বাংলাদেশের নারী ফুটবলে চলমান কোচ ও খেলোয়াড়দের দ্বন্দ্ব সমাধানে কাজ করছে বাফুফে। নতুন করে চুক্তি স্বাক্ষর করলেও বিদ্রোহীদের মত পরিবর্তনের অপেক্ষায় আছে বাফুফে। অনুশীলনে ফিরতে রাজি হলে তারাও চুক্তির আওতায় আসবেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সিনিয়ররা আবারো দলে ফিরলে বিদ্রোহে অংশ না নেওয়া জুনিয়রদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় থাকবে তো? ক্যাম্পে তারা নিরাপদ তো?
কোচ পিটার বাটলারের অধীনে অনুশীলন বয়কট করেছে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনসহ ১৮ জন সিনিয়র খেলোয়াড়। তাদের দাবি কোচ ব্যক্তি স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ করেন এবং তাদের মতামতের গুরুত্ব দেননা। অপরদিকে পিটার বাটলার নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। তার কাছে শৃঙ্খলাই শেষ কথা। তাইতো সিনিয়ররা অনুশীলন বয়কট করায় অ-২০ দল থেকে খেলোয়াড়দের নিয়ে অনুশীলন করে যাচ্ছেন। আসছে আরব আমিরাত সফরে তাদের নিয়েই খেলার সম্ভাবনা প্রবল। এখন কথা হচ্ছে মত বদলে যদি সিনিয়ররা ফেরেন তাহলে কি হবে?
দেশের একটি শীর্ষ সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিদ্রোহে অংশ না নেওয়া জুনিয়র খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। বিদ্রোহীদের কথায় পরিস্কার ছিলো যারা (খেলোয়াড়) তাদের পক্ষে না, তাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়। এমনকি স্বাভাবিকও হবে না। এখন যদি সিনিয়ররা আবারো দলে ফেরেন তাহলে কি এই ইস্যুতে বিদ্রোহে অংশ না নেওয়া জুনিয়রদের সঙ্গে তাদের আগের মত সম্পর্ক বজায় থাকবে? নাকি এই ইস্যুতে সম্পর্কে ফাটল ধরবে? এ বিষয়টি নিয়ে ফুটবল পাড়ায় বেশ কানাঘুষা চলছে।
এদিকে অ-২০ দলের অনেক খেলোয়াড়ের জন্য এবারই প্রথম জাতীয় দলে খেলা। তাই বলতে গেলে একটা নতুন দল নিয়ে মাঠে নামছেন পিটার বাটলার। তাই তাদের নিয়ে যে খেলতে নেমেই সাফল্য নিয়ে আসবেন তার নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই জুনিয়ররা যদি প্রত্যাশিত সাফল্য না এনে দিতে পারে তাহলে কি সমর্থকদের রোষানলে পড়বেন না নতুন এই খেলোয়াড়রা?
বিদ্রোহী খেলোয়াড়রা ফিরে আসলেই মানসিক চাপে পড়বে জুনিয়র খেলোয়াড়রা। অসহযোগিতামূলক আচরণে শিকার হবেন তারা এটি যেকোন সাধারণ ফুটবল প্রেমিও আন্দাজ করতে পারেন। বাফুফে শেষ পর্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে হয়তো সাময়িক একটি সমাধান পাওয়া সম্ভব, কিন্তু নতুন একটি প্রজন্ম অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে। হয়তো এই ধারণা সম্পূর্ন ভুলও হতে পারে, কিন্তু কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার মতোই কারণ এটি।
তাইতো নারী ফুটবলে চলমান এই অস্থির অবস্থা কেটে গেলেও বাফুফেকে বেশ কিছু জায়গায় তীক্ষ্ম নজর রাখতে হবে। দলের মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষায় বাফুফের অগ্রগামী ভূমিকা হতে হবে।