বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল আগামী ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ যৌথ বাছাইয়ের হোম ম্যাচ খেলবে। ম্যাচটি আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) চায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে প্রস্তুত করতে। কারণ, এটিই হবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হামজা চৌধুরির দেশের মাটিতে প্রথম ম্যাচ।
তবে এই ম্যাচ আয়োজনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০২০ সালের পর থেকে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়নি। প্রায় সাড়ে চার বছর পর আবারও আন্তর্জাতিক ম্যাচ ফিরছে এই ঐতিহ্যবাহী ভেন্যুতে। স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ এখনো শেষ হয়নি। মাঠ, ফ্লাডলাইট, ড্রেসিংরুমসহ অনেক কিছুই এখনো অসম্পূর্ণ। তাই স্টেডিয়ামের সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে ঢাকায় এসেছেন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) একজন প্রতিনিধি—ভুটানের ম্যাচ কমিশনার মিন্দু দর্জি।
তিনি ড্রেসিংরুম, মাঠ, ফ্লাডলাইট, জায়ান্ট স্ক্রিন ও মিডিয়া ট্রিবিউন সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। পর্যবেক্ষণে কিছু কাজ অসমাপ্ত দেখে তিনি জানতে চেয়েছেন—কোন কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে, তার নিশ্চয়তা কী।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) জানিয়েছে, বিভিন্ন কাজের জন্য তারা ভিন্ন ভিন্ন ডেডলাইন নির্ধারণ করেছে। তারা আগামী পরশুদিন (১৫ এপ্রিল) সকল সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও বাফুফের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক বৈঠকের আয়োজন করেছে, যেখানে কাজের অগ্রগতি ও সময়সীমা নিয়ে আলোচনা হবে।
বাফুফের নির্বাহী সদস্য কামরুল হাসান হিলটন জানান, ২২ মে’র মধ্যে মাঠ ও স্টেডিয়ামের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করতে চায় ফেডারেশন। এর আগে ১০ মে ফ্লাডলাইট বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ক্রীড়া পরিষদ। ড্রেসিংরুমে এসি লাগানো, ডোপ টেস্ট রুম বড় করা, গ্যালারিতে নতুন শেড স্থাপনসহ বেশ কিছু কাজ এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ফ্লাডলাইটের সব আলো একটি টাওয়ারে বসানো সম্ভব নয় বলে গ্যালারির ছাদেও কিছু লাইট স্থাপন করা হবে। এই কাজ বিলম্বে শুরু হয়েছে, কারণ বিদেশ থেকে আনা লাইট বসাতে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দরকার ছিল। যদিও ফেডারেশন জুনের আগেই কাজ শেষ করতে চায়, প্রকৌশল বিভাগের পক্ষ থেকে এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি। তাদের ধারণা, টাওয়ারের লাইট দিয়েই ১৬০০–১৮০০ লাক্স আলো পাওয়া যাবে, যা ম্যাচ পরিচালনার জন্য যথেষ্ট হলেও টিভি সম্প্রচারে কিছুটা ঘাটতি হতে পারে।
এদিকে, বাফুফে চট্টগ্রামে অনূর্ধ্ব–২০ আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনাও করছে। এই বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করতে এএফসির প্রতিনিধি পরশুদিন চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে তার মতামতের ওপরই নির্ভর করছে ভেন্যুটি অনুমোদন পাবে কি না।
জাতীয় স্টেডিয়াম পরিদর্শনে এসে মিন্দু দর্জি জায়ান্ট স্ক্রিন ও প্রেসবক্সের প্রশংসা করলেও, ড্রেসিংরুমের অবস্থান নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন তুলেছেন। আধুনিক স্টেডিয়ামে যেখানে মাঝামাঝি অংশে ড্রেসিংরুম থাকে, সেখানে ঢাকার স্টেডিয়ামে এটি এক প্রান্তে, যা তিনি অনেক পুরনো ধারণা বলেই মনে করেছেন। আন্তর্জাতিক মানে স্টেডিয়ামের মাঠ ও আলোকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করছেন এএফসি প্রতিনিধি।