মালদ্বীপকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার সমীকরণ সহজ করার যে পরিকল্পনা করেছিলেন বাংলাদেশ কোচ অস্কার ব্রুজন সেটা আর আলোর মুখ দেখলো না। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মালদ্বীপের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে জামাল ভুঁইয়ার দল। মালদ্বীপের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে হামজা মুহাম্মদ এবং আলী আশফাকের গোলে বাংলাদেশকে হারিয়ে এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিলো স্বাগতিকরা।
কার্ড সমস্যায় অনুমিত ২ পরিবর্তন নিয়েই মাঠে নামে বাংলাদেশ। বিশ্বনাথ ও রাকিবের জায়গায় একাদশে সুযোগ পান রহমত মিয়া এবং সোহেল রানা। আক্রমন পাল্টা আক্রমনে জমে ওঠে ম্যাচ। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই বক্সের ভেতর থেকে ডান পায়ে শট নেন বিপলু। তবে বিপলুর শট সরাসরি গ্লাভসবন্দী করেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। নবম মিনিটে বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ডান পায়ের জোড়ালো শট নেন বিপলু। তবে এবারে বিপলুর শট চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। ম্যাচের ২১তম মিনিটে প্রথম কর্নার পায় বাংলাদেশ। জামালের কর্নার থেকে ফিরতি বলে দূরপাল্লার শট নেন ইব্রাহিম। তবে ইব্রাহিমের শট চলে ক্রসবারের অনেকটা উপর দিয়ে। এরপর আস্তে আস্তে সময় গড়ানোর সাথে সাথে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় মালদ্বীপ। ম্যাচের ২৭তম মিনিটে আলী আশফাকের ফ্রি কিক হেডে ক্লিয়ার করেন তপু বর্মন। এরপরের মিনিটে গোল করার একবারে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল মালদ্বীপ। তবে হুসেইন নিহানের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে দুটি বিপজ্জনক আক্রমন চালায় মালদ্বীপ। শুরুতে আলী ফাসিরের শট স্লাইডিং ট্যাকেল করে রক্ষা করেন রহমত মিয়া। এরপরের মিনিটে আলী আশফাকের ফ্রি কিক ডাইভিং সেভ করেন আনিসুর রহমান জিকো। শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বক্সের সামান্য বাইরে থেকে দূরপাল্লার শট নেন মালদ্বীপের লেফট উইঙ্গার হামজা। তবে তার শট চলে যায় অনেকটা উপর দিয়ে। ম্যাচের ৫২তম মিনিটে বক্সের সামনে থেকে আচমকাই ডান পায়ের জোড়ালো শট নেন মালদ্বীপের ফরোয়ার্ড আলী ফাসির। তবে বামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলাদেশকে এ যাত্রায় আবারো রক্ষা করেন জিকো। তবে বাংলাদেশের সব প্রতিরোধ ভেঙে ৫৫তম মিনিটে মালদ্বীপকে এগিয়ে নেন উইঙ্গার হামজা মোহাম্মদ। আলী সামোহ’র হেড থেকে অসাধারণ বাইসাইকেল কিকে গোল করে স্বাগতিক দর্শকদের আনন্দ ভাসান হামজা। ৬৮তম মিনিটে জামাল ভুঁইয়ার শট মতিন মিয়ার পায়ে লেগে চলে যায় গোললাইনের বাইরে। তবে ম্যাচের ৭২তম মিনিটে নাইজকে বক্সের ভেতর ফাউল করে মালদ্বীপকে পেনাল্টি উপহার দেন সোহেল রানা। পেনাল্টিতে সহজেই জিকোকে বোকা বানিয়ে স্কোরলাইন ২-০ করেন আলী আশফাক।
৭৫তম মিনিটে বাংলাদেশকে আবারো রক্ষা করেন জিকো। এরপর ৭৭তম মিনিটে আবারো বাংলাদেশের বক্সে ঢুকে পড়ে মালদ্বীপ। তবে এবার বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন তারিক কাজী। এরপর বিক্ষিপ্ত ভাবে বেশ কয়েকবার আক্রমন চালায় মালদ্বীপ তবে আর গোলের দেখা পায়নি স্বাগতিকরা। ম্যাচের ইনজুরি সময়ের শেষ মিনিটে একটা গোল সোধ দেওয়ার সুযোগ ছিলো বাংলাদেশের। তবে মতিন মিয়ার টোকা জালের ঠিকানা পায়নি। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশেকে। এবং নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে জয়ের দেখা পেল স্বাগতিক মালদ্বীপ।