বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ২০২০-২১ এর মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎই আলোচনায় আসে ফিক্সিং কান্ড। সন্দেহের তীর যায় ঐতিহ্যবাহী আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের দিকে। এএফসি’র নির্দেশে এর তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আরামবাগের বিরুদ্ধে প্রমান পেয়েছে তারা। এতে আর্থিক জরিমানা ও অবনমন করা হয়েছে দলটিকে।
আরামবাগ ক্রীড়া সংঘকে পাঁচ লক্ষ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানাকৃত টাকা আগামী এক
মাস অর্থাৎ আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাফুফের ব্যাংক হিসেবে জমা প্রদান করতে হবে ক্লাবটিকে। এছাড়া করা হয়েছে অবনমনও। প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমন আগেই নিশ্চিত হওয়া দলটি নামিয়ে দেয়া হয়েছে আরো একধাপ নিচে। প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে আগামী দুই ফুটবল মৌসুম খেলতে হবে দলটিকে। এরমধ্যে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগ হতে পয়েন্ট তালিকা অনুযায়ী প্রমােশন পেলেও উক্ত প্রমােশন কার্যকর হবে না। তবে অবনমন হলে তা কার্যকর হবে।
ফিক্সিং কান্ডের অন্যতম হোতা হয়ে আসেন মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ। যিনি বসুন্ধরা কিংসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বসুন্ধরা গ্রুপ হতে চাকরিচ্যুত হওয়ার পরই তিনি আরামবাগে এসে আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে এই ফিক্সিং কান্ড শুরু করেন। ফলে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপােষক প্রতিষ্ঠান এম. স্পাের্টস এর স্বত্বাধিকারী মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজকে ফুটবল থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও সাবেক টিম ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশাে, সাবেক ফিটনেস ট্রেইনার ভারতীয় নাগরিক মাইদুল ইসলাম শেখ এবং সাবেক এসিস্ট্যান্ট টিম ম্যানেজার মােঃ আরিফ হােসেনকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আজীবন নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক ফিজিও ভারতীয় নাগরিক জনাব সঞ্জয় বােস, গেম এনালিস্ট/প্লেয়ার এজেন্ট ভারতীয় নাগরিক আজিজুল শেখকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার হয়েছে।
ফিক্সিং কান্ডে সরাসরি যুক্ত ছিলো খেলোয়াড়া। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক খেলােয়াড় আপেল মাহমুদকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বাফুফে। এছাড়া আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, মােঃ রকি, মােঃ জাহিদ হােসেন, কাজী রাহাদ মিয়া, মােঃ মােস্তাফিজুর রহমান সৈকত, মােঃ শামীম রেজা এবং অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় ব্রেডি ক্রিস্টিয়ানকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।
আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের নাইজেরিয়ান বিদেশী চিজোবা ক্রিস্টোফার, মােঃ ওমর ফারুক, মােঃ রাকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ফাহাদ এবং মােঃ মিরাজ মােল্লাকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।