সময়টা ২০০৮ সাল, আজ থেকে প্রায় ১৬ বছর আগে প্রথমবারের মতো বাফুফের সভাপতি পদে বসেন কাজী সালাউদ্দিন। এরপর পার হয়েছে এক যুগেরও বেশী সময় কিন্তু নিজের সভাপতি চেয়ারে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছেন তিনি। তবে কথায় আছে সবকিছু চিরস্থায়ী নয়, ঠিক তেমনি কাজী সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বও আর বেশী দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলস্বরূপ আগে থেকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন এবং আজই তার সভাপতির ভূমিকায় অন্তিম দিন।
কাজী সালাউদ্দিন ফুটবলার হিসেবে বেশ নাম কামিয়েছিলেন তার সময়ে, বলা যেতে দেশের প্রথম সারির ফুটবলারদের মধ্যে একজন ছিলেন। তবে বাফুফের সভাপতি হওয়ার পর থেকে সুনামের বদলে তিরষ্কারই ছিলো তার নিত্যদিনের সঙ্গী; এর পিছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে নিজের কাজ যথাযথভাবে কখনোই পালন করতে পারেন নি। এতে করে বাংলাদেশের হাজার হাজার ফুটবল ভক্তের সমালোচনার বিষয়বস্তু জুড়ে ছিলো তার পদচারণা।
এছাড়া সভাপতি থাকাকালীন নিজেকে একনায়ক হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন কাজী সালাউদ্দিন। নির্বাচনের সময় তার বিপক্ষে কেউ দাঁড়াতে পারতো না, আর কেউ যদি দাঁড়ানোর সাহসও করতো তাহলে আড়ালে আবডালে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়া হতো। এভাবে প্রায় ১৬ বছর নিজের রাজ্যত্ব টিকিয়ে রেখেছিলেন কাজী সালাউদ্দিন। তবে একনায়কদেরও একসময় একসময় পতন ঘটে। কাজী সালাউদ্দিনের ভাগ্যেও তেমনটাই লেখা ছিলো। দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর কাজী সালাউদ্দিনের পায়ের নিচের মাটি নড়বড়ে হয়ে যায়। এর ফলস্বরূপ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
আজ ২৬ শে অক্টোবর বাফুফে নির্বাচনের আগে সকাল ১১ টা থেকে বার্ষিক সভা শুরু হয়েছে। এই সভার শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন কাজী সালাউদ্দিন এবং এর সাথে শেষ হবে কাজী সালাউদ্দিনের একচ্ছত্র রাজ্যত্ব।
অন্যদিকে এবারের বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদের জন্য লড়াই করছেন দুইজন। তাদের একজন হলেন বাফুফের সাবেক সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়াল, তার বিপরীতে লড়ছেন দিনাজপুরের ক্রীড়া সংগঠক এএফএম মিজানুর রহমান। ধারণা করা হচ্ছে মিজানুর রহমানকে হারিয়ে তাবিথ আউয়ালই বাফুফের পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছেন। বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদেও এসেছে পরিবর্তন, এই পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসান। তরফদার রুহুল আমিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি।