এক বছরের বেশি সময় পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরা মালদ্বীপের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে বছরখানেক আগেও এই মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ক্যাবরেরা শিষ্যরা। কিন্তু এবার জয় তো দূরে, উল্টো হেরেই যেতে হলো। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ শিষ্যদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করলেও, চিরায়ত গোল করতে না পারার আক্ষেপ তার।

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পারফরম্যান্সের প্রশংসা করলেও মাঠের খেলায় ক্যাবরেরার শিষ্যরা হতাশই করেছে। ম্যাচের একমাত্র গোল হজমের সময় মালদ্বীপের ফরোয়ার্ড আলী ফাসিরকে বাঁধা দেওয়ার কেউই ছিলেন না। এছাড়া পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক হুসেইন শরীফের বীরত্ব, গোলপোস্ট বাধা এবং গোলের বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগ তৈরি করেও জালের ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই কোচের কাছে এই হারের কোন ব্যাখ্যাই নেই!

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ক্যাবরেরা বলেন, ‘ব্যাখ্যা করা সত্যি কঠিন। এই হার সত্যি কষ্টদায়ক। কারণ অনেক সুযোগ এসেছিল আমাদের সামনে। যেগুলো আমরা গোলে পরিণত করতে পারতাম কিন্তু পারিনি। দলের পারফরম্যান্সে খুশি কারণ যেভাবে আমরা পরিশ্রম করেছি, খেলেছি সেটা ইতিবাচক দিক। এখনো অনেক কিছু পরিবর্তনের সুযোগ আছে। কিন্তু এই হার কোনো কিছু দিয়েই ব্যাখ্যা করা যাবে না। এখন থেকেই ইতিবাচক দিকগুলো নিতে হবে।’

ম্যাচ হারলেও দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু গোলের খেলায় যদি গোলটাই না করা যায় তাহলে সে দাপটের কোন মূল্য থাকে না। গোল মিসের সঙ্গে বাংলাদেশ অবশ্য ভাগ্যকেও দায়ী করতে পারে। কারণ কিঞ্চিৎ ব্যবধান ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিতে পারতো। তবে এ বিষয়ে কোচ ক্যাবরেরা কোন মন্তব্য করতে চান না। কোচ হিসেবে তার অধীনে এই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে ক্যাবরেরা বলেন, ‘ভাগ্যের ব্যাপার নিয়ে কিছু বলতে পছন্দ করি না। আজ আমরা সব কিছু করেছি, সব কিছু। আপনি যদি পরিসংখ্যান রিপোর্ট দেখেন, তাহলে আমরা কতগুলা আক্রমণ করেছি, সুযোগ তৈরি করেছি সেসব দেখতে পাবেন। আমরা যেভাবে খেলেছি তাতে অন্তত ৩-৪ গোল করতে পারতাম। আমরা শুধু আজ গোলটাই পাইনি। হারলেও আমরা আরো ভালো খেলেছি। আমরা কতগুলো সুযোগ তৈরি করেছি, অনেক ম্যাচের চেয়েও যেটা বেশি। প্রায় ৪০ ম্যাচ খেলেছি, মনে হয় সবগুলোর চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করেছি আজ।’

অভিজ্ঞ তপু বর্মনের সঙ্গে অ-২০ সাফের শিরোপা জয়ী ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু মালদ্বীপের বিপক্ষে রক্ষণ সামলান। তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল স্পষ্ট। গোল হজমেও ডিফেন্ডারদের মধ্যে সমন্বয় না থাকাই মূল কারণ। এরসঙ্গে বারবার সেট পিস থেকে গোল খেয়ে আর নিজের হতাশা লুকাতে পারেননি ক্যাবরেরা, ‘আমরা বারবার সেট পিসে গোল খাচ্ছি। ভুটানের বিপক্ষে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচেও এমনভাবে গোল খেয়েছিলাম। এই একটা জায়গায় বারবার শিখিয়েও কাজ হচ্ছে না। ব্যাপারটা দুশ্চিন্তা ও হতাশার।’

সব হতাশা ভুলে ও সমস্যার সমাধান করার জন্য মাত্র ২ দিন সময় পাচ্ছেন ক্যাবরেরা। কারণ ১৬ নভেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে আবারো মালদ্বীপকে মোকাবেলা করতে হবে তার শিষ্যদের। আর এই ম্যাচের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে তার ভবিষ্যৎ। কারণ কোচ হিসেবে তার সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়া পর্যন্ত এটাই বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ। ভালো ফলাফল আনতে না পারলে নিশ্চয়ই তার বিকল্প খুঁজতে বেরিয়ে পড়বে বাফুফে!

Previous articleমালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের হতাশাজনক হার
Next articleবাফুফের দিকে অসহযোগিতার অভিযোগ আল্ট্রাস সমর্থকদের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here