্যরে জন্যই ফেভারিট প্রার্থী। সহ-সভাপতি পদে অন্য প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জামান জাহেদী। ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে তেমন পরিচিতি না থাকলেও শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমির জন্য তৃণমূলে বেশ পরিচিত তিনি। আওয়ামীপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সঙ্গে বিলুপ্ত হওয়া সংসদের সদস্য থাকলেও আর্থিক সামর্থ্যের কারণে তিনিও ফেভারিট।
বাফুফের সবচেয়ে বেশি পদ সংখ্যা সদস্য পদে। ১৫ পদের বিপরীতে লড়বেন ৩৭জন প্রার্থী। যেখানে সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড়, ম্যানেজার ও আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু, জাতীয় দল, নারী দল ও মোহামেডানের সাবেক ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু, জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় ও ম্যানেজার ইকবাল হোসেন, ফর্টিস এফসির সভাপতি শাহীন হাসান, রহমতগঞ্জের সভাপতি টিপু সুলতান এই পদে ফেভারিট। এছাড়াও জাকির হোসেন, ইমতিয়াজ আহমেদ সবুজ, গোলাম গাউস, মঞ্জুরুল করিম, আমের খানসহ ফুটবল অঙ্গনে পরিচিত কিছু মুখ সদস্য পদের জন্য ফেভারিট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।
এদিকে আলাদা কোন কোটা না থাকলেও বাফুফে নির্বাচনে সদস্য পদে চার জন নারী প্রার্থী রয়েছেন। তারাও এই ১৫ পদের জন্য লড়াই করবেন। আওয়ামীপন্থী হলেও বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারপার্সন মাহফুজা আক্তার কিরণ এবারের নির্বাচনেও ফেভারিট। বিক্রমপুর কিংসের সহ-সভাপতি ও বাফুফের নিষিদ্ধ সাধারণ সম্পাদক তাসমিয়া রেজোয়ানও এই পদে বেশ ফেভারিট। স্ত্রীর পক্ষে বেশ প্রচারণা চালাচ্ছেন সোহাগ। এছাড়া গাইবান্ধা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশেনের সদস্য মাহমুদা খাতুন অদিতি ও বাফুফের বর্তমান টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য রওশন আখতার হায়দার ডেইজির জয়ের সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু এগিয়ে থাকবেন মাহফুজা আক্তার কিরণ ও তাসমিয়া রেজোয়ান।
এবার দেখা যাক আগামীকালের নির্বাচনে কাউন্সিলরদের রায়ে কারা আসেন বাফুফের শীর্ষ পদগুলোতে। কারা পান আগামী চার বছর বাংলাদেশের ফুটবল পরিচালনার দায়িত্ব।