বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ২০২০-২১ এর মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎই আলোচনায় আসে ফিক্সিং কান্ড। সন্দেহের তীর যায় ঐতিহ্যবাহী আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের দিকে। এএফসি’র নির্দেশে তদন্ত শুরু করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আরামবাগের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রমান পায় তারা। এতে আর্থিক জরিমানা ও অবনমিত করা হয় দলটিকে। ক্লাবের মানহানি হওয়ায় ফিক্সিং কান্ডের অন্যতম হোতা হয়ে আসেন মিনহাজুল ইসলাম। মিনহাজের বিরুদ্ধে মামলাও করে আরামবাগ ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
মিনহাজ আর্থিক সহায়তার দেয়ার বিনিময়ে এই ফিক্সিং কান্ড শুরু করেন। তার নির্দেশেই চলতো সকল কার্যক্রম। বাফুফে মিনহাজকে ফুটবল থেকে ইতমধ্যে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল। এছাড়াও সাবেক টিম ম্যানেজার গওহর জাহাঙ্গীর রুশাে, সাবেক ফিটনেস ট্রেইনার ভারতীয় নাগরিক মাইদুল ইসলাম শেখ এবং সাবেক এসিস্ট্যান্ট টিম ম্যানেজার মােঃ আরিফ হােসেনকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আজীবন নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল বাফুফে। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক ফিজিও ভারতীয় নাগরিক জনাব সঞ্জয় বােস, গেম এনালিস্ট/প্লেয়ার এজেন্ট ভারতীয় নাগরিক আজিজুল শেখকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
ফিক্সিং কান্ডে সরাসরি যুক্ত ছিলো খেলোয়াড়রাও। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক খেলােয়াড় আপেল মাহমুদকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল বাফুফে। এছাড়া আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, মােঃ রকি, মােঃ জাহিদ হােসেন, কাজী রাহাদ মিয়া, মােঃ মােস্তাফিজুর রহমান সৈকত, মােঃ শামীম রেজা এবং অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় ব্রেডি ক্রিস্টিয়ানকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা করা হয়েছিল। এছাড়াও ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড চিজোবা ক্রিস্টোফার, মােঃ ওমর ফারুক, মােঃ রাকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ফাহাদ এবং মােঃ মিরাজ মােল্লা।
এ তো গেল বাফুফের দেওয়া সাজা। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও (ফিফা) আরামবাগের এই ফিক্সিং কান্ডের তদন্ত করেছে। এবার ফিফা থেকেও শাস্তির খড়গ নেমে এসেছে ফিক্সিং সংশ্লিষ্ট সবার ওপর। ফিফার ডিসিপ্লিনারি বিভাগের সভায় আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এম . স্পোর্টস এর স্বত্বাধিকারী মোঃ মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ , সাবেক টিম ম্যানেজার মোঃ গওহর জাহাঙ্গীর রুশো , সাবেক ফিটনেস ট্রেইনার ভারতীয় নাগরিক মাইদুল ইসলাম শেখ এবং সাবেক এসিস্ট্যান্ট টিম ম্যানেজার মোঃ আরিফ হোসেনকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে বিশ্বব্যাপী আজীবন নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পাশাপাশি আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সাবেক ফিজিও ভারতীয় নাগরিক সঞ্জয় বোস এবং সাবেক গেম এনালিস্ট/প্লেয়ার এজেন্ট ভারতীয় নাগরিক আজিজুল শেখকে ফুটবল সংশ্লিষ্ট সকল কার্যকলাপ হতে আগামী ১০ বছরের জন্য বিশ্বব্যাপী নিষিদ্ধ করা হয়।
শুধুমাত্র অফিসিয়ালরাই নন, নিষিদ্ধ হয়েছেন ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িত থাকা খেলোয়াড়রাও। আরামবাগের সাবেক ফুটবলার আপেল মাহমুদ, আবুল কাশেম মিলন, আল আমিন, মোঃ রকি, জাহিদ হোসেন, কাজী রাহাদ মিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান সৈকত, মোহাম্মদ ওমর ফারুক, রাকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ফাহাদ ও মিরাজ মোল্লা কে আগামী এক বছর বিশ্বব্যাপী যেকোনো ফুটবলীয় কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্বব্যাপী সব ধরনের ফুটবলীয় কার্যক্রম থেকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন আরামবাগের সাবেক নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ক্রিস্টোফার চিজোবা। এবং আরামবাগের আরও দুই সাবেক ফুটবলার মো: শামিম রেজা ও অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্ডার ব্রাডি স্মিথকে বিশ্বব্যাপী সব ধরনের ফুটবলীয় কার্যক্রম থেকে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা।