চীনের দুঃখ যদি হয় হোয়াংহো নদী,তবে ফেডারেশন কাপে মোহামেডানের দুঃখ রহমতগঞ্জ। কারণ ফেডারেশন কাপের পর পর দুই আসরেই সেমিফাইনাল থেকে রহমতগঞ্জের কাছে পরাজিত হয়েই শিরোপা জয়ের লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে মোহামেডান। ফেডারেশন কাপের গত আসরে রহমতগঞ্জের কাছে ১-০ গোলে পরাজিত হয় মোহামেডান। এবারের সেমিতেও শুরুতে এগিয়ে গিয়েও পরাজয় এড়াতে পারেনি শন লেনের শিষ্যরা।
মাত্র ৫ মিনিটের মাথায় ম্যাচে লিড নিয়ে নেয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আলমগীর মোল্লার কর্ণার কিকে এরন জোনের হেড থেকে বাম পায়ের হালকা ছোঁয়ায় গোল করেন রাজীব। ২২ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ আসে মোহামেডানের কাছে। সতীর্থ অনিকের থেকে বল পেয়ে শাহেদ একাই আক্রমণে উঠে আসেন। কিন্তু রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক রাকিবুল হাসান তুষার নিজের জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে বল ক্লিয়ার করে দেন।
৩৬ মিনিটে ম্যাচে সমতায় আসতে আসতেও আসা হয়ে উঠেনি রহমতগঞ্জের। মাঠের বামপ্রান্ত থেকে বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন রহমতগঞ্জের ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড ফিলিপ আদজা। সেখানে প্রতিপক্ষের একজনকে পাশ কাটিয়ে দুইজনের মাঝখান দিয়ে বল বাড়ান এনামুল ইসলামের কাছে। বল পায়ে পেয়ে সরাসরি গোলে শট নেন এনামুল। কিন্তু বল এরন জোনের গায়ে লেগে বল পায় আদজা। এবার আদজা নিজের লক্ষ্য বরাবর শট নিলে বল সাইড নেটেড হয়ে যায়। ৪০ মিনিটে পরপর দুইবার আক্রমণ করে রহমতগঞ্জের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিইছিলো মোহামেডানের আক্রমণভাগ। কিন্তু দুইটি আক্রমণই নশ্চাৎ করে দেন রহমতগঞ্জের গোলরক্ষক রাকিবুল হাসান তুষার। ফলে এক গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় সাদা-কালোরা।
৬৮ মিনিটে দশজনের দলে পরিনত হয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। মাঠের ফিলিপ আদজাকে ফাউল করেন মোহামেডানের মেসিডোনিয়ান ডিফেন্ডার ইয়াসমিন। ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখায় মাঠ ছাড়তে হয় ইয়াসমিনকে। ম্যাচের ৭৮ মিনিটে এসে সমতা খুঁজে পায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। মাঝমাঠের নিচ থেকে খন্দকার আশরাফুল লং রেঞ্জের পাস দেন ফিলিপ আদজার কাছে। আজদা বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে যান। এরপর খানিকটা জায়গায় করে অন টার্গেট শট নেন এবং বল গোলবারের সাথে বাড়ি খেয়ে জালে জড়ায়। সেখানে মোহামেডানের দুইজন ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক বাধা দিলেও কাজের কাজ কিছুই করে উঠতে পারেন নি।
৮৮ মিনিটে ম্যাচে এগিয়ে যেতে পারতো রহমতগঞ্জ। মাঠের বামপ্রান্ত থেকে ফজলে রাব্বির ক্রস থেকে বক্সের ভেতরে দারুণ এক বাইসাইকেল কিক নেন সানডে চিজোবা। কিন্তু বলটি উপররে বারপোস্টে লেগে মাঠ অতিক্রম করলে ম্যাচে এগিয়ে যেতে পারে না পুরান ঢাকার দলটি। ম্যাচের নাটকীয়তা তখনও বাকি ছিলো। ইঞ্জুরি টাইমে ঘটে ম্যাচের নাটকীয়তা। মাঝমাঠে খানিকটা উপরে সতীর্থের বাড়ানো পাসে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন রহমতগঞ্জের ফিলিপ আদজা। সেখান থেকে দুইজনকে কাটিয়ে উপরে উঠে এসে বক্সের ভেতর ক্রস করেন। লক্ষ্য ছিলো সানডে চিজোবা। সানডে চিজোবা ক্রস থেকে বল পেয়ে গোল আদায় করেন ফেলেন। ফলে ম্যাচে ২-১ এ এগিয়ে যায় রহমতগঞ্জ।
পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রহমতগঞ্জের নেওয়া এই লিড ভাঙ্গতে পারেনি মোহামেডান। ফলে ২-১ গোলের জয় পায় রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। এই জয়ের এবারের ফেডারেশন কাপের শিরোপা জয়ের দিক আরো এগিয়ে যায় সাইদ গোলাম জিলানীর দল।