হার যেনো পিছুই ছাড়ছে না শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের। এক দুই নয় এক এক টানা চার ম্যাচেই পরাজিত হলো শেখ রাসেল। আজকে উত্তর বারিধারার হোম ভেন্যু গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মণি স্টেডিয়ামে লড়াইয়ে নামে শেখ রাসেল। ম্যাচে প্রথম দশ মিনিটই লিড দ্বিগুণ করে নিলেও ম্যাচের শেষ মুহুর্তে প্রতিপক্ষের গোলের ফলে ললাটে লেপ্টে থাকা পরাজয় খণ্ডাতে পারে নি সাইফুল বারী টিটুর দল।
প্রথমার্ধের ৮ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। মধ্যমাঠের অল্প উপর থেকে কিরগিজ ডিফেন্ডার আয়জার আকমেতোভ দূরবর্তী ফ্রি-কিক থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে শেখ রাসেলকে এগিয়ে দেয়। মিনিট চারেক পর লিড বাড়িয়ে শেখ রাসেল। নিজেদের অর্ধ থেকে ফ্রি কিক থেকে বল দখলের জন্যে মাঠের বামপ্রান্ত দিয়ে ভেতরে ঢুকে যায় ডিফেন্ডার রহমত মিয়া। বক্সের ভেতরে থেকে রহমত মিয়া কাটব্যাক করলে শেখ রাসেলের গিলি বাসাউর ফরোয়ার্ড ইসমাইল রুডি গোল করে ব্যবধান বাড়ায় শেখ রাসেল।
ম্যাচের ৩৯ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে গোল করে এক গোল শোধ করে উত্তর বারিধারার উজবেক ডিফেন্ডার ফজিলভ। এক মিনিট ব্যবধানে আবারো গোল করে সমতায় ফিরে যায় উত্তর বারিধারা। মাঝমাঠের সামনে থেকে একাই শেখ রাসেলের দুইজনকে কাটিয়ে একাই বল টেনে বক্সের ভেতরে ঢুকে যায় বারিধারার মিশরীয় মিডফিল্ডার মোস্তফা কাহরাবা। বক্সে ঢুকে বল পাস করেন উজবেক মিডফিল্ডার কচনেভের কাছে। কচনেভ শট নিয়ে বল গোলবারে লেগে ফিরে চলে আসে। ফিরতি বলে বল পেয়ে যায় বারিধারার মিডফিল্ডার মোহাম্মদ সুজন বিশ্বাস। সুজন বল দেয় জুয়েল মল্লিকের কাছে। জুয়েল থেকে আবারো বল যায় সুজনের কাছে। সুজন গোলে শট নিয়ে গোল আদায় করে নেয় সুজন।
২-২ গোলের সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় উভয় দল। দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় পুরো সময় দুইদল আক্রমণে গেলেও গোল পায় নি কেউই। কিন্তু উত্তর বারিধারা অঘটন ঘটিয়ে দেয়। কচনেভের পাস থেকে মাঠের বামপ্রান্ত দিয়ে ভেতরে ঢুকে গোল করে বসে বারিধারার সুজন বিশ্বাস। এতে করে ৩-২ গোলে অঘটন ঘটিয়ে জয় পায় উত্তর বারিধারা।
এই জয় দিয়ে ৭ ম্যাচে ২ জয়, ১ ড্র ও ৪ হারে ৭ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে উত্তর বারিধারা ক্লাব। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে মাত্র ১ জয়, ২ ড্র ও ৪ হারের ফলে ৫ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় উত্তর বারিধারার এক ধাপ নিচে অবস্থান করছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।
দিনের আরেক ম্যাচে সলেমন কিংয়ের জোড়া গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। প্রিমিয়ার লীগের সপ্তম রাউন্ডে মুন্সিগঞ্জে নিজেদের হোম ভেন্যু বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-০ গোলে হারায় শেখ জামাল।
২৯ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলটি পেয়ে যায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। গোল করেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার সলেমন কিং। বক্সের ভেতরে থেকে সতীর্থকে উদ্দেশ্য করে বল বাড়ান চট্টগ্রাম আবাহনীর শওকত রাসেল। কিন্তু লাফ দিয়ে ডান দিয়ে বল দখলে নেন সলেমন কিং। এরপর খানিকটা সময় নিয়ে ডানপায়ের জোরালো এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি আসে দ্বিতীয়ার্ধের ৬৮ মিনিটে। এবারো গোলের কারিগর শেখ জামালের সলেমন কিং। চট্টগ্রাম আবাহনীর আরো একবার ভুল পাসে বল পেয়ে যায় জামালের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ম্যাথিউ চিনেদু। বল পেয়ে সোজা ঢুকে যান বক্সের ভেতর। দুইজনের বাঁধা টপকে বল কাটব্যাক করে দেন সলেমন কিংয়ের কাছে। সলেমন কিংয়ের প্রথম টাচ গোলরক্ষক আজাদের গায়ে লাগলেও দ্বিতীয় সুযোগ পেয়ে ভুল করেন নি সলেমন কিং।
৭৬ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনী পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে গোল শোধের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে। বক্সের ভেতরে চট্টগ্রাম আবাহনীর আফগানি মিডফিল্ডার অমিদ পোপালজাইকে ফাউল করে শেখ জামালের ওমর ফারুক। এতে করে পেনাল্টি পেয়ে চট্টগ্রাম আবাহনী। কিন্তু পেনাল্টি শটটি গোলবারের উপর দিয়ে পাঠিয়ে দিলে দারুণ হাতছাড়া হয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনীর।
ম্যাচের ৮৩ মিনিটে এসে এক গোল শোধ দেয় চট্টগ্রাম আবাহনী। মাঠের ডানপ্রান্ত দিয়ে বক্সের ভেতর ঢুকে গিয়ে কাটব্যাক করেন চট্টগ্রাম আবাহনী কেনডেইসা। কাটব্যাক থেকে বল পেয়ে ডানপাশে টার্ন করে অন টার্গেট শট নিয়ে গোল করেন চট্টগ্রাম আবাহনী। এরপর আর কোনো গোল না হলে ২-১ গোলের জয় পায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
এই জয়ের ফলে ৭ ম্যাচে ৪ জয়, ৩ ড্র ও বিনা হারে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা আবাহনীকে পিছনে ফেলে একধাপ এগিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থান দখল করে নিলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ৩ জয়, ৩ ড্র ও ১ হারের ফলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় আগের সেই চতুর্থতেই আছে বন্দরনগরীর দল চট্টগ্রাম আবাহনী।