বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে বহুদিনের পথচলা বাংলাদেশ পুলিশ এফসির। স্বাধীনতার পরবর্তী বছরে অর্থাৎ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পুলিশের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। তবে দীর্ঘসময় তৃণমূল ফুটবলে কাটানোর পর অবশেষে ১৯৯৮ সালে সিনিয়র ডিভিশন লিগে খেলার মাধ্যমে পেশাদার ফুটবলে প্রবেশ করে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। এরপর ২০১৩-১৪ মৌসুমের সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় মাধ্যমে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে উত্তীর্ণ হয় ক্লাবটি। এরপর ২০১৮-১৯ মৌসুমের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের শিরোপা জিতে নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে উত্তীর্ণ হয় পুলিশ এফসি।
তবে বাংলাদেশ ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরে প্রবেশ করার পর নিজেদের তেমন একটা মেলে ধরতে পারেনি পুলিশ। গত মৌসুমে ৯ম স্থানে থেকে লিগ শেষ করা পুলিশ তাই এই মৌসুমে দলবদলে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। শ্রীলংকান হেড কোচ পাকির আলীর জায়গায় এই মৌসুমে পুলিশের দায়িত্ত্ব নিয়েছেন রোমানিয়ান কোচ অ্যারিস্টিকা সিওবা। এছাড়াও গত মৌসুমে পুলিশের জার্সিতে খেলা ৪ বিদেশি ফুটবলারের সবাইকেই ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তাদের জায়গায় দুই ব্রাজিলিয়ান দানিলো কুইপাপা ও ডেনিলসন রদ্রিগেজের সাথে মরক্কোর ফুটবলার আদিল কৌসকৌস এবং এশিয়ান কোটায় আফগান ফরোয়ার্ড আমিরুদ্দিন শারিফিকে দলে ভিড়িয়েছে পুলিশ। এছাড়াও দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে দুই অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মোনায়েম খান রাজু, শাহেদুল ইসলামকেও দলে নিয়েছে ক্লাবটি। এছাড়াও এই মৌসুমে পুলিশ এফসিতে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে আলো ছড়ানো ফরোয়ার্ড সাখাওয়াত হোসেন সাকা, ডিফেন্ডার রাসেল হোসেন, মোহাম্মদ রকি, রাশেদুল আলম মনিদের মত সম্ভানাময় তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলাররা। তাইতো অনেকেই বলছেন এবারের মৌসুমে ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ‘ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি।
মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপের সেমি ফাইনালে খেলে এবারের মৌসুমে নিজেদের আগমনী বার্তা জানিয়ে রেখেছে পুলিশ। পুলিশ এফসির ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানিলো দুর্দান্তভাবে সামলাচ্ছেন রক্ষণভাগের দায়িত্ব। মাঝমাঠে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ডেনিলসনের সাথে আস্থা যোগাচ্ছেন মোনায়েম খান রাজু। আক্রমণভাগে মরোক্কান ফরোয়ার্ড আদিল কৌসকৌসের সাথে আফগান ফরোয়ার্ড আমিরুদ্দিন শারিফির রসায়নও হচ্ছে বেশ। আর ডাগআউটে তো একজন অ্যারিস্টিকা সিওবা আছেনই। উয়েফা প্রো লাইসেন্সধারী ৫০ বছর বয়সী এই কোচের রয়েছে ঘানা, ওমান, কুয়েত, জর্ডান সহ বিভিন্ন দেশে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একজন কোচের অধীনে অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের মিশেলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নতুন আসরে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ এফসি। দেখা যাক নতুন মৌসুমে বাকি দলগুলোর জন্য কতোটা ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ‘ হতে পারে ক্লাবটি।