বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট তিনবার উঠেছে ধানমন্ডি ক্লাবের মাথায়। এবারের মৌসুমেও হাতকলমে শিরোপার দৌড়ে টিকে ছিলো ক্লাবটি। কিন্তু নিজেদের ২০ তম ম্যাচে হট ফেভারিট বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে মাঠে নামার আগেই দলের হেড কোচ শফিকুল ইসলাম মানিককে বরখাস্ত করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। যা রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দেয় ফুটবল সংশ্লিষ্ট সবার মনেই।
কোচ মানিক আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সভা কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ধানমন্ডি ক্লাবে তার বিদায় ও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। বরখাস্তের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না মানিক। গতকাল ক্লাবের এক কর্মকর্তার মাধ্যমে তিনি চিঠির ব্যাপারে জানতে পারেন। চিঠি পেয়ে রীতিমতো অবাক হয়ে যান মানিক। এই বিষয়ে তিনি বলেন,‘এক কর্মকর্তা বললেন আপনার একটি চিঠি আছে। বাসায় পাঠাবো কিনা। আমি বললাম বাসায় পাঠানোর দরকার নেই। ক্লাব থেকেই নিবো। সে বললো আপনারা ক্লাবে আসার দরকার নেই। হোয়াটস এপে চিঠি পেয়ে দেখলাম শুধু লেখা শেখ জামালের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’
মানিককে বরখাস্তের ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কারণ উল্লেখ করেনি ক্লাব ম্যানেজমেন্ট। তবে ক্লাবের গভার্নিং বডির চেয়ারম্যান মনজুর কাদের তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে জানান তিনি। মানিক বলেন, ‘আরামবাগের সাথে আমরা একটি ম্যাচ হারি। সেই হারের পর গোলরক্ষক কোচ বদলানো হয়েছে। আমার সঙ্গেও খুব বাজে ব্যবহার করা হয়েছে। তখন আমিই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর আজ করবো না। পদত্যাগ পত্র কর্তৃপক্ষের কাছে দিই। তারা সেটি গ্রহন করে নি। এর মধ্যে আরো দুইটি ম্যাচ জিতি। এরপর আবাহনীর সাথে ড্র। আবাহনীর সাথে ড্রয়ের পরে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।‘
গত বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদের জন্যে লড়াই করেন শফিকুল ইসলাম মানিক। এতে করে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন সাথে মনজুর কাদেরের সম্পর্কে মনমালিন্যের সৃষ্টি হয়। যদিও এখন সম্পর্কের উন্নতি ঘটেছে। নিজের চাকরিচ্যুত হওয়ার ব্যাপার নির্বাচনও একটি কারণ হতে পারে উল্লেখ করেন মানিক। তিনি বলেম, ‘এটা হলেও হতে পারে। মাঝেমধ্যে কাদের ভাই বলেছেন কি নির্বাচন করলা। মানিককে এখনো কোচ রেখেছো। এমন কথাও শুনতে হয়।’
জাতীয় দলের এই সাবেক খেলোয়াড় ও কোচ ধানমন্ডি ক্লাবের দায়িত্বে না থাকলেও ক্লাব ও ফুটবলের বৃহত্তর স্বার্থে উন্নতির কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ এক অনুরোধ করেন মানিক। মানিক বলেন ‘ কাদের ভাই ফুটবলের দীর্ঘদিনের সংগঠক। ২০১৬ সালের বাফুফে নির্বাচনের পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। তিনি প্রায়ই বলেন শেখ জামালের ক্লাবের খোঁজ রাখেন প্রধানমন্ত্রী,রেহানা আপা। আমি প্রধানমন্ত্রী প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলব, কাদের ভাইকে ক্লাবের অন্য দায়িত্ব দেয়া হোক চেয়ারম্যানের পরিবর্তে।’
চেয়ারম্যান মনজুর কাদের হুটহাট করেই সিদ্ধান্ত নেন। এরমধ্যেই ক্লাব থেকে অনেক কোচকে বিদায় নিতে হয়েছে। গত তিন ধরেই ক্লাবের সাথে আছে মানিক। ক্লাব থেকে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর এরকম মন্তব্য কেনো এর উত্তরে মানিক বলেন, ‘কাদের ভাইকে নিয়ে এরকম কথা আমি আগেও বলেছি নিজস্ব বা ঘরোয়া আলোচনায়। কখনো গণমাধ্যমে বা বাইরে বলি নি। এখন ক্লাবের স্বার্থে প্রয়োজন মনে করছি এজন্যে বলছি।’ মানসিকভাবে মনজুর কাদের অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এমনটা দাবি করে তার ক্লাব চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যহতি চেয়েছেন মানিক।